রবিবার অ্যাকাডেমির সামনে প্রতিবাদ সঙ্গীতশিল্পীদের। —নিজস্ব চিত্র।
শুধুমাত্র গায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন নন, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘কাটমানি’ মন্তব্যে অপমানিত হয়েছেন বাংলার সঙ্গীত জগতের অন্য শিল্পীরাও। রবিবার অ্যাকাডেমির সামনে প্রতিবাদ করে এমনটাই জানালেন সঙ্গীতশিল্পীদের একাংশ।
চন্দননগরের জনসভা থেকে নাম না করে ইন্দ্রনীলের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখানকার যিনি ছিন্নমূল বিধায়ক, তিনি যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তাদের ধরে থাকেন। উনি গায়ক-গায়িকদের থেকে সঙ্গীতমেলায় কাটমানি নেন। আমাকে অনেক গায়ক-গায়িকা এ কথা বলেছেন।’’ শুভেন্দুর ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে রবিবার অ্যাকাডেমিতে তীব্র প্রতিবাদ জানান হৈমন্তী শুক্লা, শিবাজী চট্টোপাধ্যায়, মনোময় ভট্টাচার্য, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র রায়, অরুন্ধতী রায়চৌধুরী, ইন্দ্রাণী সেন সহ আরও অনেক শিল্পী।
শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রক্ষিতে ক্ষোভের সুরে হৈমন্তী জানান, “এত বছর গান গাইছি, কিন্তু শিল্পীদের বিরুদ্ধে এ রকম কোনও দিন শুনিনি। তা ছাড়া সঙ্গীতমেলার শুরুর দিন থেকে আমি অংশগ্রহণ করে আসছি। সেখানে সরাসরি ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়া হয়। ‘কাটমানি’র কোনও প্রশ্নই নেই।” রবিবার হৈমন্তীর সুরেই ধিক্কার জানান শিবাজিও। ‘কাটমানি’ শব্দটির মাধ্যমে সঙ্গীতশিল্পীদের অপমানিত করা হয়েছে বলে সরব হন অরুন্ধতী। তিনি বলেন, ‘‘কাটমানি শব্দের মাধ্যমে আমরা খুব অপমানিত হয়েছি এবং এটা আমরা মেনে নিতেও পারি না।’’ অরুন্ধতীর সঙ্গে সহমত ব্যক্ত করেন গায়িকা ইন্দ্রাণী সেনও। আনন্দবাজার ডিজিটাল ইন্দ্রনীল সেনকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘আমি শুধু একটা শব্দই ব্যবহার করব ‘উপেক্ষা’।’’
তিনি কাটমানি নিয়েছেন প্রমাণ করতে পারলে গান বাজনা ছেড়ে দেবেন বলে জানান সৌমিত্র রায়। ওই মন্তব্যের নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘‘সঙ্গীতমেলার মঞ্চে অংশ নিয়ে আমি এক পয়সা নিয়েছি কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে, আমি অন্তত গান বাজনা ছেড়ে দেব। এই অভিযোগের পর গান বাজনা করতে পারব না।’’ শুভেন্দুর ওই মন্তব্যের জন্য তাঁকে ‘অশিক্ষিত’ বলে মনোময়ের আক্রমণ, ‘‘সঙ্গীত মেলায় কাটমানি নিতে হয়, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। যিনি বলেছেন তিনি একজন অশিক্ষিত মানুষ। এটা অত্যন্ত ঘৃণ্য একটা কথা।’’ রাজনীতির মঞ্চে শিল্পীদের টেনে আনা অনুচিত বলে মনে করেন রাঘব। তাঁর কথায়, “রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করুন, সঙ্গীত-নাট্য জগতকে টেনে আনার প্রয়োজন নেই। জেনে রাখা দরকার, তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে ইন্দ্রনীল শিল্পীদের জন্য নিঃস্বার্থভাবে অনেক কিছু করেছেন।”
কাটমানি প্রসঙ্গ ছাড়াও শনিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপমান করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে সরব হন অনেক শিল্পী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইচ্ছাতেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে বলেও মনে করেন গায়ক শিবাজী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘‘ওই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী চুপ করে বসে রইলেন। আসলে তিনি চেয়েছিলেন, এরকমটা হোক। বাংলার নাগরিক হিসেবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy