জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মিড-ডে মিলের মেনু তালিকা ঠিক করার দায়িত্ব স্কুলগুলির উপরেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফাইল চিত্র।
জেলা সফরে এসে দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিড-ডে মিলের নজরদারিতে আরও গুরুত্ব দিতে বলেছিলেন। বিডিও, এসডিও ছাড়াও থানার ওসি এবং আইসিদেরও স্কুল গিয়ে মিড-ডে মিলের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি হুগলির চুঁচুড়া বালিকা বিদ্যামন্দিরে মিড-ডে মিলে নুন-ভাত দেওয়ার ঘটনায় শোরগোল পড়ে। তারপরই স্কুলগুলিতে মিড- ডে মিলে নজরদারি বাড়াতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের মিড-ডে মিল বিভাগ ২২ আগস্ট মিড-ডে মিলের ‘মেনু’ সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠায় স্কুলগুলিতে। সপ্তাহে দুদিন মাছ বা ডিমের ঝোল, একদিন আলু-পোস্ত সহ ওই ‘মেনু’ স্কুলগুলিতে পাঠানো হয়। ওই ‘মেনু’ মেনে পড়ুয়াদের খাবার দেওয়া হচ্ছে কিনা দেখতে ২৪ থেকে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত সপ্তাহব্যপী পরিদর্শন অভিযান কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু শিক্ষক সংগঠনগুলি অভিযোগ তোলে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল খাওয়ানোর জন্য বরাদ্দ অর্থ দিয়ে ওই ‘মেনু’ মেনে খাবার দেওয়া কার্যত অসম্ভব। তাই পড়ুয়াদের পাতে ওই খাবার দেওয়ার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি তোলে শিক্ষক সংগঠনগুলি।
সেই সূত্র ধরে সোমবার পূর্ব বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সাত দিনে সাত রকমের মেনু। যা বরাদ্দ, তাতে এ সব আসবে কী করে ? আমি চাই (বাচ্চারা) ডাল-ভাত-তরকারিটা পেট ভরে খাক।’’ মিড-ডে মিলের ‘মেনু’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরে আশ্বস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শিক্ষক মহল। সোমবারই রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, মিড- ডে মিলের সাপ্তাহিক মেনু নির্দিষ্ট করে রাজ্য থেকে কোনও নির্দেশ জারি করা হয়নি। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ অর্থ দিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশিকা অনুযায়ী মেনু মেনে যে পড়ুয়াদের খাওয়ানো সম্ভব নয়, তা আমরা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী এবিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা খুশি। তবে আমরা চাই পড়ুয়াদের ভাল পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার জন্য সরকারি বরাদ্দ বাড়ানো হোক।’’
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাউ বলেন, ‘‘২২ আগস্ট জেলা প্রশাসনের তরফে মিড- ডে মিলের তালিকা দেওয়ার দু’দিন পরেই স্কুলে স্কুলে মিড- ডে মিল পরিদর্শন অভিযান শুরু হয়। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ অর্থে ওই মেনু মেনে পড়ুয়াদের খাওয়ানো সম্ভব নয় বুঝেই অধিকাংশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা উদ্বেগে পড়েন। বর্ধমানে এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে ও স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা প্রকাশের পরে সেই উদ্বেগ দূর হয়েছে। আমরা চাই জেলা প্রশাসনের তরফে তালিকা অনুযায়ী পড়ুয়াদের খাবার দেওয়া হোক। তবে সে জন্য পড়ুয়াদের মাথাপিছু ২০ টাকা বরাদ্দ করা হোক।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মিড-ডে মিলের মেনু তালিকা ঠিক করার দায়িত্ব স্কুলগুলির উপরেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে মিড-ডে মিল নিয়ে স্কুলগুলিতে গিয়ে প্রশাসনের নজরদারি চলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy