সাইকেলে করে পান পৌঁছে দিচ্ছেন রাজকুমার। —নিজস্ব চিত্র
করোনা আবহে ওষুধ, আনাজের মতো অত্যাবশকীয় পণ্যের হোম ডেলিভারি শুরু হয়েছিল আগেই। এ বার বিরিয়ানি, পানের মতো শৌখিন খাবারের হোম ডেলিভারিও শুরু হল মফস্সলে। কেউ পানের হোম ডেলিভারি করছেন। কেউ আবার বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন রেশনের। মিলছে ফাস্টফুডও। লকডাউনে কাজ হারিয়ে গোয়ালতোড়ের অনেকেরই এখন ভরসা হোম ডেলিভারি।
গোয়ালতোড় বাসস্ট্যান্ডের সামনে পানের দোকান রয়েছে রাজকুমার দাসের। বাড়িতে রয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা- মা। লকডাউনের জন্য দোকান এখন বন্ধ। তাই রোজগারের জন্য পানের হোম ডেলিভারিকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। ফোন করে কেউ চাইছেন সাদা পান, কেউ বা জর্দা দেওয়া পান। কারও আবার পছন্দ মিঠাপাতি। সাইকেলে করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় সেই পান পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। রাজকুমারের কথায়, ‘‘লকডাউনে দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কূ করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কোনও কাজই তো নেই। তাই পানেরই হোম ডেলিভারি শুরু করেছি।’’ এখন প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় দেড়শো পানের বরাত আসছে বলে জানান তিনি।
বছর সত্তরের নেপাল লোহারকে এখন গোয়ালতোড়ের মানুষ একডাকে চেনেন। পোস্টঅফিস পাড়ার এই প্রৌঢ় লকডাউনের মধ্যে বাড়ি বাড়ি বাজার করে দিচ্ছেন। এনে দিচ্ছেন রেশনও। নেপাল বলেন, ‘‘এইসব কাজ করে যা সাহায্য পাচ্ছি তা দিয়ে সংসার চালাচ্ছি।’’
আরও পড়ুন: পথে ঘুরবে এটিএমের গাড়ি
আরও পড়ুন: মানবদেহে পরীক্ষা শুরু অক্সফোর্ডে
লকডাউনে কাজ বন্ধ হলেও খাওয়াদাওয়া বন্ধ নেই। কিন্তু বাইরে বেড়িয়ে রসনা তৃপ্তির সুযোগ নেই এখন। সেই সুযোগই নিচ্ছেন পেশায় রাঁধুনি নিমাই অধিকারী। তাঁকে ফোন করে বাড়ির ঠিকানা দিলেই পৌঁছে যাচ্ছে বিরিয়ানি, চাউমিন। গোয়ালতোড় হাইস্কুলের পেছনেই বাড়ি নিমাইয়ের। বিয়ে, অন্নপ্রাশন-সহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে রান্নার কাজ করেন তিনি। করোনা পরিস্থিতিতে এখন সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ। ফলে কাজ নেই নিমাইয়ের। তাই তিনি বাড়িতেই তৈরি করছেন চপ, সিঙারা, কাটলেট, এগরোল, মোগলাই। বরাত আসছে বিরিয়ানিরও। বাচ্চা সামলে স্ত্রী শম্পাও স্বামীর কাজে সাহায্য করছেন। নিমাইয়ের কথায়, ‘‘এটা না করলে সংসার চালাতাম কী করে জানি না।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy