গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
টুইটারে নিজের দল তৃণমূলকে ‘আনফলো’ করলেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে কৃষ্ণনগরের সাংসদের ‘মা কালী’ নিয়ে মন্তব্য থেকে দূরত্ব রচনা করেছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে একটি টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ‘কালী প্রসঙ্গে মহুয়া মৈত্র যে মন্তব্য করেছেন, তার দায় কোনও ভাবেই নিচ্ছে না তৃণমূল।’ তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সর্বভারতীয় তৃণমূলের ওই টুইটার হ্যান্ডেলটিকে অনুসরণ করা বন্ধ করলেন মহুয়া।
তবে মা কালী সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যকে তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডল থেকে নিন্দা করার পর মহুয়া সেই হ্যান্ডলকে ‘আনফলো’ করেছেন ঠিকই। কিন্তু তিনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনও টুইটারে ‘ফলো’ করছেন। যা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন দলের নেতাদের একাংশ। তাঁদের মতে, মহুয়া এই বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, তিনি দলে একমাত্র মমতাকেই মান্য করেন।
যদিও বুধবার দুপুর পর্যন্ত মহুয়া ওই বিষয়ে মুখ খোলেননি। তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। মোবাইলে বার্তারও জবাব আসেনি।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় পরিচালক লীনা মানিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্রের একটি পোস্টারে দেবী কালী রূপে এক মহিলাকে ধূমপান করতে দেখা গিয়েছে। যা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সোমবার কলকাতার এক অনুষ্ঠানে দেবী কালীকে নিয়ে ওই ছবির পোস্টার সংক্রান্তে প্রশ্নের প্রেক্ষিতেই একটি মন্তব্য করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। তার পরেই তাঁর সেই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
বিজেপি নেতারা মহুয়ার ওই বক্তব্যকে নেটমাধ্যমে ভাইরাল করে তাঁকে আক্রমণ করতে শুরু করেন। জবাবে মহুয়া টুইট করে লেখেন, ‘আমি কখনওই কোনও চলচ্চিত্রের কোনও পোস্টারের সমর্থন করে ধূমপান শব্দের উল্লেখ করিনি। তারাপীঠে গিয়ে দেখে আসুন সেখানে দেবীকে প্রসাদ হিসেবে কী ধরনের খাবার বা পানীয় দেওয়া হয়।’ মহুয়া লিখেছিলেন, ‘ আমি সঙ্ঘীদের বলতে চাই অসত্য বলে আপনারা ভাল হিন্দু হতে পারবেন না।’ তবে এর পর সর্বভারতীয় তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডেল থেকেই মহুয়ার মন্তব্যের নিন্দা করা হয়। একটি টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘তৃণমূল ওই মন্তব্য সমর্থন করে না বা মান্যতা দেয় না। সর্বভারতীয় তৃণমূল এই ধরনের মন্তব্যের নিন্দা করছে।’
এই ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতেই বুধবার তৃণমূলকে দলের সাংসদ মহুয়া ‘আনফলো’ করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।
মহুয়া অভিযোগ করেছিলেন, ওই ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের নেতারা তাঁর নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই বিতর্কে টানার চেষ্টা করছেন। তবে, তৃণমূলের টুইটের পরও একটি টুইট করেছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। সেখানে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সঙ্গে লেখা, ‘সত্যমেব জয়তে’।
উল্লেখ্য, নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই গোটা দেশে কিছুটা চাপে বিজেপি। তবে তারাই এখন তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার মন্তব্য নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এদিকে, বুধবার মহুয়া প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, সারা বাংলা এবং সারা দেশ জুড়ে মহুয়াকে গ্রেফতারির দাবিতে এফআইআর করা হচ্ছে। শুভেন্দুর কথায়, ‘’আমি কলকাতা পুলিশকে ১০ দিন সময় দিচ্ছি। মহুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে হাই কোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে আবেদন করব।’’ শুভেন্দু আরও জানান, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু পশ্চিমবঙ্গ সফর সেরে চলে যাওয়ার পর তিনি মহুয়ার লোকসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরে গিয়ে মা কালীর মূর্তি নিয়ে আন্দোলনে নামবেন।
যদিও মা কালী নিয়ে মহুয়ার মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের একাংশ জানিয়েছে, মা কালী বাংলায় কী ভাবে পূজিত হন, তা সকলেই জানেন। সেই পূজার উপচারে কী থাকে, তা-ও কালীভক্তেরা জানেন। বিজেপির ‘বহিরাগত’রা বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছে। দলের ওই অংশের বক্তব্য, বাংলা এবং বাঙালিয়ানার উপর ভিত্তি করেই তৃণমূল ২০২১ সালে বিজেপিকে হারিয়েছিল। এখন তারাই বাঙালির ‘কালীভক্তি’ নিয়ে কটাক্ষ করছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy