Advertisement
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Nadia Murder

অপহরণের ‘চিত্রনাট্য’ ফেঁদে কিশোর খুন কৃষ্ণনগরে, ধৃতেরাও নাবালক, নেপথ্যে প্রেমঘটিত বিষয়?

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতেরা জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে। তিন জনে মিলে অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বলে জানিয়েছে।

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৩ ১২:০৭
Share: Save:

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিস্কুট কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। রাত বাড়লেও ছেলে বাড়ি না ফেরায় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল পরিবার। এর পর দিন শনিবার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে বাড়িতে। সেই ফোনের সূত্র ধরে প্রথমে নবম শ্রেণির তিন পড়ুয়াকে আটক, তার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নিখোঁজ ছাত্রের বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি এলাকার ঘটনা। শনিবার রাতে ভীমপুর থানার হিজুলির একটি জঙ্গল থেকে অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। দেহ শনাক্তকরণের পর ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক তিন পড়ুয়াকে পরে গ্রেফতারও করে পুলিশ। রবিবার তাদের কৃষ্ণনগর জজ কোর্টে হাজির করানো হবে। ধৃতদের বিচার চলবে জুভেনাইল কোর্টে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতেরা জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে। তিন জনে মিলে অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে বলে জানিয়েছে। তার পর তাদের বলে দেওয়া জায়গা থেকেই উদ্ধার হয় নাবালক ছাত্রের দেহ। জেরায় এখনও যা উঠে এসেছে, তার ভিত্তিতে তদন্তকারীদের প্রাথমিক ভাবে অনুমান, প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে ঝামেলার জেরেই এই খুন। মৃত পড়ুয়ার পরিবারের বক্তব্য, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ার সঙ্গে ওই তিন জনের বন্ধুত্বই ছিল। পরে স্কুলের প্রোজেক্টের কাজ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াকে পরিকল্পনা করে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পরিবার। মৃত পড়ুয়ার এক আত্মীয় বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে একটা গন্ডগোল ছিল। পরে তা মিটমাট হয়ে যায়। ঠান্ডা মাথায় আমাদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। ওদের ফাঁসি চাই।’’

শুক্রবার রাতে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে অষ্টম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার পরিবার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, থানায় তারা জানায় যে, বিস্কুট কিনতে যাওয়ার কথা বলে সন্ধ্যায় বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি ছেলে। এর পর শনিবার দুপুরে তিন লক্ষ টাকা চেয়ে ফোনও আসে মৃত পড়ুয়ার মায়ের কাছে। সে কথাও পুলিশকে জানানো হয়। এর পরেই ফোনের সূত্র ধরে তিন নাবালককে আটক করে পুলিশ। মৃত পড়ুয়া এবং ওই তিন জন একই স্কুলের ছাত্র। দেহ উদ্ধারের পর তাদের গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, জেরায় তিন জন স্বীকার করেছে, একটি মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব ঘিরে তাদের মধ্যে শত্রুতা চরমে পৌঁছয়। সপ্তাহখানেক আগেও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল ওই তিন জন। পুলিশের অনুমান, এর পরেই খুনের ছক কষা করা হয়। সেই মতো নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মিটমাট করে নেয় তারা। বন্ধু বলে পরিচয় দিয়ে আস্থাও অর্জন করে। এর পরেই বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া খুনের পর পরিকল্পনা মতো বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তা হাতে এলে ওই তিন পড়ুয়ার ভিন‌্‌রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলেন, ‘‘দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy