টিকা নেই বহু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। প্রতীকী চিত্র।
ভাঁড়ারে করোনা টিকা অপর্যাপ্ত। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু টিকা কেন্দ্রই এখন টিকা শূন্য!
পরিস্থিতি দেখে টিকা চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে জেলা। আপাতত প্রতিষেধকের দু’লক্ষ ডোজ় চাওয়া হয়েছে। কোভিশিল্ডের এক লক্ষ, কোভ্যাক্সিনের এক লক্ষ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, ‘‘করোনা টিকা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’
জেলায় সতর্কতামূলক ডোজ় (বুস্টার) নেওয়ার শতকরা হার সন্তোষজনক নয়। চিন-সহ একাধিক দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তা বেড়েছে। বুস্টারের হার বাড়ানো প্রয়োজন। অথচ, পর্যাপ্ত টিকাই নেই জেলায়। জানা যাচ্ছে, বুধবার পর্যন্ত জেলায় ছিল করোনা টিকার ১২,৫৬০টি ডোজ। সবই কোভ্যাক্সিনের। জেলায় কোভিশিল্ডের একটি ডোজ়ও নেই।
আগেই কেন টিকা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়নি? জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা শোনাচ্ছেন, বুস্টার ডোজ় নেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা ছিল অনেকের মধ্যে। চাহিদা ছিল না। পড়ে থেকে নষ্ট হত। তাই টিকা চাওয়া হয়নি। এখন আগ্রহ ফিরছে। অনেকে বুস্টার ডোজ় নিতে চাইছেন। মেদিনীপুর মেডিক্যালে এখন মাত্র ৩৬০টি ডোজ় রয়েছে। মেদিনীপুর গ্রামীণের দেপাড়া হাসপাতালে মাত্র ৪০টি ডোজ় রয়েছে। হাতেগোনা হাসপাতালে এক হাজারের অধিক ডোজ় রয়েছে। যেমন বেলদায় রয়েছে ২,১২০টি ডোজ়, কেশপুরে রয়েছে ১,১২০টি ডোজ়। বাকি হাসপাতালের মধ্যে কোথাও নামমাত্র ডোজ় রয়েছে, কোথাও একটি ডোজ়ও নেই। জানা যাচ্ছে, জেলার তরফে রাজ্যের কাছে নেজ়াল ভ্যাকসিনও চাওয়া হবে।
পরিসংখ্যান বলছে, জেলায় ১৮ বছর ঊর্ধ্বদের মধ্যে বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন প্রায় ২৮ শতাংশ। বাকি ৭২ শতাংশই নেননি। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে বুস্টার নিয়েছেন প্রায় ২২ শতাংশ। বাকি ৭৮ শতাংশই নেননি। জেলায় সতর্কতামূলক ডোজ় নেওয়ার শতকরা হার তো সন্তোষজনক নয়? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘মানুষজনকে নানাভাবেই সচেতন করা হচ্ছে। কাদের এই ডোজ় বাকি রয়েছে, তা খুঁজে বার করার কাজও চলছে।’’ জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, ‘‘ভাইরাস প্রতিনিয়ত মিউটেশনের মাধ্যমে নিজেকে পরিবর্তন করছে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গেলে বুস্টার ডোজ়ে জোর দেওয়া প্রয়োজন।’’ সঙ্গে তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘‘এটাই অনেকে বুঝছেন না যে, বুস্টার ডোজ় নিলে সঙ্কটজনক হওয়া থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকা যাবে। এই ডোজ় নিলে ক্ষতি তো নেই, বরং সুফল পাওয়া যাবে একাধিকভাবে।’’
চলতি মাসেই পশ্চিম মেদিনীপুরে চারজনের করোনা ধরা পড়েছে। দু’জন সেরে উঠেছেন। বাকি দু’জন চিকিৎসাধীন। জেলাশাসক আয়েষা রানির দাবি, ‘‘জেলায় করোনা পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণেই। চিন্তার কিছু নেই।’’ অবশ্য রাজ্যের নির্দেশে জেলায় নতুন করে ফের করোনা মোকাবিলার প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে। করোনা পরীক্ষার সংখ্যা, করোনা- শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, বুধবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছেন ৩৮,৪০,৪৮৯ জন। এর মধ্যে ১৮ ঊর্ধ্ব ৩৪,৯৬,৬১৫ জন। ১২ থেকে ১৪ বয়সি ১,৪৬,৩৮৮ জন এবং ১৫ থেকে ১৭ বয়সি ১,৯৭,৪৮৬ জন। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছেন ৩৬,৪০,৯৫১ জন। এর মধ্যে ১৮ ঊর্ধ্ব ৩৩,৪৭,৪১৩ জন, ১২ থেকে ১৪ বয়সি ১,২১,২০২ জন এবং ১৫ থেকে ১৭ বয়সি ১,৭২,৩৩৬ জন। আর বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন ৯,৪৩,৪৯৪ জন। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মনে করাচ্ছেন, ‘‘বুস্টার ডোজ নিলে কেউ আর করোনায় সংক্রমিত হবেন না, তেমনটা নয়। তবে সঙ্কটজনক হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy