ভোট দিয়ে বেরোচ্ছেন শিশির অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের আগের দিন অডিয়ো-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তিনি ফোন করে ছেলে ‘শুভেন্দুর প্রার্থী’ অর্থাৎ বিজেপি-কে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। আর ভোটের দিন সেই শিশিরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাঁথিতে বুথ দখলের অভিযোগ নিয়ে শিশির আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও। তাঁর মন্তব্য, ‘‘গোটাটা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কালীঘাট থেকে হচ্ছে। উনি হেরে গিয়েছেন সেই জ্বালা-যন্ত্রণা অধিকারীদের হারিয়ে দিয়ে মেটাবেন।’’ শিশিরের মন্তব্যের জবাব দিয়েছে তৃণমূল শিবিরও।
রবিবার কাঁথির প্রভাত কুমার কলেজে ভোট দিয়ে বেরোনোর সময় শিশির অভিযোগ করেন, বুথ জ্যাম করার চেষ্টা হচ্ছে। এ নিয়ে পুলিশকেও বিঁধেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাছে যা খবর ১১টা বুথ লুঠ হয়েছে। এটা নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের জের। পর্যবেক্ষকদের কোনও ভূমিকা নেই। ৫০-৬০ বছর আমি ভোট দেখেছি। এ ভোট জীবনে দেখিনি। নির্বাচন কমিশনে আমরা অভিযোগ করব।’’ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ করেও শিশিরের গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি দল এখানে একটাও আসন পাবে না।’’ এই সূত্রেই সাংবাদিকদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কাকে ভোট দিয়েছি সেটা বলা ঠিক নয়। তবে মনের উদ্দেশ্য আপনারা আন্দাজ করে নিন।’’
শিশিরের কথায়, ‘‘গত আট-নয় মাস আগে কাঁথি ব্যাঙ্ক, কাঁথি পুরসভা এবং কাঁথি কলেজ এই তিনটে জায়গায় আমাদের ছেলেরা কর্তৃত্ব করত। কিন্তু গত নয় মাস ধরে এই তিনটি জায়গায় পুলিশের তাণ্ডব। শুধু একটা কিছু মামলা করে ঢুকিয়ে দিতে হবে। মরিয়ে চেষ্টা চলছে।’’ পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে শিশিরের আরও বক্তব্য, ‘‘পুলিশ না থাকলে ছাপ্পা কী করে হবে? গোটাটা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কালীঘাট থেকে হচ্ছে। উনি হেরে গিয়েছেন। জ্বালা-যন্ত্রণা অধিকারীদের হারিয়ে দিয়ে মেটাবেন। শহরটা ত্রাসের রাজত্ব হয়েছে।’’ নাম না করে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরিকে তাঁর খোঁচা, ‘‘এখানে একটা মন্ত্রী আছেন। তাঁকে নবান্নে যেতে দেয় না। এখানে শুয়ে থাকেন। তাঁর বাড়ি থেকে অস্ত্র বেরোচ্ছে।’’
শিশিরের মন্তব্য নিয়ে অখিলের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ওরা নন্দীগ্রামে ছাপ্পা করে জিতেছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে জিতে গিয়েছেন৷ তাই নন্দীগ্রাম নিয়ে জ্বালা মেটানোর কোনও ব্যাপার নেই। অধিকারীরা বুঝে গিয়েছেন কাঁথিতে পায়ের তলার মাটি হারিয়ে গেছে। তাই ছাপ্পার অভিযোগ তুলে মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছেন। চোরের মন পুঁটলির দিকে। যারা এত দিন কাঁথিতে নির্বিঘ্নে ভোট করতে দেননি তাঁরাই সব জায়গায় ছাপ্পার গন্ধ পাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy