Advertisement
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
West Bengal Lockdown

বাস নামলেও যাত্রী নামমাত্র 

কোনও বাসে এক জন, তো কোনও বাসে বড় জোর চার জন। 

যাত্রীর অপেক্ষায়। ঝাড়গ্রাম পাঁচ মাথার মোড়ে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

যাত্রীর অপেক্ষায়। ঝাড়গ্রাম পাঁচ মাথার মোড়ে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ০৩:০১
Share: Save:

সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো বেসরকারি বাস পথে নামল সোমবার। তবে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দুই জেলাতেই অল্প সংখ্যক বাস চলেছে। গোড়ায় কমপক্ষে ৫০টি বাস রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছিল ঝাড়গ্রাম জেলার বাস মালিকদের সংগঠন। তবে সোমবার জেলার মধ্যে বিভিন্ন রুটে পরীক্ষামূলক ভাবে বাস চলল মাত্র ১২টি। আর পশ্চিম মেদিনীপুরে মোটে ৬টি বেসরকারি বাস নেমেছিল, যেখানে জেলার উপর দিয়ে বাস চলে প্রায় ৮০০টি। যাত্রীও প্রায় ছিল না। কোনও বাসে এক জন, তো কোনও বাসে বড় জোর চার জন।

দিনের শেষে যাত্রী সংখ্যা দেখে হতাশ বাস মালিকেরা। সারা দিনে বাসগুলিতে গড়ে একশো টাকারও টিকিট বিক্রি হয়নি। ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপকুমার পাল বলছেন, ‘‘প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা মোটেই ভাল নয়। এ ভাবে বাস চালিয়ে তো বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। না হলে সরকারকে তেলের খরচ জোগাতে হবে। আমরা পরিবহণ দফতরে আবেদন জানাব।’’ দিন সাতেক হল জেলায় সরকারি বাসও চলছে। তাতেও যাত্রী নেই বললেই চলে। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে এ দিনও সরকারি বাস ছাড়তে দেখা গিয়েছে।

বেসরকারি বাস চালানো নিয়ে মাস খানেক ধরে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে আলোচনা চলছিল বাস মালিকদের। দ্বিগুণ ভাড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বাস মালিকেরা। প্রস্তাব গৃহীত হলেও জেলায় করোনা আক্রান্তের খবর মেলায় ১০ মে বাস চলানো বিষয়টি স্থগিত করে দেয় প্রশাসন। আগে অর্ধেক আসনের যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর কথা বলে হলেও সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী সব আসনে যাত্রী নিয়ে পুরনো ভাড়ায় বেসরকারি বাস চালানোর কথা বলেন। সোমবার কমপক্ষে ৫০টি বেসরকারি বাস পথে নামানোর কথা থাকলেও একাংশ মালিক বাস নামাতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত সাতটি রুটে ১২ টি বেসরকারি বাস চলে। রুটে দু’বার যাতায়াতের পরে প্রতিটি বাসের গড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। কোনও বাসে অঙ্কটা ২০ থেকে ৩০ টাকা।

এ দিন বেলপাহাড়ি-ঝাড়গ্রাম রুটের একটি বাসের কনডাক্টর সুরেন্দ্র পাত্র বলেন, ‘‘সারাদিনে মাত্র একজন যাত্রী বাসে ওঠেন। তিনি ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে ঝাড়গ্রাম থেকে শিলদা যান।’’ বেলপাহাড়ি-কাঁথি রুটের এক বাস মালিক বলেন, ‘‘প্রথম দিনটা দেখে মঙ্গলবার থেকে বাস চালাব ঠিক করেছিলাম। যা দেখছি আর বাস চালানোর ঝুঁকি নিতে চাই না। আমার বেলপাহাড়ি থেকে কাঁথি যাওয়া-আসা করতে একদিনে সাড়ে আট হাজার টাকার ডিজেল ভরতে হয়। বাস কর্মীদের খরচ বাবদ দৈনিক ১৮০০ টাকা দিতে হয়। এভাবে ফাঁকা বাস চালালে দেউলিয়া হতে হবে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, ‘‘অল্প সংখ্যক বাসই এদিন নেমেছিল। রাস্তাঘাটে তেমন যাত্রী ছিল না। একাংশ বাসকর্মীও কাজে আসেননি।’’

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘বাস মালিকেরা এখনও সমস্যার কথা জানাননি।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলছেন, ‘‘বাস চললে যাত্রী সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়বে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদারেরও আশা, ‘‘শীঘ্রই জেলায় বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy