সালিশি সভায় চরিত্র নিয়ে কটু মন্তব্য করা হয়েছে শুনে দুই সন্তানের মা এক মহিলা অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদ থানার চুনাখালি শ্যামাপ্রসাদ পল্লি এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলাকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি এখন সুস্থ।
সম্প্রতি মালদহের মানিকচকের বসন্তটোলা গ্রামেও একটি সালিশি সভায় এক মহিলার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি তা সহ্য করতে না পেরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় সালিশি সভার দুই মাতব্বর সহ চার জনকে ধরেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের ঘটনাতেও ওই মহিলা বলেন, “সালিশি সভায় যে সমস্ত কথা আলোচনা হয়েছে, তা শোনার পরে লজ্জা ও ঘেন্নায় আমি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।” ওই মহিলার পড়শি পরিবারের ছ’জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ হয়েছে। মুর্শিদাবাদের মহকুমা পুলিশ অফিসার তন্ময় সরকার জানান, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারায় মামলা হয়েছে। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। সালিশিতে কারা ছিল, তাদের কী ভূমিকা ছিল, সে বিষয়ে খোঁজখবর করছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার চরিত্র নিয়ে প্রতিবেশী এক যুবক মাঝে-মধ্যেই কটু মন্তব্য করত। ওই মহিলার স্বামী পেশায় কাঠমিস্ত্রি। তাঁদের বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র। ওই মহিলার স্বামীর দাবি, ওই যুবক তাঁর জামাইয়ের কাছেও তাঁর স্ত্রীর বদনাম করেছে। তা জানতে পেরে গত শুক্রবার তাঁদের ছেলে ওই যুবকের কাছে কেন সে এমন কথা বলেছে, তা জানতে চায়। কথা কাটাকাটির সময় ওই যুবককে থাপ্পড়ও মারে তাঁদের ছেলে।
এর পর সালিশি সভা বসে। শনিবার ওই সভায় হাজির ছিলেন কেশব মণ্ডল ও গোঁসাই দাস নামে এলাকার দুই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সহ স্থানীয় কয়েকজন। কেশববাবু তৃণমূলের কর্মীও। ওই মহিলার ছেলে জানিয়েছে, মারধর করার জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। সে ক্ষমা চেয়ে নেয়। ওই মহিলার স্বামী বলেন, “সালিশি সভায় আমার স্ত্রী সম্বন্ধে বাজে-বাজে কথা বলা হয়। তখন কোনও প্রতিবাদ করতে পারিনি।”
সালিশি সভায় যে তাঁর চরিত্র নিয়ে কথা উঠেছে, তা ওই মহিলার কানেও পৌঁছয়। এর পরেই তিনি সেই রাতে বাড়ি লাগোয়া পুকুর ধারের একটি আমগাছের ডালে গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাড়ির লোকই তাঁকে উদ্ধার করে লালবাগের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করায়।
ওই মহিলার স্বামীর দাবি, ওই রাতে পুলিশ তাঁদের অভিযোগ জমা নেয়নি। এ দিন অভিযোগ জমা নেওয়া হয়। পুলিশ প্রথমে অভিযোগ না নেওয়ার নালিশ অস্বীকার করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy