পটাশপুরের দুলালপুর গ্রামে লক্ষণ বেরার বাড়িতে ভাঙচুর। ফেলে দেওয়া হয়েছে চাল (ডানদিকে)। নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পত্তি বিবাদের জেরে গ্রাম কমিটি সালিশি ডেকে জরিমানা করেছিল। জরিমানার টাকা না দেওয়ায় চার বছর চাষবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুক্রবার রাতে ফের সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম কমিটির নেতৃত্বে অভিযোগকারী ব্যক্তির বাড়িতে হামলা ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল।
পটাশপুরের দুলালপুর গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি সমর্থক লক্ষণ বেরার সঙ্গে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির যাতায়াতের রাস্তার জায়গা নিয়ে মারধর ও ঝগড়া হয়। চার বছর আগে ওই বিবাদ নিয়ে তৃণমূল প্রভাবিত গ্রাম কমিটির নেতৃত্বে সালিশি ডাকা হয়েছিল। সালিশি সভায় লক্ষণকে অভিযুক্ত করে গ্রাম কমিটি কয়েক হাজার টাকা জরিমানা করে। লক্ষণ জরিমানার টাকা দিতে অস্বীকার করায় গ্রাম কমিটির তরফে তাঁদের প্রায় দেড় বিঘা জমিতে চাষাবাদ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে লক্ষণের দাবি। এমনকী চাষ করতে গেলেও ফসলে ওষুধ ছিটিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে।
গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নাড়ুগোপাল সিংহ দু’পক্ষের বিবাদ মেটাতে উদ্যোগী হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। ঘটনায় পটাশপুর থানায় দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করে। কয়েক দিন আগে ফের গ্রাম কমিটি ও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের উপস্থিতিতে সালিশি সভা ডাকা হয়। সেখানে দু’পক্ষই সমস্যার সমাধানে সম্মত হয়। অভিযোগ, তারপর শুক্রবার সন্ধ্যায় পাড়ার দোকানে তাঁদের চাষাবাদ বন্ধ করা ও তার ক্ষতিপূরণ নিয়ে গ্রাম কমিটির সমালোচনা করেন লক্ষণ। এই নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে গ্রাম কমিটি। ঘটনা জানতে সন্ধ্যায় লক্ষণের বাড়িতে যান এক পঞ্চায়েত সদস্য। অভিযোগ, এই পঞ্চায়েত সদস্য চলে যাওয়ার কিছু পরেই গ্রাম কমিটির নেতৃত্বে জনা পনেরো লোক লক্ষণের বাড়িতে চড়াও হয়। লাঠি সোটা নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। মারধর করা হয় লক্ষণের বড় ছেলে ও স্ত্রীকে। মাটিতে ঢেলে দেওয়া হয় চাল। বেশি বাড়াবাড়ি করলে বাড়ি ছাড়া ও খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শনিবার সকালে আহত যুবককে গোনাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
যদিও তৃণমূল দাবি করেছে, এই ঘটনায় সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। বিষয়টি গ্রাম্য বিবাদ বলে তারা জানিয়েছে। যদিও আক্রান্ত ছবি বেরা (লক্ষণের স্ত্রী) বলেন, ‘‘চার বছর আগে জায়গা নিয়ে আমাদের সঙ্গে প্রতিবেশীদের ঝামেলা হয়। তখন গ্রাম কমিটি আমাদের জরিমানা করে। টাকা না দেওয়ায় তারা আমাদের জমিতে চাষবাস বন্ধ করে রেখেছে। শুক্রবার রাতে গ্রাম কমিটি-সহ পনেরো-কুড়িজন লোক এসে বাড়িতে ভাঙচুর ও আমাদের মারধর করে। ঘরের চাল মাটিতে ছড়িয়ে দেয়। বাড়াবাড়ি করলে বাড়ি ছাড়া ও খুনের হুমকিও দিয়েছে। আতঙ্কে আমাদের দিন কাটছে।’’
পঞ্চায়েত সদস্য নাড়ুগোপাল বলেন, ‘‘কেন গ্রাম কমিটিকে গালিগালাজ করেছিল ওই পরিবার তা জানতে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমি চলে আসার পর শুনছি এই ঘটনা ঘটেছে। এটা সম্পূর্ণ গ্রাম্য সমস্যা। এখানে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
দুলালপুর গ্রাম কমিটি ও ক্লাবের সভাপতি সুকুমার পাত্র বলেন, ‘‘গ্রাম ও ক্লাব কমিটির সভাপতি হিসেবে আমরা দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেছিলাম। গ্রামের কথা অমান্য করায় হয়তো চাষবাস বন্ধ করা হয়েছে। তবে শুক্রবার একটা সমস্যা থেকে উত্তেজিত কিছু যুবক তাদের বাড়িতে চড়াও হলেও ভাঙচুর হয়নি বলে শুনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy