আহত: হাসপাতালের পথে শিল্পী মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
সচেতনতার প্রচার থামার অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফের চলন্ত ট্রেন লক্ষ্য করে ছোড়া হল পাথর। নিশানা করা হল মহিলাদের জন্য নির্ধারিত শিয়ালদহ-বনগাঁগামী মাতৃভূমি লোকাল। পাথরের আঘাতে পায়ে ভাল রকমের আঘাত পেলেন এক তরুণীযাত্রী। এ বারেও ঘটনাস্থল সেই বারাসত ও বামনগাছি স্টেশনের মাঝের একটি জায়গা। শুক্রবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, আহত ওই তরুণীর নাম শিল্পী মণ্ডল (৩০)। পাথরের আঘাতে পায়ে গুরুতর চোট পান তিনি। আঘাতের কারণে তাঁর ক্ষতস্থানে সাতটি সেলাই পড়েছে বলে জানিয়েছেন ওই মহিলার স্বামী আশিস মণ্ডল।
পুলিশের উদ্যোগে ট্রেনে পাথর না ছোড়ার জন্য শুক্রবারেই দিনভর বিধাননগর থেকে দমদম, বিরাটি, বারাসত, বামনগাছির মতো স্টেশনের লাইনের ধার ধরে চলছিল সচেতনতার পদযাত্রা। সেই পদযাত্রা থামার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাথর ছোড়ার ওই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ রেলযাত্রীদের একটি বড় অংশ। তাঁদের অভিযোগ, পরের পর এমন ঘটনা ঘটছে। অথচ দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ছে না। রেলযাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কখনও মহিলা কামরা লক্ষ্য করে উড়ে আসছে পাথর, কখনও আবার উড়ে আসছে প্যাকেটবন্দি মূত্র। সম্প্রতি ওই সব ঘটনায় এ পর্যন্ত কাউকেই ধরতে পারেনি পুলিশ।
পাথরের আঘাতে আহত যাত্রী শিল্পীর স্বামী আশিসবাবু শুক্রবার রাতে বারাসত জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে তিনি জানান, বিরাটিতে মায়ের সঙ্গে দেখা করে মাতৃভূমি লোকালে চেপে গুমায় শ্বশুরবাড়ি ফিরছিলেন পেশায় ঠিকাকর্মী শিল্পী। এ দিন তিনি জানান, চালকের ঠিক পরের কামরার দরজার পাশে তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। বারাসত ছেড়ে বামনগাছি ঢোকার পথে হঠাৎই একদল দুষ্কৃতী ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই একটি পাথর এসে তাঁর বাঁ-পায়ে লাগে বলে শিল্পী জানান। তাতে তাঁর পা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বামনগাছি স্টেশনে ট্রেন থামতেই শিল্পীর সহযাত্রী মহিলারা রেল পুলিশকে ডেকে আনেন। ওই ট্রেনেই শিল্পীকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয় হাবড়া হাসপাতালে। আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই তাঁর পায়ে সেলাই হয়।
সম্প্রতি শিয়ালদহ-বনগাঁ, দক্ষিণ, এবং হাওড়া শাখার ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ও নোংরা ছোড়া হয়। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় বামনগাছিতেই চলন্ত ট্রেনে পাথর উড়ে এসে মুখ ফাটে সাত বছরের এক বালিকার। বারাসত কলেজের এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘পরপর পাথর ছোড়ার ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই ১৫ বছর আগের স্মৃতি। সেই সময়ে শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ এবং বসিরহাট শাখার ট্রেন লক্ষ্য করে নিয়মিত পাথর ছোড়া হত। যাত্রীরা ওই দুষ্কৃতীদের নাম দিয়েছিল রেলের স্টোন ম্যান।’’
শুক্রবার ওই ট্রেনেই ছিলেন বাগাইহাতির বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘শুধু পুলিশকে দোষ দিলেই হবে না। আমাদেরও দায়িত্ব নিয়ে এমন বর্বর মানসিকতা দমন করতে হবে। না হলে কয়েক দিন পরে মহিলারা ট্রেনে চড়তেই ভয় পাবেন।’’ অভিযুক্তদের ধরতে না পারলেও পরের পর এমন ঘটনায় যে যাত্রীরা আতঙ্কিত, তা শনিবার স্বীকার করেছেন ওই শাখার রেল পুলিশের পদস্থ এক কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy