সবে জানতে পেরেছেন হাই কোর্টের নির্দেশ। তখনও মেখলিগঞ্জে পরেশ অধিকারী। ছবি: দেবজ্যোতি রায় লস্কর
বামফ্রন্ট গিয়ে তৃণমূল এসেছে ক্ষমতায়।
কিন্তু তাঁর দাপটে বিশেষ তারতম্য ঘটেনি। কেউ কেউ এমনও বলেন, “ক্ষমতায় যে দলই আসুক না কেন, মেখলিগঞ্জে শেষ কথা বলবে পরেশ-ই।” সেই পরেশকেই মঙ্গলবার সিবিআই দফতরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে মেয়ে অঙ্কিতার নাম তিনি এসএসসি-র মেধা তালিকার এক নম্বরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। সেই দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ে হাজিরা দেওয়ার ডাক পড়ার পরে তৃণমূলেরই দু’-এক জন বলতে শুরু করেছেন, “মেয়ের প্রতি অপত্য স্নেহই ক্ষতি করল পরেশের।” যাত্রাপথেই মন্ত্রী জানান, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন।
এ দিন হাই কোর্টের রায় কিছুটা বিনা মেঘে বাজের মতোই আসে পরেশের কাছে। দলীয় সূত্রে খবর, তিনি তখন কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে দলীয় কর্মসূচিতে ছিলেন। প্রথমে মিছিল, তার পরে বৈঠক করে কিছুটা ক্লান্তও ছিলেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাই কোর্টের রায়ের কথা জানার পরে ধীর-স্থির ভাবেই মঞ্চ ছাড়েন তিনি। তবে কিছুটা চাপে রয়েছেন, সেটা তাঁর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। সেই চাপ জলপাইগুড়িতে গিয়ে পদাতিক এক্সপ্রেস ধরা পর্যন্ত বিশেষ কমেনি। জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেনে ওঠার আগে পরেশ বলেন, ‘‘আমি উত্তরবঙ্গে, আটটার মধ্যে কী করে যাব?’’
বাম জমানায় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা পরেশ অধিকারী এই মেখলিগঞ্জ থেকে জিতেই রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। তৃণমূল জমানা শুরু হলে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। ২০১৮ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে বিজেপির কাছে হেরে যান। এর পরে তাঁকে চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়। পরেশের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই তাঁর মেয়ে অঙ্কিতার নাম ওঠে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকায়। ছ’মাসের মধ্যে মেখলিগঞ্জ শহরেরই একটি স্কুলে তাঁর চাকরিও হয়ে যায়।
এ বারের বিধানসভা ভোটে মেখলিগঞ্জ থেকে পরেশকে প্রার্থী করে তৃণমূল। সেখান থেকে জিতে তিনি মন্ত্রী হন। তাঁর পরেও মেয়েকে নিয়ে ফের বিতর্কে জড়ান পরেশ। তাঁর মেয়ে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি-র ছাত্রী। খসড়া গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার সময় পরেশ সারাক্ষণ হাজির ছিলেন মেয়ের সঙ্গে। ফলে সেখানেও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে পরেশের বিরুদ্ধে।
পরেশের এক ছেলেও রয়েছেন। তিনি চিকিৎসক। রাজনীতিও করেন। কিন্তু যত বিতর্ক মেয়েকে নিয়েই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy