গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বাড়িতে ঢুকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে তিন জনকে খুন। তার মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছরের এক শিশুও। ঘটনার সাত দিন পর ধরা পড়ে, এই মুহূর্তে পুলিশ হেফাজতে থাকা হত্যাকারী উৎপল বেহেরার কথা বা হাবেভাবে কিন্তু এতটুকু অনুতাপের চিহ্ন নেই এখনও পর্যন্ত। এমনই জানা যাচ্ছে মুর্শিদাবাদ পুলিশের সূত্রে। বরং নিহত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের প্রসঙ্গ এলে, এক রাশ বিদ্বেষের ছায়াই দেখা যাচ্ছে তার চোখেমুখে।
গত ৮ অক্টোবর, বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে, মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি এবং পাঁচ বছরের ছেলে অঙ্গনকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। দিন সাতেক পর সেই খুনের কিনারা হয়। সোমবার রাতে মুর্শিদাবাদেরই সাগরদিঘির বাসিন্দা উত্পল বেহেরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পেশায় দিনমজুর, বছর কুড়ির উত্পল এই খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলেও জানান মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার।
মঙ্গলবার উত্পলকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায় লালবাগের এসিজেএম আদালত। জিয়াগঞ্জ থানাতেই রাখা হয়েছে তাকে। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, নির্লিপ্ত এবং নির্বিকার মুখেই রয়েছে উত্পল। কান্নাকাটি করা বা অনুতাপ করার মতো কিছু তার মধ্যে দেখা যায়নি। পুলিশের জেরায় উল্টে সে বলেছে, ‘যেখানে পেতাম সেখানেই মারতাম ওকে।’
আরও পড়ুন: অযোধ্যা শুনানিতে চূড়ান্ত নাটক, ম্যাপ ছিঁড়লেন আইনজীবী, ওয়াক আউটের হুমকি প্রধান বিচারপতির
গত ৫ অক্টোবর, অর্থাত্ দুর্গাপুজোর সপ্তমীর দিন বন্ধুপ্রকাশকে খুন করবে বলে হাঁসুয়া কেনে উত্পল। এবং তার পরের কয়েক দিন মূলত জিয়াগঞ্জেই ঘোরাফেরা করেছিল বন্ধুপ্রকাশকে মারবে বলে। কাঁধের ব্যাগে সব সময়েই থাকত সেই হাঁসুয়া। তখনও পর্যন্ত নিহত শিক্ষকের বাড়ি সে চিনত না। কিন্তু পুজোর মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে কোথাও না কোথাও তাঁকে পেয়ে যাবে ধরে নিয়েই তার ঘোরাঘুরি চলছিল। শেষ পর্যন্ত না পেয়ে, বাড়ি খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেয় উত্পল। পুলিশ সূত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত বন্ধুপ্রকাশকে না পেয়ে, তাঁকেই ফোন করে বাড়ির ঠিকানা জেনে নেয় উৎপল।
তার পর বিজয়া দশমীর দুপুরে জিয়াগঞ্জে লেবুবাগানের সেই বাড়িতে গিয়ে বন্ধুপ্রকাশকে সপরিবার খুন করে উৎপল। তার পর রাস্তায় রক্ত মাখা জামাপ্যান্ট ফেলে বাড়ি চলে যায়। বন্ধুপ্রকাশের বাড়িতে পাওয়া জীবনবিমার একটা রক্তমাথা কাগজের সূত্রে শেষ পর্যন্ত উত্পলকে ধরে ফেলে পুলিশ। উত্পলের অভিযোগ, বিমার কিস্তি বাবদ ২৪ হাজার টাকা নিয়ে তা আত্মসাত্ করে ফেলেন বন্ধুপ্রকাশ। ফেরত চাইলে দুর্ব্যবহার করতে থাকেন দিনের পর দিন। সেই আক্রোশেই তাঁকে খুন করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় উত্পল। আর বাড়িতে গিয়ে বন্ধুপ্রকাশকে খুনের পর, সেই খুনের সাক্ষীদের সরাতেই বিউটি আর অঙ্গনকে খুন করে সে, পুলিশকে এমনই বলেছে উত্পল। কিন্তু উত্পল কি একাই মিনিট পাঁচেকের মধ্যে এই তিনটে খুন করেছে? না কি তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল। এ নিয়ে পুলিশ কিন্তু এখনও ধোঁয়াশায়।
আরও পড়ুন: রোজভ্যালি নিয়ে ফের নবান্নে সিবিআই, চিঠি মুখ্যসচিবকে, নোটিস অর্থ দফতরের ওএসডিকে-ও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy