প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বাড়ি তৈরিরি সময়সীমা বেঁধে দিতে তৎপর নবান্ন। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের তরফে চাপের পর চাপ আসছে রাজ্য সরকারের উপরে। সেই চাপ সামলে দিতে নবান্নের তরফেও এ বার সময়সীমা মেনে বাড়ি তৈরি করতে বলা হচ্ছে উপভোক্তাদের। এমনকি ৯০ দিনের মধ্যে তিনি বাড়ি তৈরি করবেন, উপভোক্তার কাছ থেকে এমন মুচলেকা নেওয়া যায় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে নবান্ন।
কেন এত তৎপরতা নবান্নের? দিল্লির চাপ ছিল, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা থেকে ভুয়ো উপভোক্তাদের বাদ দিয়ে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অনুমোদন চূড়ান্ত করতে হবে। এ বার কেন্দ্রের শর্ত, এ-পর্যন্ত চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া প্রায় ১০.২৯ লক্ষ বাড়ি তৈরি করতে হবে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে। তাই উপভোক্তাদের সতর্ক করে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই সময়সীমার মধ্যে বাড়ি তৈরি করার মূল দায়িত্ব উপভোক্তারই। অনেক সময় দেখা যায়, টাকা পাওয়ার পরেও বিভিন্ন কারণে গড়িমসি করে উপভোক্তারাই সময় নষ্ট করছেন। এ বার কেন্দ্র সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় তার মধ্যেই বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে হবে প্রাপকদের। তাই ব্যস্ত নবান্ন।
কারণ, কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উপভোক্তা বাড়ি না-বানালে আখেরে সমস্যায় পড়তে হতে পারে রাজ্যকেই। এমনকি পরবর্তী আবাস যোজনার কোটা পেতে অসুবিধা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাই ৩১ মার্চের মধ্যেই অনুমোদিত বাড়ির কাজ শেষ করতে রাজ্যের এত তৎপরতা। সোমবার এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানেই তিনি নির্দেশ দেন, সময়সীমার মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতেই হবে। মানতে হবে নবান্নের লিখিত নির্দেশনামা।
নবান্ন লক্ষ করেছে, বাড়ি তৈরিতে দেরির অন্যতম কারণ উপভোক্তাদের একাংশের গড়িমসি এবং কিস্তির টাকা সময়ে না-ছাড়া। তাই এই দু’টি বিষয় সর্বাধিক গুরুত্ব পায় এ দিনের বৈঠকে। নবান্নের নির্দেশ, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরের সব উপভোক্তার সঙ্গে সিনিয়র অফিসারেরা বৈঠক করে কেন্দ্রের নিয়মবিধি ব্যাখ্যা করবেন। ৯০ দিনের মধ্যে বাড়ি তৈরি না-করার পরিণতি কী হতে পারে, সেটাও জানাবেন তাঁরা। স্থির হয়েছে, প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার ৪০ দিনের মধ্যে বাড়ির জানলা পর্যন্ত নির্মাণ করতে হবে। পরবর্তী কিস্তির ৩৫ দিনের মধ্যে কাজ হবে ‘লিন্টেল’ বা জানলার উপরিভাগ পর্যন্ত। তার পরের কিস্তির ১৫ দিনের মধ্যে ঢালাই-সহ বাড়ি তৈরির সামগ্রিক কাজ শেষ করতেই হবে।এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “ইট-বালি-পাথর এবং অন্যান্য উপকরণের জোগান নিশ্চিত করতে সরবরাহকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হবে। উপভোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ব্লক স্তরে কন্ট্রোল রুম তৈরি হচ্ছে। থাকছে জেলাশাসকের হেল্পলাইনও।”
নবান্নের সিদ্ধান্ত, আবাস-বন্ধু, ভিলেজ রিসোর্স পার্সন বা অন্য সহায়কেরা নিজেদের এলাকায় প্রতি সপ্তাহে বাড়ি তৈরির উপরে নজর রাখবেন। কাজ যাতে দ্রুত এগোয়, তাই ‘সফল’ সহায়ক, গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মী ও ব্লক স্তরের কর্মীদের জন্য উৎসাহ ভাতা বা পুরস্কারের প্রস্তাবও আছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রতি সপ্তাহে, ব্লক ও মহকুমায় প্রতি ১৫ দিনে এক বার কাজের হিসেব নেওয়ার সঙ্গে মাসে এক বার কাজের খতিয়ান নেবেন জেলাশাসক। সমন্বয়ে থাকবেন পঞ্চায়েত সচিব। মুখ্যসচিবের নির্দেশ, কেন্দ্রের বিধি মেনে একটি কিস্তির অর্থ ছাড়ার আগে বাড়ি তৈরির প্রতিটি স্তরে ছবি ও জিয়ো-ট্যাগ নিশ্চিত করতে হবে সব জেলা প্রশাসনকে। যাঁদের নিজস্ব জমি নেই, তাঁদের প্রয়োজনীয় জমির দ্রুত পাট্টার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। উপভোক্তার মৃত্যু হলে নিকটাত্মীয়কে দ্রুত আইনি শংসাপত্র দেওয়ার দায়িত্বও প্রশাসনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy