Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

আনাজ দোকানে অটো সারাই!

কোথাও দোকান বন্ধ। কোথাও অন্য ব্যবসা। কিসান মান্ডির উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে কি? ঘুরে দেখল আনন্দবাজারকাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের সরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত অযোধ্যাপুরে একটি কিসান মান্ডি রয়েছে।

দেশপ্রাণ ব্লকের কিসান মান্ডিতে অটো সারাইয়ের দোকান। নিজস্ব চিত্র

দেশপ্রাণ ব্লকের কিসান মান্ডিতে অটো সারাইয়ের দোকান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:২৩
Share: Save:

ফড়েদের দাপট কমিয়ে কৃষি পণ্য বিক্রিবাটায় কৃষকদের জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয়েছিল কিসান মান্ডি। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচে তৈরি সেই মান্ডিগুলির অধিকাংশতেই চাষিদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বিক্রয়ের পরিবর্তে চলছে অন্য কর্মযজ্ঞ। কোথাও বসেছে সেলুন, অটোরিকশা সারাইয়ের দোকান। আবার কোথাও মান্ডি সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল রাখার দোকান। কোথাও মান্ডির একাংশ চালু হলেও অধিকাংশ দোকানের বন্টনই হয়নি।

কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের সরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত অযোধ্যাপুরে একটি কিসান মান্ডি রয়েছে। কয়েক বছর আগে নির্মিত ওই মান্ডিতে খোলা বাজারের পাশাপাশি ২২টি বিপণন কেন্দ্র রয়েছে। ২২টির মধ্যে ১৫টি বিপণন কেন্দ্র কৃষকদের বিলি করা হয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। তার মধ্যে ৬-৭টি দোকান নিয়মিত খোলা থাকে বলেও দাবি। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা একেবারেই উল্টো।

সম্প্রতি ওই মান্ডিতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, প্রায় সবক’টি বিপণন কেন্দ্র বন্ধ অবস্থায় পড়ে। একটি মাত্র দোকান খোলা। সেখানে অটো সারানো হয় বলে জানালেন দোকানের এক কর্মী। বন্ধ দোকানগুলির মধ্যে সেলুনও রয়েছে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, মান্ডিতে আরও কয়েকটি দোকানে পাইকারি মজুতদারেরা বিভিন্ন রকমের সামগ্রী মজুত করে রাখেন। মান্ডির অবস্থা সম্পর্কে সরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাকেশ মাইতি বলেন, ‘‘জনবসতি এলাকা থেকে বেশ কিছুটা দূরে মান্ডি তৈরি হয়েছে। তাই চাষি এবং গ্রাহকদের ওই এলাকায় যেতে কিছুটা অনীহা রয়েছে। প্রশাসনিক কাজে কেউ পঞ্চায়েতে এলে তাঁদের মান্ডিতে গিয়ে জিনিসপত্রের লেনদেন করার পরামর্শ দিই।’’ দেশপ্রাণের বিডিও মনোজ মল্লিক অবশ্য বলছেন, ‘‘মান্ডি একসময় বন্ধ হতে বসেছিল। তবে লাগাতার প্রয়াস চালিয়ে কিছুটা হলেও স্বাভাবিক করতে পেরেছি। কিন্তু আশানুরূপভাবে মান্ডি চালু করতে পারিনি এখনও।’’

আবার ভগবানপুর-২ ব্লকের শক্তিয়া মৌজায় একটি কিসান মান্ডিতে খোলা আকাশের নীচে প্রায় দু’বছর ধরে সবুজ সাথীর বহু সাইকেল পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। মান্ডি তো পুরোদমে চালু হয়ইনি উল্টে তত্ত্বাবধানের অভাবে সাইকেলগুলির উপরে ধুলোর আস্তরণ পড়েছে। এ ব্যাপারে ভগবানপুর-২ এর বিডিও জয়দেব মণ্ডল বলেন, ‘‘নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। উপরন্তু সাইকেল এবং সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। পুনরায় আমরা এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’

প্রায় তিন বছর আগে পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার এলাকার ৬৪০ জন ফল ও আনাজ ব্যবসায়ীকে সরিয়ে আনার জন্য তৈরি হয়েছিল মান্ডি। সেখানেও বাজার চালুর বদলে ‘সবুজ সাথী’র সাইকেল মজুত রাখা হয় বলে অভিযোগ। তমলুক শহরের শহিদ মাতঙ্গিনী স্বদেশী মুখ্য বাজার চত্বরে কিষাণ মান্ডি তৈরি হয়েছে বছর খানেক আগে। দু’টি খোলা চত্বর–সহ ২২টি স্থায়ী দোকান রয়েছে সেখানে। মাস ছ’য়েক আগে খোলা চত্বরের একাংশে পান বাজার বসছে। কিন্তু ২২টি স্টলের ১৩টি এখনও বন্টন হয়নি বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রের খবর, তমলুক কিসান মান্ডি চত্বরে রেগুলেটেড মার্কেট কমিটিরও ২০০টি স্টল রয়েছে। দীর্ঘদিন পর তার একাংশ চালু হয়েছে। রেগুলেটেড মার্কেট এবং মান্ডি পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

কিসান মান্ডির অবস্থা জানতে ফোন করা হয়েছিল কৃষি বিপণন আধিকারিক মিতা সাহাকে। তবে তাঁর ফোন ছিল বন্ধ। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সমস্যা কাটিয়ে আমরা মান্ডিগুলো পুরোদমে চালুর চেষ্টা করছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kisan Mandi Vegetable Store
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy