Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

সকালে গ্রামে ‘দিদির দূত’, বেলায় হাজির কেন্দ্রীয় দল

এ দিন গড়বেতা ৩ অর্থাৎ চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের কড়সা পঞ্চায়েত এলাকায় আবাসের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আসেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য।

তৃণমূলের  পঞ্চায়েত সদস্য ভাস্কর ঘোষের বাড়িতে কেন্দ্রীয় দল। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ভাস্কর ঘোষের বাড়িতে কেন্দ্রীয় দল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দ্রকোনা রোড শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৮
Share: Save:

সকালে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচিতে গ্রামে হাজির ‘দিদির দূত’ মন্ত্রী। আর বেলা গড়াতেই সেই গ্রামে আবাস যোজনায় দুর্নীতির নালিশ যাচাইয়ে এল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। দলের কর্মসূচিতে যিনি ছিলেন হাসিখুশি, সেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য নিজের স্ত্রীর নাম আবাস তালিকায় থাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের প্রশ্নের উত্তর দিতে রীতিমতো থতমত খেলেন। শনিবার গড়বেতার কাদড়া গ্রাম সাক্ষী থাকল দুই দূতের যুগলবন্দির।

এ দিন গড়বেতা ৩ অর্থাৎ চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের কড়সা পঞ্চায়েত এলাকায় আবাসের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আসেন কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য। এ দিনই এই পঞ্চায়েত এলাকায় ছিল তৃণমূলের 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচি। সকাল থেকেই জনসংযোগ সারেন 'দিদির দূত' মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। সকালেই কাদড়া গ্রামে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। আর বেলা ১০ টা নাগাদ চন্দ্রকোনা রোড বিডিও অফিসে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। সেখানে মিনিট কুড়ি থাকার পর তাঁরা সোজা কড়সা পঞ্চায়েত অফিসে আসেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদ) পিনাকীরঞ্জন প্রধান ও বিডিও অমিতাভ বিশ্বাসের থেকে আবাসের তালিকা সংক্রান্ত কিছু তথ্য জেনে নেন। পঞ্চায়েত অফিসে কিছুক্ষণ আলোচনাও সারেন।

কেন্দ্রীয় দল এসেছে জেনে বেলা ১১ টা নাগাদ কড়সার অনেকেই পঞ্চায়েত অফিসে জড়ো হন। আবাস নিয়ে অভিযোগ, সাদা কাগজে লেখা আবেদনপত্র নিয়েও হাজির হন কেউ পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে মহম্মদ আলি মণ্ডল, এসাহক খান, প্রতিবন্ধী আরেদ আলি খানরা বলেন, ‘‘আমাদের মাটির ভাঙাচোরা বাড়ি। অথচ আবাসের তালিকায় নাম নেই। যাঁদের পাকাবাড়ি আছে, তাঁদেরই নাম আছে। এটাই বলব কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের।’’ যদিও সেই আশা পূরণ হয়নি। হাতে লেখা দরখাস্ত আরমান খান, আসাজুল মোল্লারাও যথাস্থানে দিতে পারেননি। কড়সা পঞ্চায়েত অফিস থেকে গাড়িতে উঠে কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য কাদড়া রওনা দেন।

পৌনে ১২ টা নাগাদ তাঁরা যখন কাদড়া গ্রামে ঢুকছেন, তার বেশ কিছুক্ষণ আগেই গ্রাম ছাড়েন 'দিদির দূত' মন্ত্রী শ্রীকান্ত। গ্রামে ঢুকতেই কয়েকজন মহিলা আবাস তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় দলকে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা প্রথমে যান কৃষক তরুণ ঘোষের বাড়িতে। আবাস তালিকায় নাম আছে তাঁর। অথচ তাঁর বাড়ি পাকা বলে অভিযোগ। অতিরিক্ত জেলাশাসক ও বিডিওর কেন্দ্রীয় দল তরুণের বাড়ির চুনের প্রলেপ দেওয়া দেওয়াল হাত দিয়ে ঠুকে ঠুকে দেখেন। দেখেন রান্নাঘরও। পরে তরুণের জবকার্ড এনে নম্বর মিলিয়ে দেখেন। কথা বলেন তরুণের স্ত্রী, মা, দাদা, বৌদির সঙ্গেও। পরে তাঁরা যান গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ভাস্কর ঘোষের বাড়িতে। যিনি সকালে 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচিতে হাসিখুশি ছিলেন, সেই ভাস্করের স্ত্রী বর্ণালির নাম আবাস তালিকা আছে। অথচ তাঁর নতুন বাড়ি হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা জানতে চাইলে ভাস্কর বলেন, ‘‘মাটির বাড়ির অবস্থা ভাল নয়, তাই এই বাড়িটা করছি খুব কষ্ট করে।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা পাল্টা বলেন, ‘‘আপনার স্ত্রী তো ২০১৫-১৬ বছরে ইন্দিরা আবাস পেয়েছেন?’’ এ বার থতমত খেয়ে ভাস্করের উত্তর, ‘‘না, হ্যাঁ, পেয়েছে, কিন্তু টাকা পাইনি।’’ পরক্ষণেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বই দেখতে চান কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। সব দেখে ডায়েরিতে লিখে নেন তাঁরা।পরে ভাস্কর বলেন, ‘‘আমি সব সত্যিই বলেছি।’’ ফেরার পথে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা কড়সা অঞ্চলেরই শনপুর গ্রামে যান। আবাসের তালিকায় নাম থাকা প্রদীপ সিংহের বাড়িতে যান তাঁরা। প্রদীপ না থাকায় তাঁর মা ঊষা সিংহের সঙ্গে কথা বলে ফিরে যায় কেন্দ্রীয় দল।

একই দিনে তৃণমূলের কর্মসূচি ও কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শন নিয়ে গ্রামবাসী খানিক সংশয়ে। তবে মন্ত্রী শ্রীকান্ত বলেন, ‘‘পুরোটাই কাকতালীয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Awas Yojana Chandrakona Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy