Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Abhishek In Midnapore

আবারও কি ইস্তফা-দাওয়াই

কেশপুরে অভিষেকের সভার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, সভাস্থলে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা থাকছে।

অভিষেকের সভার প্রচারে মেদিনীপুর শহর তৃণমূলের মিছিল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

অভিষেকের সভার প্রচারে মেদিনীপুর শহর তৃণমূলের মিছিল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:১৪
Share: Save:

কেশপুরে আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কাল, শনিবার আনন্দপুরে তাঁর জনসভা। এই জেলাতেও কি কেউ ‘কোপে’ পড়তে পারেন— জল্পনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেই। দলের স্থানীয় এক নেতা মানছেন, ‘‘টেনশনে আছি। দল কাউকে ইস্তফার নির্দেশ দিলে তো দিতেই হবে।’’

তৃণমূলেরই একাংশ এ প্রসঙ্গে মনে করাচ্ছেন অভিষেকের সাম্প্রতিক দুই জনসভার কথা। একটি হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে, আরেকটি নদিয়ার রানাঘাটে। এলাকাবাসীর থেকে অভিযোগ পেয়ে কাঁথির সভা থেকে মারিশদার এক পঞ্চায়েত প্রধান, এক উপপ্রধান এবং দলের এক অঞ্চল সভাপতিকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক। সভা থেকে তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল, ‘‘মানুষের জন্য যদি এই কাজগুলি না করতে পারি, তাহলে রাজনীতি করে লাভ নেই। আমি পরিষ্কার বলছি, প্রধান, উপপ্রধান, অঞ্চল সভাপতি পদত্যাগ করবেন। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আমার টেবিলে পদত্যাগপত্র পৌঁছে যায় যেন।’’

পরে রানাঘাটের সভা থেকেও তাতলা- ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক। ওই প্রধান চার বছর ধরে এলাকায় যাননি বলে অভিযোগ ছিল। সেই সভায় অভিষেকের বার্তা ছিল, ‘‘এটাই নতুন তৃণমূল। ২০২১ সালে যারা দলের সঙ্গে গদ্দারি করেছে, সব হিসেব আমার কাছে আছে। কড়ায় গন্ডায় চোকাতে হবে।’’তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘প্রধানের দেখা নেই। চার বছর হয়ে গেল। তিনি প্রধান থাকবেন কেন? মানুষ সার্টিফিকেট দেননি, মানুষের জন্য আপনি কাজ করেননি, আপনার প্রধানের চেয়ারে বসার কোনও অধিকার নেই।’’

এ বার কেশপুরে আসছেন অভিষেক। ‘ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেবেন’— সভাস্থল থেকে এমন নির্দেশ শুনতে হবে কি না, সেই ভয় চেপে বসেছে তৃণমূলের একাংশ নেতার মধ্যে। একাধিক মহলের অনুমান, সভা থেকে পুলিশের উপর নির্ভরতা কমানোর বার্তা দিতে পারেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে যে ভাবে পুলিশ- প্রশাসনের সাহায্য ছাড়াই তৃণমূল নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছিল, সেই ভাবেই বিজেপি, সিপিএমের মোকাবিলায় ঝাঁপানোর নির্দেশ দিতে পারেন তাঁরা।

সাম্প্রতিক কালে আনন্দপুরের গণধর্ষণের একটি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে ভর্ৎসিত হয়েছে পুলিশ। এ ক্ষেত্রে নির্যাতিতা নিজে থানায় গেলেও শুরুতে তাঁর অভিযোগ পুলিশ নেয়নি বলেইঅভিযোগ। পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা। ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজি- র রিপোর্ট তলব করেছিল হাই কোর্ট। সেই প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতৃত্ব কিছু বার্তা দিতেই পারেন, এমন সম্ভাবনা রয়েছে।

কেশপুরে অভিষেকের সভার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, সভাস্থলে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা থাকছে। তবে সব ঠিকঠাক থাকলে সড়কপথেই কেশপুরে পৌঁছবেন অভিষেক। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় একটি রাস্তা মেরামতও শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অনেকের অনুমান, অভিষেক যদি সড়কপথে কেশপুরে যান, তাহলে তিনি একটি গ্রাম পরিদর্শনও করতে পারেন।

জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এখনই কিছু বলতে নারাজ। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি শুধু বলেন, ‘‘আনন্দপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা হবে। এটা আমাদের কাছে সুন্দর উপহার। এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।’’ অভিষেক কি কোনও গ্রামে যেতে পারেন? জেলা তৃণমূলের এক নেতা শোনাচ্ছেন, ‘‘পূর্ব নির্ধারিত কিছু নেই। আসার পথে কী করবেন, সেটা পুরোপুরি অভিষেকের ব্যাপার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

midnapore Abhishek Banerjee TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy