উদ্ধার হওয়া মুদ্রা। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার জিয়াগঞ্জ শহরে পরিস্রুত পানীয় জলের পাইপলাইন মাটিতে বসানোর সময় আমইপাড়া কালীবাড়ি সংলগ্ন এলাকা থেকে বেশ কিছু রুপোর মুদ্রা পাওয়া গেছে বলে দাবানলের মতো খবর সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সমাজমাধ্যমের খবরের সত্যতা নিয়ে প্রথমের দিকে প্রশাসন একটু ধন্দে থাকলেও দেরি না করে তড়িঘড়ি তদন্তে নেমে পড়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ জানান পুলিশ আধিকারিককে।
সেই সূত্র ধরেই ঠিকাদার সংস্থার শ্রমিকের হদিস পায় পুলিশ, যাঁর বাড়ি রানিতলা থানার ফুলপুর গ্রামে। সেই রাতেই সেখান থেকে রানিতলা থানার সাহায্য নিয়ে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানান, ঘটনার দিন রুপোর মুদ্রা পাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু মাঝপথেই কিছু লোকজন তাঁর উপর চড়াও হয় এবং জিয়াগঞ্জে ধরে আনে এবং তার কাছ থেকে অধিকাংশ রুপোর মুদ্রা কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে পুলিশের কাছে। তবে ওই শ্রমিকের কাছ থেকে ছ’টি মুদ্রা উদ্ধার হয়।
পুলিশ ওই ব্যক্তির বয়ান অনুযায়ী আবার তদন্ত শুরু করে, যে সব ব্যক্তিদের কাছে ওই মুদ্রাগুলো গচ্ছিত ছিল, তাদের খোঁজ করতে থাকে পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে। কিন্তু বিফল হয়।সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেই সব ব্যক্তি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির হাতে সেই সব মুদ্রা একত্রিত করে তুলে দেয় প্রশাসনের হাতে সেগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ব্যক্তি মোট ২২টি রুপোর মুদ্রা মঙ্গলবার সকালে জিয়াগঞ্জ থানার হাতে তুলে দেন বলে জানান জিয়াগঞ্জ থানার ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষাল।
এ পর্যন্ত মোট ২৮ টি রুপোর মুদ্রা উদ্ধার হয়েছে এবং আরও কিছু মুদ্রা উদ্ধার হবে বলে পুলিশ আশাবাদী।
অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয় শাহ আলমের আমলের এক সঙ্গে এতগুলো রুপোর মুদ্রা পুনরুদ্ধারে জেলা ও রাজ্যের প্রত্নতত্ত্ববিদরা স্বভাবতই খুশি। বহরমপুর রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মিউজিয়ামের কিউরেটর অরিন্দম রায় বলেন, ‘‘যে ২৮টি রুপোর মুদ্রা পাওয়া গেছে তা দ্বিতীয় শাহ আলমের ৭ শাসনবর্ষে মুদ্রিত বলে অনুমান, যা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে মুর্শিদাবাদ টাঁকশালের নামে মুদ্রিত। এই ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত মুদ্রাগুলি অচিরেই গবেষণামূলক কাজে ব্যবহারের জন্য কোনও সুরক্ষিত সরকারি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত হওয়া প্রয়োজন।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy