সনিয়ার প্রতীক্ষা। প্রার্থী-সহ অন্যান্য কংগ্রেস নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ওড়িশা যাওয়ার পথে কলাইকুণ্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে দেখা করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের তিন প্রার্থী ও জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, এটা নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎকার। যদিও তৃণমূল এই ঘটনাকে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন হিসাবেই দেখছে। তৃণমূলের তরফে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমূল্য মাইতির কথায়, “ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন ও কংগ্রেসের সভানেত্রী হিসাবে সনিয়া গাঁধী কিভাবে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন? এটা করে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করা হয়েছে বলেই আমরা অভিযোগ করেছি। প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছি।” এ বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রাক্তন জেলা সভাপতি স্বপন দুবে বলেন, “দলীয় সর্বোচ্চ নেত্রী আসছেন, সেখানে জেলার দলীয় নেতারা দেখা করতে যাবেন, এটাই সংস্কৃতি। আমরা পুলিশ ও প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই প্রকাশ্যে সুরক্ষিত বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ঢুকেছিলাম। লুকিয়ে নয়। গিয়েও কেবলমাত্র নেত্রীর এক কপ্টার থেকে অন্য কপ্টারে ওঠার সময়টুকুতেই সৌজন্য বিনিময় হয়েছে। যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের এসব জেনে বুঝে অভিযোগ করা উচিত ছিল।”
এ প্রসঙ্গে মানসবাবুর বক্তব্য, “পুলিশ-প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সামনে দলনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। এতে বিধিভঙ্গের কিছু নেই। তৃণমূল নেত্রী নিজেই সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন। আর তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা অসত্য অভিযোগ করছেন।” জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “অমূল্য মাইতি আমাকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করে দেখব।”
এ দিন ওড়িশার বালেশ্বরে কংগ্রেসের নির্বাচনী সভা ছিল। সেখানেই যাচ্ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। দিল্লি থেকে ওড়িশার দূরত্ব বেশি হওয়ায় সাধারণ কপ্টারে আসা সম্ভব ছিল না। তাই তিনি অন্য উড়ানে আসেন। সেই উড়ান নামার জন্য চাই বড় রানওয়ে। কিন্তু সভাস্থলের কাছাকাছি সে রকম রানওয়ে না থাকায় কলাইকুণ্ডা বায়ুসেনার রানওয়েকেই ব্যবহার করা হয়। কলাইকুণ্ডা থেকে কপ্টারে ওড়িশা যান সনিয়া। দলনেত্রী কলাইকুণ্ডায় কপ্টার বদল করবেন জানার পরেই কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত নেন। প্রশাসনের কাছে ১০ জনের নামে তালিকাও পাঠানো হয়। তাতে জেলার তিন কেন্দ্রের প্রার্থী মানস ভুঁইয়া, বিমল রাজ এবং অনিতা হাঁসদা ছাড়াও জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া, প্রাক্তন জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে, খড়্গপুরের বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল, খড়্গপুর পুরসভার পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডেদের নাম ছিল। ১০ জনের মধ্যে শুধু সবং ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অমল পাণ্ডা আসতে পারেননি। আর জেলা গোয়েন্দা বিভাগ থেকে মহম্মদ রফিকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে জানানোয় তিনি দেখা করার অনুমতি পাননি। বাকি ৮ জন সনিয়ার সঙ্গে দেখা করেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ সনিয়ার বিমান কলাইকুণ্ডায় নামে। বিমানটি যেখানে নামে, তার থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে দাঁড়িয়েছিল কপ্টারটি। উড়ান থেকে নেমেই সনিয়া কংগ্রেস নেতাদের হাত নেড়ে স্বাগত জানান। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কংগ্রেস নেত্রীর জন্য ফুলের মালা, গরমে মুখ মোছার জন্য তোওয়ালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের প্রার্থী অনিতাদেবী আদিবাসী সংস্কৃতির নমুনা হিসাবে নিয়ে গিয়েছিলেন কাঞ্চীর শাড়ি। সেগুলি ‘স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপে’র হাতে তুলে দেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
জানা গিয়েছে, সামান্য সময়ের সাক্ষাতে দলের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন সনিয়া। কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁকে প্রচারে আসার অনুরোধ জানান। সেনা ঘাঁটি থেকে বেরিয়ে মানসবাবু বলেন, “আমরা নেত্রী ও রাহুল গাঁধীকে মেদিনীপুরে প্রচারের জন্য আসতে অনুরোধ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, নির্বচনী প্রচারের নির্ঘন্ট তৈরির কাজ চলছে। তা চূড়ান্ত হলেই আমাদের জানিয়ে দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy