এক যুবককে খুনের ঘটনায় একই পরিবারের তিন জনকে বুধবারই দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। বৃহস্পতিবার তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়। ঘাটালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক দেবপ্রসাদ নাথ এই নির্দেশ দেন। মামলার সরকারি আইনজীবী চিত্তরঞ্জন কর্মকার বলেন, “সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে এক যুবককে কুড়ুল দিয়ে খুন করার দায়ে তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।” এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আমরা উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান আসামী পক্ষের আইনজীবী অসিত মণ্ডল।
২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। দাসপুর থানার ডোঙাভাঙা গ্রামের বাড়ি থেকে কার্তিক প্রধানকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করে সম্পর্কে নিজের কাকা নকুল প্রধান। তারপর তাঁর মাথায় কুড়ুল দিয়ে আঘাত করে নকুল। এই ঘটনায় নকুলবাবুকে তাঁর স্ত্রী শ্যামলীদেবী ও ছেলে সিদ্ধার্থ সাহায্য করে। কার্তিককে খুনের কারণ কী? কার্তিকদের বাড়ির সামনের এক ফালি জমি নিয়েই বিতর্ক দীর্ঘদিনের। মাঝে-মধ্যেই জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল লেগেই থাকত। গ্রামবাসীরা বহুবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করলেও জট কাটেনি।
অভিযোগ, ২৫ ফেব্রুয়ারি কার্তিকবাবু দুপুরের খাওয়া সেরে বাড়ির সামনেই ঘোরাফেরা করছিলেন। সেই সময় তাঁকে বাড়িতে ডাকেন সিদ্ধার্থ। বাড়িতে আসতেই বাড়ির সামনের ওই জমি নিয়ে সিদ্ধার্থর সঙ্গে কার্তিকের বচসা শুরু হয়। বচসা চলাকালীন নকুল বাড়ি থেকে কুড়ুল নিয়ে এসে কার্তিকের মাথায় কোপ মারেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বছর তিরিশের যুবক কার্তিকের। ঘটনার পরই কার্তিকের মা আরতীদেবী দাসপুর থানায় নকুল, সিদ্ধার্থ ও উমাদেবীর নামে খুনের মামলা দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিন রাতেই অভিযুক্ত তিন জনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। রুজু হয় খুনের মামলা। তারপর থেকে ঘাটাল আদালতে মামলাটি চলছিল। ওই মামলায় ১৮ জন সাক্ষ্যও দেন। বুধবার অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তাঁদের তিন জনকেই ২৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।