ভরসা: গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান। কেশপুরের ঘোষডিহা গ্রামে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
বিধানসভা ভোটের দিন ঘোষণা হয়নি এখনও। তার আগেই ভারী বুটের শব্দ শোনা যাচ্ছে এলাকায়। রবিবার থেকে কেশপুরের সুনসান রাস্তায় আচমকাই শুরু হয়েছে আধাসেনার টহলদারি। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে টহল দিতে দেখে কাউকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এত আগে থেকেই বাহিনী!’’ কেউ আবার বলছেন, ‘‘বাহিনী থাকলে নিরাপত্তা জোরদার থাকবে। এলাকাটার নাম কেশপুর তো।’’ এ দিন কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিয়েছেন সিআরপি-র জওয়ানরা। সঙ্গে ছিলেন পুলিশকর্মীরাও। অন্য দিকে, রবিবার থেকে চন্দ্রকোনা ও দাসপুরের বিভিন্ন গ্রামেও টহল দিতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সকালে কেশপুর লাগোয়া চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুরে রুটমার্চ চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিকেলে দাসপুরের রাজনগর এলাকায় ‘উত্তেজনাপ্রবণ’ গ্রামগুলিতে ঘুরে বেড়ায় কেন্দ্রীয় জওয়ানরা। জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার মানছেন, ‘‘আধা সামরিক বাহিনীর টহল শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
আপাতত, রুটমার্চের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরে পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা। শনিবার রাতে এক কোম্পানি বাহিনী এসেছে। ওই বাহিনীকে পাঠানো হয়েছে কেশপুরে। রবিবার থেকেই বাহিনী রুটমার্চ শুরু করে দিয়েছে। জেলার ‘উত্তেজনাপ্রবণ’ এলাকাগুলির মধ্যে কেশপুর অন্যতম। বাহিনীকে ছোট ছোট দলে ভাগ করে রুটমার্চ শুরু করা হয়েছে। এক কোম্পানি বাহিনীতে ১২টি ‘সেকশন’ থাকে এবং প্রতি সেকশনে আট জন করে জওয়ান থাকেন। সাধারণত, রুটমার্চের জন্য কোম্পানি পিছু ন’টি সেকশনকে (৭২ জন জওয়ান) কাজে লাগানো হয়। রুটমার্চের জন্য এক একটি দলে তিনটি সেকশন রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ এক একটি দলে ২৪ জন জওয়ান থাকছেন। একই সময়ে তিনটি দল পৃথক তিনটি এলাকায় রুটমার্চে যেতে পারবে। রবিবার এ ভাবেই রুট মার্চ হয়েছে।
কেশপুরে যে বাহিনী এসেছে, সেই বাহিনীকে দিয়ে কেশপুরের পাশাপাশি আনন্দপুর এবং চন্দ্রকোনা থানা এলাকায় রুটমার্চ করানো হবে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “এ দিন কেশপুর থেকে এসে লাগোয়া দাসপুর ও চন্দ্রকোনার গ্রামগুলিতে রুটমার্চ হয়েছে। দ্রুতই ঘাটাল মহকুমার নিজস্ব বাহিনী এসে যাবে। পুলিশের রুটমার্চ চলছেই।” জেলা পুলিশের এক সূত্রের খবর, রবিবার ঘাটাল মহকুমার দাসপুর ও চন্দ্রকোনার বেশ কয়েকটি গ্রামে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। দু’টি সেকশনের ১৬ জন জওয়ান কেশপুর থেকে চন্দ্রকোনায় এসে রুটমার্চ করেন। এ দিন সকালেই চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রায়লা, টুকুরিয়া, কুঁয়াপুর লাগোয়া গ্রামগুলিতে গিয়ে টহল দেয় বাহিনী। গ্রামে ঢুকে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
শীঘ্রই আরও চার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলায় আসার কথা। ওই বাহিনীকে কোথায় রাখা হবে? সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সবং, দাঁতন, গড়বেতা এবং মেদিনীপুরে এক কোম্পানি করে বাহিনী রাখা হতে পারে। সবং থেকে বাহিনী সবংয়ের পাশাপাশি পিংলা, ডেবরার মতো এলাকায় টহল দিতে পারবে। দাঁতন থেকে বাহিনী দাঁতনের পাশাপাশি বেলদা, নারায়ণগড়ের মতো এলাকায় টহল দিতে পারবে। গড়বেতা থেকে বাহিনী গড়বেতার পাশাপাশি গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোডের মতো এলাকায় টহল দিতে পারবে। মেদিনীপুর থেকে বাহিনী শালবনিতে গিয়ে টহল দিতে পারবে। বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘আমরা চাই, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা হোক।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী রুটমার্চ শুরু করেছে বলে শুনেছি। এ নিয়ে মাথাব্যাথার কিছু নেই।’’ অন্য দিকে, ঘাটালের তিনটি থানাতেও এসে পৌঁছবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ইতিমধ্যেই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। ঘাটালে পলিটেকনিক কলেজ, চন্দ্রকোনায় এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং দাসপুরের সোনামুই বিএড কলেজে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy