Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
TMC

‘কালেকশন করে পাঠালাম’, বিস্ফোরক তৃণমূলের নেতা

জেলা অফিস তৈরির জন্য শহরের রবীন্দ্রনগরে জমি কিনেছিল তৃণমূল। সেটা ২০১৩ সালে। প্রায় ২,৮০০ বর্গফুট জমি কেনা হয়েছিল। এই জমিতে দলের জেলা কার্যালয় তৈরির জন্য একবার চাঁদা তুলেছিল তৃণমূল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৪২
Share: Save:

ফের ভাইরালে অস্বস্তি।

‘‘আমরা কালেকশন করে পাঠালাম। পার্টি অফিস (দলের জেলা অফিস) কেন হচ্ছে না?’’, দলের কর্মিসভায় বিস্ফোরক এক তৃণমূল নেতা। তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরার জবাব, ‘‘যে সময়ে কালেকশন হয়েছিল, সে সময়ে আমি দলের জেলা সভাপতি ছিলাম না। ফলে, ওই সংক্রান্ত কোনও তথ্যই আমার কাছে নেই।’’

দলের কর্মিসভায় বিস্ফোরক মন্তব্য যিনি করেছেন, তাঁর নাম হাসিবুল খান। তিনি তৃণমূলের পাঁচখুরি- ২ অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি। পাঁচখুরি- ২ অঞ্চল মেদিনীপুর সদর ব্লকের অন্তর্গত। আর এই এলাকা খড়্গপুর গ্রামীণ বিধানসভার অন্তর্গত। দলের এক সূত্রে খবর, সোমবার পাঁচখুরিতে দলের এক কর্মিসভা হয়েছিল। ছিলেন দলের সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক ব্লক সভাপতি মুকুল সামন্ত। সেখানেই ওই মন্তব্য করেছেন হাসিবুল। কত টাকা কালেকশন করে জেলায় পাঠিয়েছিলেন? মঙ্গলবার হাসিবুলের জবাব, ‘‘সেই সময়ে চাঁদা কালেকশন হয়েছিল। যে টাকা উঠেছিল, তা জেলায় পাঠানো হয়েছিল। কত টাকা, সেটা মনে নেই!’’ সমাজমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিয়োয় একটি অংশে ওই তৃণমূল নেতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘পশ্চিমবাংলায় যতগুলি জেলা আছে, কোনও জায়গায় কি তৃণমূলের জেলা পার্টি অফিস নেই? না (শুধু) মেদিনীপুরে নেই? কেন মেদিনীপুরে পার্টি অফিস হবে না?’’ তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের পাঁচটা অঞ্চলকে দায়িত্ব দিয়ে যান মুকুলদা (মুকুল সামন্ত)। জায়গা দেখিয়ে দেন (কোথায় জেলা অফিস হবে)। আমরা ইট কালেকশন করব, আমরা সিমেন্ট কালেকশন করব, আমরা রড কালেকশন করব। এই পাঁচটা অঞ্চলের মানুষ, আমরা পার্টি অফিস তৈরি করব। কেন পার্টি অফিস থাকবে না (জেলায়)?’’

তৃণমূল নেতার বক্তব্য দলের অন্দরে শোরগোল ফেলেছে। সম্প্রতি দলের এক কর্মীর ফেসবুক পোস্টও শোরগোল ফেলেছিল। পোস্ট ছিল পার্টি অফিস সংক্রান্তই। বিস্ফোরক সব পোস্ট করেছিলেন তিনি। একটি পোস্টে লেখা ছিল, ‘তখন অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। জেলা পার্টি অফিস করার জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে তোলা হয়েছিল। সে টাকা কোথায় গেল, জবাব চাইছে সাধারণ কর্মীরা।’ বস্তুত, মেদিনীপুরে দলের জেলা অফিস তৈরির জন্য একাধিক দফায় যে টাকা সংগৃহীত হয়েছিল, তার কী হল, টাকা কোথায় রয়েছে, কার কাছে রয়েছে, এ প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরে আগেও উঠেছে। ফের নতুন করে উঠতে শুরু করেছে।

দলের জেলা অফিস তৈরির জন্য শহরের রবীন্দ্রনগরে জমি কিনেছিল তৃণমূল। সেটা ২০১৩ সালে। প্রায় ২,৮০০ বর্গফুট জমি কেনা হয়েছিল। এই জমিতে দলের জেলা কার্যালয় তৈরির জন্য একবার চাঁদা তুলেছিল তৃণমূল। একবার চাঁদা তুলেছিল যুব তৃণমূলও। সংগৃহীত সে সব চাঁদার না কি কোনও হিসাবই নেই! দলের এক সূত্রের দাবি, জমিটি কিনতে এবং দলিল করতে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা। জেলার সদর শহর মেদিনীপুর। মেদিনীপুরে প্রায় সব রাজনৈতিক দলেরই নিজস্ব জেলা অফিস রয়েছে। নেই তৃণমূলেরই! অথচ, জেলার বেশিরভাগ ব্লকে শাসক দলের নিজস্ব ব্লক অফিস রয়েছে। কোথাও কোথাও ঝাঁ চকচকে অফিসও রয়েছে। গত বছর রথের দিনে কেনা জমিতে ভিতপুজো হয়েছিল। পরে অবশ্য একটা ইটও গাঁথা হয়নি! জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘মনে হয় হিসাব তেলে- জলে মিশে গিয়েছে! এক- দু’জনের কাছে কিছুটা হিসাব থাকলেও থাকতে পারে। তবে নিশ্চিত নই, তাই নামটা বলছি না! নাম বললেই লঙ্কাকাণ্ড বাঁধতে পারে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Viral Video midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy