সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর উপযুক্ত তদন্তের আর্জি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তাঁর মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে খুন করা হয়ছে সুতন্দ্রাকে। তাঁকে যৌন ইঙ্গিত মিশ্রিত কটূক্তিও করা হয়েছে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বুধবার মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন। চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিনই সুতন্দ্রার গাড়ির চালক রাজদেও শর্মাকে দুর্ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থানার পুলিশ।
২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ে গাড়ি উল্টে মৃত্যু হয় হুগলির চন্দননগরের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার ও নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রার। পুলিশের দাবি, দু’টি গাড়ির রেষারেষিতে এই দুর্ঘটনা। এ দিন তনুশ্রী বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে এখনও ভরসা আছে। ওরা যে রকম তদন্ত করছে, করুক। কিন্তু আমি আরও স্বচ্ছতা চাই। কেন বয়ান বদল হয়েছে? ঠিক কী ঘটেছিল? কে দোষী? জানতে চাই। তাই বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’ তিনি জানান, আইনজীবী সুপর্ণা দত্তের সুবাদে হাই কোর্টের
দ্বারস্থ হয়েছেন।
বুধবার অন্য মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্যের আইনজীবী (এজি) কিশোর দত্ত দাবি করেন, তদন্তে উঠে এসেছে, পানাগড়ের ওই ঘটনায় যৌন ইঙ্গিত মিশ্রিত কটূক্তি হয়নি। দু’টি পৃথক ঘটনার জেরে রেষারেষিতে জড়িয়ে পড়ে সুতন্দ্রা ও বাবলু যাদবের গাড়ি। যখন বাবলুর গাড়ি নিজের বাড়ির রাস্তায় যাওয়ার জন্য বাঁক নেয়, দ্রুত গতিতে থাকা সুতন্দ্রার গাড়ি তখন বাবলুর গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের শৌচালয়ে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। দুর্ঘটনা ও তার আগের ৭০ ভাগ ঘটনার সিসিটিভি-র তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
এ দিন বিকেলে রাজদেওকে নিয়ে পুলিশ প্রথমে গলসির পেট্রল পাম্পে যায়। পুলিশের দাবি, রাজদেও দেখান, বুদবুদ গার্লস স্কুলের কাছে বাবলুর গাড়ি তাঁদের গাড়ির বাঁ দিকে ধাক্কা দেয়। তার জেরে, ডিভাইডারে ধাক্কা খায় তাঁদের গাড়ি। এর পরেই তাঁরা বাবলুর গাড়িকে ধাওয়া করেন। বাবলুর গাড়ি পুরনো জিটি রোড ধরলে, তাঁরা তাকে টপকে গিয়ে পুকুরপাড়ে দাঁড়ান। সেখানেও বাবলুর গাড়ি তাঁদের পাশ কাটিয়ে চলে গেলে, ফের ধাওয়া করেন। পুলিশের দাবি, বাবলুর গাড়ি পানাগড়ের রাইসমিল রোডে ঢোকার মুখে কী ভাবে সুতন্দ্রার গাড়ি পিছন থেকে এসে সেটির ডান দিকে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়, তা রাজদেও দেখিয়েছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)