Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Amphan

রাখির সম্প্রীতির আবহেও দুর্নীতি নিয়ে সরব তৃণমূল নেতা

আবু তাহেরের আরও অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রধান তাঁর বাপের বাড়ির সদস্যদের নামের তালিকা দিয়ে সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে গিয়েছেন। ”

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৭:৩৩
Share: Save:

‘আমপানে যত না ক্ষতি হয়েছে, তার তুলনায় দল এবং প্রশাসনের দায়িত্বে যারা ছিল তারা বেশি ক্ষতি করেছে’।

নন্দীগ্রামে আয়োজিত দলীয় কর্মসূচিতে প্রকাশ্যেই এমন মন্তব্য করলেন নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও তৃণমূল নেতা আবু তাহের। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে অন্যতম তথা শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠের মুখে এ ভাবে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সোমবার ছিল রাখিবন্ধন উৎসব। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কেন্দেমারি জলপাই পঞ্চায়েত অফিসের পাশে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্যোগে রাখি বন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানেই সৌভ্রাতৃত্ব আর সম্প্রীতির এমন উৎসবের আবহেও আবু হারের এ ভাবে বিষোদ্গার অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলে।

আবু তাহেরের আরও অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রধান তাঁর বাপের বাড়ির সদস্যদের নামের তালিকা দিয়ে সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে গিয়েছেন। অথচ ঘূর্ণিঝড়ে যাঁদের বাড়িঘর ভেঙেছে তাঁরা কেউ পাননি।’’ আমপান ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ গোড়া থেকে বিরোধীরা করে আসছে। কিন্তু এ বার দলের পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং তাও আবার উঠল সেই নন্দীগ্রামে। যেখান থেকে একদা জেলা তথা রাজ্যে শুরু হয়েছিল তৃণমূলের জয়যাত্রা। সাম্প্রতিক তৃণমূলে সাংগঠনিক রদবদলে বিধায়ক ও রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা চলছে, সে সময় তাঁরই বিধানসভা এলাকার এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার মুখে এমন বক্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনীতিক মহল।

আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে নন্দীগ্রামে। শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে একাধিক স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। যার প্রেক্ষিতে দলীয়ভাবে বহু নেতাকে শোকজ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনকী কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনসুরা বেগমকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেয় দলের ব্লক নেতৃত্ব। তিনি পদত্যাগও করেন। ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব দেয় ব্লক প্রশাসন। যিনি আবু তাহের গোষ্ঠীর সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত।

তবে তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ নেতার মুখে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে স্বীকার করার ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি (তমলুক) নবারুণ নায়ক বলেন, ‘‘রাখিবন্ধন সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি, সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। কিন্তু সেখানেও পারস্পরিক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারে না তৃণমূল। আসলে এটাই ওদের সংস্কৃতি। আর নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা সেটাই করে দেখিয়েছেন।’’

যদিও শাসক দলের তরফে দাবি, এ ধরনের কোনও ঘটনা তাদের কানে আসেনি। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘আব তাহের কি বলেছেন তা জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান দলের নির্দেশ মেনে পদত্যাগ করেছেন।’’ আর তাহেরের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধানের স্বামী ও তৃণমূল নেতা শেখ শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘‘মনসুরা শারীরিক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ। তাই পঞ্চায়েতের প্রধান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। আর্থিক দুর্নীতি প্রসঙ্গে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Amphan Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy