৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১০৮ ভোটে জিতেছেন হিরণ। আর বিজেপি-র জয় ৬টি ওয়ার্ডে। সেখানে মোট ৩৫ ওয়ার্ডের পুরসভায় ২০টিতে জয় পেয়ে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে তৃণমূল। বিদায়ী পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার জয় নিশ্চিত করেছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
জয়ী দুই দলের দুই প্রধান মুখই। ফাইল চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে খড়্গুপর সদর আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। জয়ী হয়েছিলেন অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। সেই জয়ের রেশ ধরেই গেরুয়া শিবিরের আশা ছিল, এই পুরসভায় ভাল ফল হবে। লড়াইয়ে শক্তি বাড়াতে প্রার্থী করা হয়েছিল বিধায়ক হিরণকেও।
হিরণ জিতলেও পুরসভা দখল থেকে অনেক দূরেই রয়ে গেল বিজেপি। প্রাথমিক ভাবে পাওয়া হিসেবে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১২৯ ভোটে জিতেছেন হিরণ। আর বিজেপি-র জয় ৬টি ওয়ার্ডে। মোট ৩৫টি ওয়ার্ডের পুরসভায় ২০টিতে জয় পেয়ে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে তৃণমূল। বিদায়ী পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার জয় নিশ্চিত করেছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। গত বিধানসভা নির্বাচনে হিরণের কাছে হেরেছিলেন প্রদীপ। শেষবেলায় নাটকীয় কিছু না-ঘটলে প্রদীপই আবার খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান হবেন। তেমনই বক্তব্য তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের।
একটা বড় সময় খড়্গপুর শহরে শক্তিশালী ছিল কংগ্রেস। দীর্ঘদিন বিধায়ক ছিলেন কংগ্রেসের জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। এ বার পুরভোটেও তুলনামূলক ভাবে ভাল ফল করেছে কংগ্রেস। বিজেপি-র মতো কংগ্রেসও ৬টি ওয়ার্ডে জয় পেয়েছে। সিপিএম এবং সিপিআই জিতেছে ১টি করে ওয়ার্ড। নির্দল প্রার্থীর জয় ১টি ওয়ার্ডে।
তবে এই পুরসভায় সকলের নজর ছিল ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দিকে। হিরণ প্রার্থী হওয়াতেই নজর কাড়ে ৩৩। কারণ, প্রার্থী ঘোষণার আগে আগে রেলশহরে বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল বিজেপি-র অন্দরের লড়াই। এই শহর থেকে একটা সময়ে বিধায়ক ছিলেন রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এখন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপের লোকসভা এলাকার মধ্যেই পড়ে এই পুরসভা। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে নানা কারণে দিলীপ- হিরণের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তবু হিরণকে সামনে রেখেই পুরভোটের প্রচারের সিদ্ধান্ত এবং পরে অভিনেতা-বিধায়ককে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে রাজ্য বিজেপি দিলীপকে ‘বার্তা’ দিয়েছিল। সেই হিসেবে শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধেই নয়, হিরণের এই ভোট লড়াই ছিল দলের ভিতরেও জবাব দেওয়ার। সেই হিসেবে ‘জোড়া জয়’ পেলেন হিরণ। ফলে ঘোষণার পরে এই জয়কে অবশ্য দলের কৃতিত্ব বলেই দাবি করেছেন হিরণ। তিনি বলেন, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে আমি ২৬৫ ভোটে পিছিয়ে ছিলাম। সেখান থেকে এই জয় ঐতিহাসিক। অতগুলো ভোট কভার করে জয় পেয়েছি। এই জয় আমার নয়, দলের। এখানকার মানুষ বিজেপি-কে ভোট দিয়েছেন।’’
বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই খড়্গুপর সদর শহরে বেশি করে সময় দেওয়া শুরু করেন হিরণ। প্রেমবাজার-হিজলি এলাকায় থাকতে শুরু করেন। নাম তুলে নেন খড়্গুপুরের ভোটার তালিকায়। এ বারে খড়্গপুর পুরসভা নির্বাচনের প্রচার কমিটির আহ্বায়ক করা হয় তাঁকে। সেই হিসেবে শুধু নিজের ওয়ার্ড নয়, অন্যান্য প্রার্থীর হয়েও প্রচারে দেখা যায় হিরণকে। হিরণের বিরুদ্ধে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতা জহর পাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ফলে সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর হবে বলে মনে করছিল রাজনৈতিক মহল। হয়েছেও সেটাই। হিরণের জয়ের ব্যবধান খুব বেশি হয়নি। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছেন তিনিই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy