Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
বিজেপির বিক্ষোভে ভাঙচুর পুলিশের গাড়িও

দুর্নীতি, বেধড়ক মার তৃণমূল উপপ্রধানকে

এ দিন ঘটনাটি ঘটেছে পটাশপুর-১ ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ওই পঞ্চায়েতে প্রধান ছিলেন এ দিনের আক্রান্ত তৃণমূল নেতা প্রভুরাম দাস।

উপপ্রধানকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

উপপ্রধানকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:২২
Share: Save:

এতদিন সীমাবদ্ধ ছিল পোস্টার আর ব্যানারে। এক লাফে সেই ‘সীমা’ পার হল সোমবার। আর্থিক দুর্নীতি এবং কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে তৃণমূলের উপ-প্রধানকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল। ভাঙচুর করা হল পুলিশের গাড়িতেও। ঘটনায় অভিযোগের তির বিজেপি’র দিকে।

এ দিন ঘটনাটি ঘটেছে পটাশপুর-১ ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ওই পঞ্চায়েতে প্রধান ছিলেন এ দিনের আক্রান্ত তৃণমূল নেতা প্রভুরাম দাস। বর্তমানে প্রভুরাম ওই পঞ্চায়েতের উপ প্রধান। বিজেপির অভিযোগ, প্রধান পদে থাকাকালীন প্রভুরাম লক্ষ লক্ষ টাকার আর্থিক দুর্নীতি করেছেন, কাটমানি নিয়েছেন।

কাটমানি, আর্থিক দুর্নীতি-সহ একাধিক দাবিতে সোমবার গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকেরা। এলাকায় মোতায়েন ছিল পটাশপুর থানার প্রচুর পুলিশ। সকাল ১১টা নাগাদ উপপ্রধান প্রভুরাম এবং দু’তিনজন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে এলে তৃণমূল এবং বিজেপি’র মধ্যে বচসা হয়। অভিযোগ, তৃণমূলের এক ব্যক্তি বিজেপির কর্মীদের উদ্দেশে কটূক্তি করেন। এর পরেই এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। বিজেপি কর্মী এবং ক্ষিপ্ত জনতা তৃণমূল নেতাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। মাটিতে ফেলে কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে মারধর করা হয়।

জনতার রোষ থেকে রেহাই পাননি উপপ্রধানও। সিভিক ভলান্টিয়ারেরা তাঁকে আড়াল করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে ক্ষিপ্ত জনতা প্রভুরামকে কেড়ে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। জামা ছিঁড়ে যায় উপ প্রধানের। পরে পটাশপুর থানার বিশাল পুলিশ উপ প্রধানকে উদ্ধার করে এলাকা থেকে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। অভিযোগ, সে সময় পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। এসডিপিও নেতৃত্বে র‍্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে। তাঁরা এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত।

আহত প্রভুরাম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়ার সময় বিজেপির দুষ্কৃতীরা রড, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি দিয়ে আমায় মারধর করে। স্থানীয় মানুষ এবং পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’ পটাশপুর-১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি তাপস মাজি বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি এলাকায় উন্নয়ন স্তব্ধ করে জঙ্গলের রাজত্ব আনতে চাইছে। এ দিন প্রভুরাম ছড়া আরও দুজন আহত হয়েছেন।’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকাবাসীর উপর তৃণমূলের উপ প্রধান অত্যাচার চালাতেন। এলাকার মানুষ তাঁকে শাস্তি দিয়েছেন। বিজেপি জড়িত নয়।’’

উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে এলাকায় বিজেপি’র ক্ষমতা বাড়ছে। উপপ্রধান এক সময় অভিযোগও করেছিলেন যে, বিজেপি’র হুমকির ভয়ে বেশ কয়েকমাস ঘর ছাড়া। দাবি একাধিক বার পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে গেলেও তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পিছু হটতে হয় উপ প্রধানকে। গত ১৬ অগস্ট প্রভুরামের নেতৃত্বে পঞ্চায়েতে অফির ভিতরেসে যান প্রধান-সহ সকল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। এর পরেই পঞ্চায়েত প্রধান বাসুদেব সানা গত সপ্তাহে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বেশ কয়েক মাসের ছুটিতে যান। তাঁর দায়িত্বে ছিলেন উপ প্রধান। এ মধ্যেই এ দিন এই ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে এগরার এসডিপিও শেখ আখতার আলি বলেন, ‘‘ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। নতুন করে অশান্তি এড়াতে এলাকায় পুলিশ টহল এবং রুট মার্চ চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Leader Beaten Patashpur Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy