—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) শংসাপত্র বাতিল নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায় যে তিনি মানছেন না, তা বুধবারই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার, সরকারি ছুটির দিনেই, এই রায়ের জবাবে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিল নবান্ন। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে যত দ্রুত সম্ভব সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যত দিন পর্যন্ত এর মীমাংসা না হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত নিয়োগ থেকে নতুন বৃত্তি—প্রায় সব ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হল বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ আধিকারিকদের অনেকে। তবে শংসাপত্র দিতে তাড়াহুড়োর কারণেই এই সমস্যা হল কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরেই।
অভিজ্ঞ আমলাদের অনেকে জানাচ্ছেন, আদালতের রায়ে চাকরিরতদের সমস্যা না হলেও, চাকরিপ্রার্থীরা মুশকিলে পড়তে পারেন। সংশ্লিষ্ট মহলের যুক্তি, যে কোনও নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘হান্ড্রেড পয়েন্ট রস্টার’ স্থির হয়। তাতে মোট শূন্যপদের নিরিখে সাধারণ, তফসিলি জাতি, তফসিলি জনজাতি বা ওবিসি সংরক্ষণ অনুযায়ী কার জন্য ক’টি পদ থাকবে তা স্থির হয়।
এখন ওবিসি-শংসাপত্র নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিন্তু তাঁদের বাদ দিয়ে এমন রোস্টার তৈরি সম্ভব নয়। ফলে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাও যাবে না। অন্য দিকে আবার যাঁদের চাকরির পরীক্ষা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়ে গিয়েছে, সেখানে নির্বাচিত যোগ্যদের ডাকা আপাতত সম্ভব না-ও হতে পারে।
যত দিন না এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে, তত দিন এই অনিশ্চয়তা থাকবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে। কিন্তু সেখান থেকে ন্যূনতম স্থগিতাদেশ পাওয়া না-গেলে সমস্যা থেকে যাবে।”
আবার এই কারণে ওবিসি তালিকাভুক্ত বহু পড়ুয়াকে নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে বলে জানাচ্ছে শিক্ষা দফতর। দফতরের এক কর্তা জানান, স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে ওবিসি তালিকাভুক্ত পড়ুয়ারা নম্বরের ক্ষেত্রে ছাড় পায়। সরকারের বেশ কিছু বৃত্তি পরীক্ষাতেও ছাড় পায় ছাত্রছাত্রীরা। আপাতত সেই ছাড় তারা পাবে না। এমনকি, সরকার থেকে যখন নতুন চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে, তখনও তাদের নম্বরের ছাড়ের সুবিধা দেওয়া যাবে না।
মিত্র ইনস্টিটিউশন ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, “স্কুলে প্রথম, পঞ্চম, ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রচুর পড়ুয়া ভর্তি হয়। এই সব শ্রেণিগুলিতে ওবিসি তালিকাভুক্তদের ভর্তির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়। মাধ্যমিক পাশ করে একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রেও নম্বরে ছাড় দেওয়া হয় তাদের। এই পড়ুয়াদের প্রায় সবারই ২০১২ সালের পরের ওবিসি সার্টিফিকেট রয়েছে। রাজ্য সরকারের স্বামী বিবেকানন্দ মেরিটস অ্যান্ড মিনস-সহ বেশ কিছু স্কলারশিপ আছে। তাতে নম্বরের ছাড় পেত ওবিসি তালিকাভুক্ত পড়ুয়ারা।”
‘দুয়ারে সরকার’-এর গত প্রায় আটটি কর্মসূচিতেও বিপুল সংখ্যক আবেদনকারীকে এসসি, এসটি এবং ওবিসি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এখন আদালতের রায়ে সবটাই সমস্যার আওতায় চলে এল বলেই মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy