—প্রতীকী ছবি।
২০ কোটি ৯০ লক্ষ।
১৪ কোটি ৮০ লক্ষ।
৭ কোটি ৫০ লক্ষ।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে অভিযোগ, কয়লা পাচারে ‘নিরাপত্তা’ বা ‘সুরক্ষা’ পেতে (প্রোটেকশন মানি) ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে শুধু তিন জেলার পুলিশকর্তাকেই দেওয়া হয়েছে মোট ৪৩ কোটি টাকারও বেশি! তদন্তের অঙ্গ হিসেবে আদালতে জমা করা নথিতে স্পষ্ট এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির দাবি।
ইডি-র ওই নথি অনুয়ায়ী, তিন জেলার পুলিশকর্তার কাছে এই বিপুল টাকা পৌঁছে দেওয়ার ‘মূল কারিগর’ কয়লা পাচারে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা। তদন্তকারী সংস্থাটি সূত্রে দাবি, তিন পুলিশকর্তার কাছে ওই টাকা পৌঁছে দিয়েছিলেন লালার এক গাড়িচালক। তদন্তকারীদের দাবি, সেই গাড়িচালকের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে। যে গাড়িগুলিতে করে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল, শনাক্ত করা গিয়েছে সেগুলিও। শুধু তা-ই নয়, মাস কয়েক আগে দিল্লিতে তলব করে দু’দফায় জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে এই তিন পুলিশকর্তাকে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে অভিযোগ, তদন্তে দেখা যাচ্ছে, শুধু টাকা নয়, কয়লা পাচারের লভ্যাংশের কালো টাকায় ওই তিন পুলিশকর্তাকে ব্যক্তিগত ভাবে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছিল দামি বিদেশি গাড়ি। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, এই তিন পুলিশকর্তা এখনও রাজ্য এবং রেল পুলিশের উচ্চপদে রয়েছেন। তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক আমানতের নথি যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ইডি সূত্র। এক তদন্তকারী অফিসারের অভিযোগ, জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে বহু প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন এই পুলিশকর্তারা। তদন্তে সহযোগিতা তাঁরা করেননি।
২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি মাসে ধাপে ধাপে এই পুলিশকর্তাদের সরকারি বাংলোয় টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে ইডি-র অভিযোগ। কলকাতা ও পুরুলিয়ায় লালার বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে যে নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তা থেকেই পুলিশকর্তাদের কাছে টাকা পৌঁছনোর একের পর এক তথ্য হাতে এসেছে বলে জানান তদন্তকারীরা। এর পরে ফের লালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে, টাকা পৌঁছে দেওয়া গাড়িচালকের কথা উঠে আসে। তখনই তাঁর বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়।
বিপুল অঙ্কের কয়লা পাচার কাণ্ডে যে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত, একাধিক বার সেই ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তকারীদের সূত্রে অভিযোগ, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আসানসোল, দুর্গাপুর, পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়ার মতো বেশ কিছু জায়গায় পুলিশকর্তাদের একাংশ ও নিচুতলার পুলিশকর্মীদের ‘সহায়তায়’ বেপরোয়া ভাবে কয়লা পাচার করা হয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী ও ইসিএলের একাধিক অফিসারদের নামও উঠে এসেছে। ইসিএলের প্রাক্তন ও বর্তমান কয়েক জন পদাধিকারীকে এই মামলায় গ্রেফতারও করেছে সিবিআই। লালা নিজেও এখন শীর্ষ আদালতের আইনি রক্ষাকবচ নিয়ে রয়েছেন।
লালার বয়ান অনুযায়ী কয়লা পাচারে জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত ১০-১২ জন পুলিশকর্তাকে দিল্লিতে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। তাঁদের থেকে নেওয়া সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক আমানতের নথি যাচাই করা হচ্ছে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ওই পুলিশকর্তাদের জমা দেওয়া নথিতে বিভিন্ন অসংলগ্নতা ধরা পড়েছে এবং ফের তাঁদের তলব করাও হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy