চণ্ডী করণ ও ফুল্লরা মণ্ডলের সঙ্গে করমর্দন করছেন মহম্মদ সেলিম। শনিবার ঝাড়গ্রামের দেবেন্দ্রমোহন হলে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটে তবে কি নেতাই-কাণ্ডকেই জঙ্গলমহলে প্রচারের অস্ত্র করছে সিপিএম! শনিবার ঝাড়গ্রামে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সাংগঠনিক আলোচনাসভায় নেতাই মামলায় অভিযুক্ত বর্তমানে জামিনে মুক্ত চণ্ডী করণ ও ফুল্লরা মণ্ডলের উপস্থিতি এই সম্ভাবনাই উস্কে দিয়েছে। সভার পরে দলের জেলা কার্যালয়ে ফুল্লরার সঙ্গে একান্তে কথাও বলেন সেলিম।
অরণ্যশহরের দেবেন্দ্রমোহন হলে ঝাড়গ্রাম জেলা সিপিএমের আলোচনাসভার বিষয় ছিল: ‘বর্তমান পরিস্থিতি ও পার্টি সদস্যদের করণীয় কাজ’। মূল বক্তা সেলিমই। সভায় জেলা কমিটি ও ১৫টি এরিয়া কমিটির সব সদস্য, ১৮০টি শাখা কমিটি থেকে তিন জন করে এবং দলের গণ-সংগঠনগুলির নেতা-নেত্রী মিলিয়ে ৫৯৪ জন হাজির ছিলেন। জেলা সিপিএমের ব্যাখ্যা, ফুল্লরা জেলা কমিটির সদস্য আর চণ্ডী বিনপুর এরিয়া কমিটির সদস্য হওয়ায় উপস্থিত ছিলেন। তবে পারিবারিক কারণে আসতে পারেননি সদ্য জামিনে মুক্ত লালগড় এরিয়া কমিটির দুই সদস্য ডালিম পান্ডে ও তপন দে।
মঞ্চে সেলিম ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র, জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকার, প্রবীণ নেতা ডহরেশ্বর সেন, রাজ্য কমিটির সদস্য পুলিনবিহারী বাস্কে প্রমুখ। ফুল্লরা ও চণ্ডী ছিলেন শ্রোতার আসনে। আলোচনাসভায় সেলিম বলেন, ‘‘আমরা আমাদের অহমিকা ও আহাম্মকপনার জন্য নিজেদের বাড়ির পলেস্তারা খসিয়ে দিয়েছি। এ নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়াদের কাছে যেতে হবে। ভিত পোক্ত না হলে বাড়ি শক্ত হয় না।’’ পাশাপাশি তৃণমূল, বিজেপি ও আরএসএসের সমালোচনা করে সেলিমের বার্তা, ‘‘আদিবাসী, মূলবাসী, সংখ্যালঘু-সহ সবাইকে নিয়েই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার লড়াইটা চালিয়ে যাব। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য আরএসএস স্বীকার করে না।’’
বাম ঐক্যকে শক্তিশালী করতে সিপিএমকেই শক্তিশালী করার কথা বলেন সেলিম। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বাম বন্ধুদের কেউ কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে লেনিনকে দেখেছিলেন, সিপিএমকে বাদ দিয়ে জোট গড়তে চেয়েছিলেন। তাঁরা এখন ভুল বুঝেছেন।’’ জেলা জুড়ে পাড়া বৈঠক, গ্রামসভা করায় জোর দিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘বামপন্থা মানে তলা থেকে উপরে ওঠা। তলায় যে সব ফাঁকফোকর রয়েছে, সেগুলি মেরামত করতে হবে।’’ এ দিন প্রবীণ নেতা ডহরেশ্বর সেনের লেখা ‘লালমাটির লালকথা’ বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন সেলিম।
সভার পরে চণ্ডী ও ফুল্লরার সঙ্গে করমর্দন করেন রাজ্য সম্পাদক। সংবাদিক বৈঠকেও সেলিম স্পষ্ট করে দেন, ‘‘নেতাইয়ের ঘটনাটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। বিজেপি-তৃণমূল-মাওবাদী একসঙ্গে মিলে যে ভাবে সিপিএম কর্মীদের খুন করেছে, তেমনই ভারতী ঘোষ, শুভেন্দু, মমতা একসঙ্গে মিলে সিপিএমের লোকজনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে।’’ ফুল্লরা, চণ্ডীদের কি পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা হবে? সেলিমের জবাব, ‘‘পার্টি এটা ঠিক করে।’’
পরে দলের জেলা কার্যালয়ে সেলিম জেলা নেতাদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। ছিলেন ফুল্লরাও। তবে চণ্ডী যাননি। সূত্রের খবর, নেতাই কাণ্ডে এখনও কতজনের জামিন হয়নি সেই তথ্য সংগ্রহ করেছেন সেলিম। মামলায় সমস্যা হচ্ছে কিনা সেটাও ঝাড়গ্রাম জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিয় পাত্রের কাছে জানতে চান। সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকার মানছেন, ‘‘রাজ্য সম্পাদক ফুল্লরাদির সঙ্গে কথা বলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy