তুষার চক্রবর্তী
দুপুরের খাওয়ার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল বারো বছরের ছেলেটি। বলেছিল, “ভোলাদার সঙ্গে গাছ থেকে টিয়া পাখি পাড়তে যাচ্ছি।” পড়শি কলেজ পড়ুয়া ভোলাকে ভালই চিনতেন পরিবারের লোকজনেরা। তাই ছেলেকে বাধা দেননি তাঁরা।
শুক্রবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি জয়নগরের উত্তরপাড়া নীচ এলাকার তুষার চক্রবর্তী (গদাই)। শনিবার বাড়ির কাছেই একটি জঙ্গল থেকে তার দেহ মেলে। তাকে খুনের অভিযোগে মনিরুল শেখ ওরফে ভোলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সে দিন সন্ধ্যে গড়িয়ে গেলেও ছেলে ফিরছে না দেখে পাশের বাড়ির ভোলার কাছে যান তাঁরা। ভোলা জানায়, গদাই সে দিন তার সঙ্গে বেরোয়ইনি। এর পরেই সকলের সঙ্গে চার দিকে গদাইকে খোঁজাখুঁজি করে ভোলাও। গদাই পাখির কথা বলে বেরিয়েছিল। তাই ভোলার পরামর্শেই পাশের পাড়ার এক পাখি ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বাড়ির লোক বিন্দুমাত্র টের পাননি, তাঁদের ছেলেকে মেরে ফেলেছে ভোলা।
শনিবার সকালে তুষারের বাবা দিবাকর চক্রবর্তীর মোবাইলে ফোন করে তুষারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। জয়নগর থানায় বিষয়টা জানান দিবাকর। রায়দিঘির এক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে নম্বরটি জয়নগরের এক যুবকের। সেই সূত্র ধরে ভোলার সন্ধান পায় পুলিশ। সন্ধ্যায় তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তুষারকে অপহরণ ও খুনের কথা স্বীকার করে নেয় সে। তদন্তকারীদের জানায়, তার কিছু টাকা ধার হয়ে গিয়েছিল। তা শোধ করার জন্যই সে অপহরণের ছক কষেছিল সে। ভেবেছিল, টাকা পেলে ছেলেটিকে ছেড়ে দেবে। পরে মনে হয়, ছেলেটিকে ছেড়ে দিলে সে বাড়ি ফিরে সব বলে দিতে পারে। তাই সে দিন শ্বাসরোধ করে ও ধারাল অস্ত্রের আঘাতে তাকে খুন করে সে দেহটা ফেলে আসে বাড়ির কাছেই একটা ঝোপে। এর পর তার পরিবারের লোকজনকে ফোন করে মুক্তিপণের টাকা নেওয়ার চেষ্টায় ছিল সে।
ক্ষুব্ধ প্রতিবেশীরা ভোলার বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। তুষারের দিদি তৃষা বলেন, “সেই রাতে ভোলা আমাদের সঙ্গে খোঁজাখুঁজিও করে। ও এই কাজ করেছে বিশ্বাসই করতে পারছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy