মুক্তি: শেখ মুস্তাক ও শেখ সিরাজ। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরণ! নেশা ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফিরলেন দুই যুবক। ৮- ৯ বছর ধরে নেশা করেছেন। পরে পুলিশের উদ্যোগে ভর্তি হয়েছিলেন এক নেশা নিরাময় কেন্দ্রে। মাস পাঁচেকের চিকিৎসা শেষে, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে সোমবার ওই কেন্দ্র থেকে ছাড়া পেলেন দুই যুবক শেখ মুস্তাক এবং শেখ সিরাজ। ছাড়া পেয়েই তাঁরা সোজা চলে গেলেন মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায়।
আর ফেলে আসা জীবনের কথা মনে রাখতে চান না ওই দুই যুবক। মুস্তাক বলছিলেন, ‘‘অনেক নেশা করেছি। এতদিনে নেশা থেকে মুক্ত হলাম। পুলিশকে ধন্যবাদ। পুলিশই মূলস্রোতে ফেরার এই সুযোগ করে দিয়েছে।’’ আর সিরাজের কথায়, ‘‘আর নেশা করব না। পুরনো দিনের কথা মনেও রাখতে চাই না। এ বার আমি ভাল ভাবে বাঁচতে চাই।’’ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক হীরক বিশ্বাস বলছিলেন, ‘‘ওরা ভালভাবে থাকুক। এটাই চাই।’’
মুস্তাকের বাড়ি শহরের পানপাড়ায়। একটি গ্যাসের গোডাউনে কাজ করতেন। সিরাজের বাড়ি শহরের পালবাড়িতে। কাঠ পালিশের কাজ করতেন। ফের দুই যুবকই কাজে ফিরতে চান। ছেলেকে ‘সুস্থ’ দেখে খুশি মুস্তাকের বাবা শেখ সামসুদ্দিন। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে অনেক দিন ধরেই নেশা করত। কত লোক কত কথা বলত। এখন ও একেবারে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। দেখে খুব ভাল লাগছে।’’ মাস পাঁচেক আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মাদকাসক্তদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরাতে পুলিশের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল নতুন কর্মসূচি ‘উত্তরণ’। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার কথায়, ‘‘সমাজের প্রতি পুলিশের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে এই কর্মসূচির মাধ্যমে তা পূরণ হবে বলেই আমরা আশাবাদী।’’ এই কর্মসূচির মাধ্যমে মাদকাসক্তদের নেশা নিবারণ কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসার খরচ বহন করেন শহরের কিছু বিশিষ্ট মানুষজন। এ নিয়ে পুলিশের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে ।
পুলিশের এক সূত্র জানাচ্ছে, মাত্র ৩ শতাংশ মাদকাসক্ত মূলস্রোতে ফেরে। শুরুর দিকে চিকিৎসা হলেই তা সম্ভব। শেখ মুস্তাক, শেখ সিরাজের কথায়, ‘‘এই পাঁচ মাস যেখানে ছিলাম, সেখানে খুব ভালভাবে ছিলাম। অনেক কিছু শিখেছি। প্রার্থনা হত। ধ্যান হত। কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ, শেখানো হত। এ বার ভালভাবেই থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy