মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি মুকুল রায়ের।—ফাইল চিত্র।
এক দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে ‘চাপ’ তৈরি করা, অন্য দিকে রাজ্য জুড়ে কাটমানি প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনমত ‘সংগঠিত’ করা— তাদের এই দ্বিমুখী কৌশল স্পষ্ট করে দিল বিজেপি। তৃণমূল পাল্টা বলেছে, রাজ্যের মানুষ এই প্ররোচনা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি মেনে নেবে না।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে শনিবার বিজেপির সভা ছিল। সেখানে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং দলের নেতা মুকুল রায় ছিলেন দুই প্রধান বক্তা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ দিন তাঁদের দু’জনের বক্তব্যই ছিল উস্কানি এবং হুমকিতে ঠাসা।
সংসদের চলতি অধিবেশন শেষ হলেই রাজ্যে তৃণমূল সরকারের উপর কেন্দ্রের ‘চাপ’ নেমে আসবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে মুকুল বলেন, ‘‘আপনার জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করে রয়েছে। সংসদ চলছে বলে এখনও নখ-দাঁতগুলো দেখতে পাচ্ছেন না। অধিবেশন শেষ হলে কী হয় বুঝবেন!’’
অপর বক্তা দিলীপবাবুর আহ্বান, ‘‘যারা টাকা নিয়েছে, তাদের বাড়ির সামনে গিয়ে কড়ায়গন্ডায় বুঝে নিন। আমরা আপনাদের সঙ্গে রয়েছি। মূল টাকার সঙ্গে সুদটাও বুঝে নেবেন। না পেলে থাকতে দেবেন না গ্রামে।’’ পুলিশের বিরুদ্ধে জনগণের ‘করণীয়’ ঠিক করে দিয়ে তাঁর পরামর্শ, ‘‘এত দিন পুলিশ আমাদের কাছ থেকে তোলাবাজি করেছে। এ বার উল্টো তোলাবাজি করতে হবে। সুদ-আসল একসঙ্গে উসুল হবে।’’ মুকুল দাবি তোলেন, ‘‘সব কাটমানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে রয়েছে। আগে তিনি কাটমানির টাকা ফেরত দিন।’’ মমতার পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।
বিজেপির এই ধরনের বক্তব্যকে ‘প্ররোচনা’ বলে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দিলীপবাবু, মুকুলেরা নৈরাজ্য তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এ ভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি দেখিয়ে ওই দল আসলে ক্ষমতায় আসতে চায়। এটাই একমাত্র কর্মসূচি। কিন্তু এই প্ররোচনা, নৈরাজ্য বাংলার মানুষ মেনে নেবে না।’’
মুকুলের নখ-দাঁত বার করার হুমকিকে নস্যাৎ করে দিয়ে পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘‘বামেদের ৩৪ বছরের শাসনে অনেক নখ-দাঁত বাংলার মানুষ দেখেছে। তার জবাবে তাদের চিরতরে বাংলা থেকে বিদায় জানিয়েছে মানুষ। এ বার আবার কেউ নখ-দাঁত দেখাতে চাইলে ৩৪ ঘণ্টাও এখানে টিকতে পারবে না।’’ তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বিজেপি ভোটে যে ২৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে, তা আগে ওরা ফেরত দিক। অমিত শাহের ছেলের যে সম্পত্তি বেড়েছে, সেই টাকা ফেরত দিক।’’
দলকে পুলিশ-নির্ভরতা কাটাতে তৃণমূল নেত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, সে সম্পর্কে মুকুলের কটাক্ষ, ‘‘মমতা ক’টা গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করেন? সঙ্গে কত পুলিশ থাকে? মমতার বাড়ির আর এক জনের গাড়ির বহর জানেন?’’ রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ‘আর এক জন’ হলেন মমতার ভাইপো, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy