মোহন ভাগবত। —ফাইল চিত্র।
আর জি করের ঘটনাকে যে ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তা লজ্জাজনক বলে ব্যাখ্যা করলেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। ওই ঘটনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নিশানা করে ভাগবত বলেন, রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন এর জন্য দায়ী।
ফি-বছর দশমীর সকালে নাগপুরে সঙ্ঘের সদর দফতরে বক্তৃতা দেন সঙ্ঘপ্রধান। এ বারও একাধিক বিষয়ের সঙ্গেই আর জি কর প্রসঙ্গে সরব হন মোহন ভাগবত। তিনি বলেন, ‘‘আর জি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে তা লজ্জাজনক। তবে এটি একক ঘটনা নয়... এ ধরনের ঘটনা যাতে না হয় সে জন্য আমাদের সজাগ থাকার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু এই ঘটনার পরে অপরাধীদের বাঁচাতে যে ভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, তা রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নের ফলাফল।’’
আর জি কর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মহাভারত ও রামায়ণের উদাহরণ দেন ভাগবত। বলেন, ‘‘দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের কারণে মহাভারত হয়েছিল। সীতা অপহরণ হওয়ায় রামায়ণ হয়েছিল। তাই সাধারণ মানুষকে আরও এগিয়ে আসতে হবে। যাতে মাতৃশক্তি আক্রান্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’ নাগপুরের সভায় আজ সার্বিক ভাবে দেশে মহিলাদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সরসঙ্ঘচালক। তাঁর কথায়, সামগ্রিক ভাবে সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। যে কারণে দেশে নারী নিগ্রহ-ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছে মাতৃশক্তি। গোটা দেশ আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে রয়েছে বলে বার্তা দেন সঙ্ঘপ্রধান। বলেন, ‘‘কলকাতার জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে কেবল সেই শহর বা সেই রাজ্যের মানুষই নয়, সমগ্র দেশ রয়েছে।’’
এ দিন নিজের বক্তব্যে আর জি কর কাণ্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর থেকে হয়ে চলা হিন্দুদের উপরে নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন ভাগবত, যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে সরব রয়েছে হিন্দু সংগঠনগুলি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কারণে কেন্দ্র এ নিয়ে সে ভাবে মুখ না খুললেও সঙ্ঘ যে হিন্দুদের উপরে নির্যাতনের ঘটনা ভাল ভাবে নিচ্ছে না, তা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভাগবত। তিনি বলেন, পড়শি দেশে হিন্দুরা যে বিপদের মধ্যে রয়েছেন তা শিক্ষণীয়। কারণ দুর্বল হলে ও সঙ্ঘবদ্ধ না থাকলে অশুভ শক্তির অত্যাচারের শিকার হতে হবে। তাই হিন্দুদের উচিত বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নেওয়া। ভাগবতের কথায়, “দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলাদেশের হিন্দুরা আক্রান্ত হচ্ছেন। যে কারণে বাংলাদেশ আজ হিন্দুরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের হিন্দুদের ভারত সরকার ও বিশ্বের অন্য প্রান্তে থাকা হিন্দুদের সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে।” বাংলাদশের মানুষের ভারত- বিরোধী মানসিকতার সমালোচনা করেন ভাগবত। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পরে বাংলাদেশের কিছু মানুষের মধ্যে পাকিস্তান প্রেম জাগ্রত হয়েছে। তাঁরা ভাবছেন পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ভারতকে চাপে রাখা যাবে।” সরকারের বিষয়টি দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে ধারাবাহিক অনুপ্রবেশের ফলে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর- পূর্ব ভারত, বিহার, জম্মু-কাশ্মীরের জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে যা চিন্তার বলেও মন্তব্য করেন ভাগবত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy