Advertisement
১১ জানুয়ারি ২০২৫

আমন্ত্রণপত্রে নাম নেই, গোঁসা তৃণমূলের

স্কুলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জেলা তৃণমূলের দুই নেতাকে। তা থেকেই অভিমান, ক্রমে গোঁসা এমনকী স্কুল কর্তৃপক্ষকে শাসিয়ে নতুন করে আমন্ত্রণ পত্র ছাপিয়ে নাম ঢোকানো হয়েছে শাসক দলের তাবড় ওই দুই নেতার নাম। ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদের লালবাগের মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। স্কুলের সার্ধ-শতবর্ষ অনুষ্ঠানে স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ এবং সিপিএম নেতার নাম থাকলেও সেই তালিকায় ছিল না শাসক দলের কোনও নেতা-মন্ত্রীর নাম।

দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন।—নিজস্ব চিত্র

দৈনিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন।—নিজস্ব চিত্র

শুভাশিস সৈয়দ
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪১
Share: Save:

স্কুলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জেলা তৃণমূলের দুই নেতাকে।

তা থেকেই অভিমান, ক্রমে গোঁসা এমনকী স্কুল কর্তৃপক্ষকে শাসিয়ে নতুন করে আমন্ত্রণ পত্র ছাপিয়ে নাম ঢোকানো হয়েছে শাসক দলের তাবড় ওই দুই নেতার নাম।

ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদের লালবাগের মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। স্কুলের সার্ধ-শতবর্ষ অনুষ্ঠানে স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ এবং সিপিএম নেতার নাম থাকলেও সেই তালিকায় ছিল না শাসক দলের কোনও নেতা-মন্ত্রীর নাম। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শনিবার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে নতুন আমন্ত্রণপত্র প্রকাশের দাবি জানান তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের চাপের কাছে শেষ পর্যন্ত মাথা নুইয়ে ছাপা হয় নতুন আমন্ত্রণ পত্র। নব্য সেই নেমন্তন্নের চিঠিতে ঠাঁই দিতে হয়, ভগবানগোলার বিধায়ক তৃণমূলের চাঁদ মহম্মদ এবং মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্তমানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের। শুধু তাই নয়, প্রথম আমন্ত্রণপত্রে তাঁদের নাম না থাকায় দুঃখপ্রকাশ করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে একটি বাংলা দৈনিকে বিজ্ঞপ্তিও ছাপতে বাধ্য করে তৃণমূলের নেতারা। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের আচরণে অবশ্য কিঞ্চিৎ লজ্জা প্রকাশ করেছেন মান্নান। তিনি বলেন, “আমার নাম রাখা নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না। তবে, আমন্ত্রণপত্রে চাঁদ মহম্মদের নাম থাকা উচিত ছিল। যদিও দলের নেতারা স্কুলে গিয়ে যে আচরণ করেছেন, তা ঠিক নয়।” স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা ঘোষ বলেন, “শাসক দলের কথা মেনে নতুন অতিথি তালিকা তৈরি করে আমন্ত্রণপত্র ছাপতে হয়েছে আমাদের। মান্নান হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তা দিয়েও আসা হয়েছে।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে আমন্ত্রণপত্র ছাপতে বাড়তি ১৫ হাজার টাকাও খরচ হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের।

লালবাগের ওই স্কুলের প্রাথমিক আমন্ত্রণপত্রে জেলার তিন সাংসদ, মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের সভাধিপতি, স্থানীয় বিধায়ক, স্থানীয় পুরপ্রধান, কাউন্সিলরের নাম অতিথি তালিকায় ছিল। প্রধান শিক্ষিকা জানান, “স্কুলের অনুষ্ঠানে নিরপেক্ষকতা বজায় রাখতেই অতিথি তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু তৃণমূলের ওই নেতাদের তা পছন্দ হয়নি। অতিথি তালিকায় তৃণমূল নেতাদের নাম সংযোজন করে নতুন আমন্ত্রণপত্র ছাপানোর জন্য তাঁরা আমার উপরে চাপ সৃষ্টি করেন।” যে ভাবে তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের উপরে ‘চাপ’ দিয়েছিলেন তা যে পছন্দ হয়নি, স্কুল কর্তৃপক্ষের একাধিক পদাধিকারী তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

তাঁরা জানান, মুর্শিদাবাদ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মেহেদি আলম মির্জা, মুর্শিদাবাদ শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তারক ধর এবং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা সন্দীপকুমার রায়ের চাপেই ওই তালিকা বদল করতে হয়। এ ব্যাপারে সন্দীপবাবু বলেন, “রাজনীতির ঊর্ধ্বে স্কুল। কিন্তু আমন্ত্রণপত্র হাতে পেয়ে দেখলাম কোথাও ত্রুটি হয়েছে। ওই ত্রুটি সংশোধনের কথা বলতেই স্কুলে গিয়েছিলাম।” কিন্তু তাঁরা যা করেছেন, তাও তো রাজনীতি? সন্দীপের জবাব, “মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সিপিএমের বদরুদ্দোজা খানের নাম নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু অধীর চৌধুরী বা অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় তো আমাদের এলাকার সাংসদ নন।” তাহলে মান্নান বা চাঁদ মহম্মদের নাম ঢোকানোর দাবি তুললেন কেন তাঁরা? তার অবশ্য উত্তর মেলেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

suvasish saiyed berhampore tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy