Advertisement
E-Paper

মাওবাদী অর্ণবের গবেষণা আটকাবে না, বিশ্ববিদ্যালয় উত্তর পেয়ে যাবে সোমবার, জানালেন কারামন্ত্রী অখিল

অর্ণব দামের গবেষণার কাজে সুবিধার জন্য তাঁকে বর্ধমান জেলে পাঠাতেও কারা দফতরের সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন কারামন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি জানিয়েছেন, এর সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত।

(বাঁ দিক থেকে)অখিল গিরি, অর্ণব দাম এবং গৌতম চন্দ্র (ডান দিকে)।

(বাঁ দিক থেকে)অখিল গিরি, অর্ণব দাম এবং গৌতম চন্দ্র (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩১
Share
Save

জেলবন্দি মাওবাদী ছাত্র অর্ণব দামের গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য কারা দফতরের কোনও সমস্যা নেই। অর্ণবের বিষয়ে দু’টি প্রশ্নের জবাব জানতে চেয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তার জবাব আগামী সোমবারই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আনন্দবাজার অনলাইনকে শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি।

বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এক্স (সাবেক টুইটারে) হ্যান্ডলে জানিয়েছিলেন, পড়াশোনার সুবিধার জন্য হুগলি জেল থেকে অর্ণবকে বর্ধমান জেলে পাঠানো হতে পারে। এ প্রসঙ্গে অখিল জানিয়েছেন, কোন জেলে অর্ণব থাকবেন, তা দেখে নেওয়া হবে। বর্ধমান জেলেই সুবিধা বেশি হবে সম্ভবত।

তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, অর্ণবের গবেষণায় বাধা দিচ্ছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইন্টারভিউতে প্রথম হওয়ার পরেও তিনি গবেষণা শুরু করতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্র আনন্দবাজার অনলাইনকে বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, অর্ণবের গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়ে দু’টি প্রশ্ন করে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন হুগলি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। জবাব এলেই জট দূর হবে।

বৃহস্পতিবার হুগলি জেল সূত্রে জানা গিয়েছিল, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চিঠি রাজ্য কারা দফতরে পাঠানো হয়েছে। কারামন্ত্রী অখিল শুক্রবার জানালেন, সেই চিঠির জবাব সোমবার পাঠিয়ে দেওয়া হবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এ নিয়ে তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘চিঠি দিয়েছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’’

অর্ণবের গবেষণার কাজে সুবিধার জন্য বর্ধমান জেলে তাঁকে পাঠাতেও কারা দফতরের সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন অখিল। মন্ত্রী বলেন, ‘‘এখানে নিরাপত্তার বিষয় জড়িত রয়েছে। অর্ণব হুগলি জেলে থাকবেন না বর্ধমান জেলে, তা দেখে নেব। বর্ধমানে সম্ভবত সুবিধা হবে।’’ কেন সুবিধা, তা-ও জানিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘হুগলি থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতে খরচ বেশি। রাস্তাঘাটের বিষয় রয়েছে। সেখানে নিরাপত্তার কথাও ভাবতে হবে। কোর্টের অর্ডারও রয়েছে।’’ তবে অর্ণবের গবেষণা যে আটকাবে না, আশ্বাস দিয়েছেন অখিল। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবিধা মতোই সবটা করা হবে। আমাদের পক্ষে কোনও সমস্যা নেই। মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনা, যাঁরা পড়তে চান, তাঁদের পড়তে দিতে হবে।’’

খড়্গপুর আইআইটির মেধাবী ছাত্র অর্ণব পড়াশোনা ছেড়ে সিপিআই (মাওবাদী)-এর রাজনৈতিক মতবাদে আকৃষ্ট সেই সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন। শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গত ফেব্রুয়ারিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পান তিনি। দীর্ঘ দিন ধরেই হুগলি জেলা সংশোধনাগারে বন্দি। তিনি জেলে বসেই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা সেট-এ উত্তীর্ণ হন। তার পরে হুগলি জেল থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে গিয়ে পিএইচডির প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তার পরেও গবেষণার কাজ শুরু করতে পারেননি তিনি। তা নিয়েই শুরু হয় টানাপড়েন।

তৃণমূল নেতা কুণালের অভিযোগ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই বাধা দিচ্ছেন। ঘটনাটি নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ভূমিকায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও ‘ক্ষুব্ধ’ বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়। কুণাল জানান, শিক্ষামন্ত্রী এবং কারামন্ত্রী আলোচনা করেছেন। সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। গবেষণায় যাতে সুবিধা হয়, সে কারণে অর্ণবকে হুগলি থেকে বর্ধমান জেলে সরানো হবে।

গৌতম যদিও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই সংক্রান্ত বিষয়ে দু’টি প্রশ্ন করে চিঠি দিয়েছিলেন জেল সুপারকে। তার জবাব এখনও পাননি তিনি। কী সেই প্রশ্ন? তাঁর কথায়, “আমি হুগলির জেল সুপারকে চিঠি দিয়ে দু’টি প্রশ্ন করেছিলাম। প্রথম প্রশ্ন, কী ভাবে অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নিয়মিত ক্লাস করবেন? সে ক্ষেত্রে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি কে বা কারা দেখবেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন, অর্ণবকে পিএইচডি করতে দেওয়ার বিষয়ে জেল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি বা অনুমোদন রয়েছে কি না।” উপাচার্য জানান, ওই দু’টি বিষয়ের ‘সদুত্তর’ না মেলায় অর্ণবের পিএইচডিতে ভর্তির বিষয়টি শুরু করা যাচ্ছে না।

পরে হুগলি জেল সূত্রে জানা যায়, ওই চিঠি রাজ্যের কারা দফতরকে পাঠানো হয়েছে। তার জবাবই সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হচ্ছে বলে জানালেন মন্ত্রী অখিল। অন্য দিকে, অর্ণব যাতে গবেষণা করতে পারেন, সেই দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে ‘অল ইন্ডিয়া পিপলস ফোরাম’। বৃহস্পতিবার হুগলি জেলে গিয়ে অর্ণবের সঙ্গে কথাও বলেন এআইপিএফের প্রতিনিধিরা।

Akhil Giri Jail PHD Minister

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}