বিদ্যুৎ ঘোষের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগপত্র নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর মৌ রায়। নিজস্ব চিত্র
কাটমানি ফেরত দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার মেদিনীপুর পুরসভার এক বিদায়ী কাউন্সিলর জানালেন, এ কথা বলে তাঁদের মতো মানুষকে বিপদেই ফেলেছেন নেত্রী।
বিদায়ী ওই তৃণমূল কাউন্সিলর মৌ রায় এক ধাপ এগিয়ে সরাসরি বিঁধেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। বলেছেন, ‘‘দিদি যদি মনে করে থাকেন তিনি একাই সৎ, তা হলে ভুল করছেন। আমাদের মতো কিছু মানুষও (সৎ) রয়েছেন। যাঁরা বিপদে পড়ছেন।’’
কাটমানি নিয়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌ-এর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ ঘোষ। এরপরই বিপদের আশঙ্কায় মৌ। তাঁর কথায়, ‘‘দিদি কিন্তু এটা বলে (কাটমানি ফেরত) আমাদের মতো মানুষদের খুব বিপদে ফেলেছেন। হঠাৎ হঠাৎ এ এসে, ও এসে বলবেন কাটমানি ফেরত দাও।’’
বিদ্যুতের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ করেছেন মৌ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার বিকেলে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা বিদ্যুৎ কাউন্সিলরকে ফোন করে টাকা ফেরত চান। বিদ্যুতের অভিযোগ, বছর দুয়েক আগে তাঁর বাড়ি তৈরির সময় মৌ লোকজনকে নিয়ে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে রফা হয়। দু’দফায় মৌ-কে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ বিদ্যুতের। তাঁর কথায়, ‘‘এখন মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরত দিতে বলেছেন। সে জন্যই আমি ফোন করে কাটমানি ফেরত চেয়েছি।’’ ফোন পেয়ে বিদ্যুতের বাড়িতে হাজির হন মৌ। বিদ্যুতের অভিযোগ, বাড়ি গিয়ে হেনস্থা করেছেন কাউন্সিলর। কাটমানির অভিযোগ অস্বীকার করে মৌ বলেন, ‘‘কী টাকা নিয়েছি সেটা জানতে স্থানীয় কয়েকজন প্রবীণ মানুষকে নিয়ে গিয়েছিলাম।’’ বিদ্যুতের দাবি, তিনি এক দফায় টাকা দিয়েছিলেন চেকে। আর এক দফায় নগদে। মৌ-এর দাবি, ‘‘ওই ব্যক্তি কাকে চেক দিয়েছেন? কে চেক নিয়েছেন? আমি তো নিইনি। পুলিশ তথ্যপ্রমাণ চেয়েছে। কিন্তু উনি দিতে পারেননি।’’
এখানেই সমস্যা না মেটায় বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। থানা চত্বরেই মৌ বলেন, ‘‘চরম সঙ্কটে আমরা। আতঙ্কেও রয়েছি।’’
শুধু বিদায়ী কাউন্সিলরই নন, মৌ মহিলা তৃণমূলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি। দলীয় পদে থেকে দলনেত্রীর সম্পর্কে এ হেন মন্তব্যে ‘অস্বস্তি’তে পড়েছে শাসক দল। তৃণমূলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলের কারও নেত্রীকে নিয়ে কোনও মন্তব্য না করাই উচিত।’’ তবে মৌ-এর নামে যে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা জানাতে ভোলেননি বিশ্বনাথ।
ইতিমধ্যেই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর রোকেয়া খাতুনের বাড়ির সামনে কাটমানি ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সরকারি বাড়ি প্রকল্পের উপভোক্তারা। ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর নির্মাল্য চক্রবর্তীর নামে কাটমানি ফেরত চেয়ে ফ্লেক্স পড়েছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী নির্দল কাউন্সিলর বিশ্বেশ্বর নায়েক আবার আগাম ঘোষণা করেছেন, তিনি কোনও উপভোক্তার কাছ থেকে এক টাকাও নেননি। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ হওয়ার পরই নেত্রীর দিকেই আঙুল তুললেন মৌ।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy