সরকারি ভাবে এ রাজ্য থেকে বর্ষা বিদায় নেয় ৮ অক্টোবর। এবার কিছুটা দেরি হলেও চলতি সপ্তাহেই হয় তো বর্ষা বিদায়ের ঘোষণা করতে পারে আবহদাওয়া দফতর। লালগোলার বাসিন্দা ফজলুর শেখের অবশ্য চিন্তা কাটছে না। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁর বাড়ির দাওয়ায় হাঁটুসমান জল। সেই জল ডিঙিয়েই রোজ যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ জন্য এলাকার বেহাল নিকাশি ব্যবস্থাকেই দুষছেন তিনি।
একই অবস্থা সামায়ুন শেখের বাড়িরও। তাঁর বাড়ির পিছনে একটি পরিত্যক্ত পুকুর উপচে নোংরা জল ঢুকে পড়েছে তাঁর বাড়িতে। ক’দিনের বৃষ্টিতেই জলমগ্ন লালগোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গাবতলা, নলডহরি, বোরবোনা, বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দারা। জলবন্দি লালগোলা পঞ্চায়েতের পাশের কালমেঘা পঞ্চায়েতের নতুনগ্রামও।
সপ্তাহ দুয়েক আগে বিহারে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখার জন্য উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছিল। ওই সময় বৃষ্টি হয় মুর্শিদাবাদ-সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেও। সেই বৃষ্টির জল জমে রয়েছে লালগোলার চারটি গ্রামে। গ্রামবাসীদের দাবি, গাবতলা, নলডহরি, বোরবোনা, বলরামপুর ও কালমেঘার নতুনগ্রামের নিকাশির জল যে নালা দিয়ে মরঘাটি নালায় পড়ে সেটির বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে জল বেরোতে পারছে না। জলবন্দি হয়ে গ্রামগুলির বাসিন্দারা। অভিযোগ, জমা জলে মশার উপদ্রব তো বেড়েইছে। মাঝেমধ্যে বিষধর সাপও বেরিয়ে পড়ছে। দিনরাত আতঙ্কের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দা, জীবন মণ্ডল, ফারুক শেখ, সাহিদা বিবিরা বললেন, ‘‘দশ-বারো দিন ধরে জলমগ্ন গোটা গ্রাম। প্রশাসনের লোকেরা সবাই সবকিছু দেখছে। অথচ কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। কবে যে এই দুর্গতির শেষ হবে জানি না।
এ বিষয়ে লালগোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অজয় ঘোষ বলেন, ‘‘গোডাউন মোড়ে একটি বড় কালভার্ট দিয়ে এলাকার নিকাশি জল বেরোয়। এতদিন জল নিকাশে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি কিছু লোক নিজেদের স্বার্থে কালভার্টের মুখ আটকে দিয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। কালভার্টের বন্ধ মুখ খুলে দেওয়া হবে শীঘ্রই।’’