ঘটনাস্থলে পুলিশের তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র
মহালয়া আর বিশ্বকর্মা পুজোর উৎসবে যখন সবাই মাতোয়ারা, ঠিক তখনই বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল পাঁশকুড়ার ঘোষপুর এলাকায়। ঘটনাস্থলে সিআইডির বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড গিয়ে সন্দেহজনক বস্তুটিকে কংসাবতীর নদীর চরে নিষ্ক্রিয় করে। তবে সেটি আদৌ বোমা ছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট করেনি পুলিশ। স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শেরহাটি বাজারে কার্তিক গাঁতাইত নামে এক ব্যক্তির ইমারতি সামগ্রীর দোকান রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে দোকানে ছিলেন কার্তিকের ছেলে রজত। কার্তিক বলেন, ‘‘এদিন সকাল ৯টা নাগাদ আমার ছেলের মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। তাতে বলা হয়, দোকানে টাইম বোমা রাখা আছে। গোটা দোকান উড়িয়ে দেওয়া হবে।’’ মেসেজটি দেখার পর কার্তিক এবং তাঁর ছেলে রজত দোকানের গুদাম ঘরে গিয়ে দেখেন পলিথিনের বস্তা চাপা অবস্থায় একটি বড় ট্রে’র উপরে দু’টি বস্তু রাখা রয়েছে। সিনেমায় যে রকম টাইম বোমা দেখানো হয়, সে রকমই দেখতে ওই বস্তুটির গায়ে অনেক বিদ্যুতের তার এবং দুটি ইলেকট্রিক সার্কিট রয়েছে। সার্কিটগুলির সঙ্গে অনেকগুলি তার আবার একটি ব্যাটারির সঙ্গে জোড়া ছিল। ট্রে’টিতে আলোও জ্বলছিল বলে দাবি।
ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। খবর দেওয়া হয় পাঁশকুড়া থানায়। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ এবং দমকলের একটি ইঞ্জিন প্রথমে ঘটনাস্থলে যায়। পরে যান তমলুকের এসডিপিও, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পাঁশকুড়ার বিডিও এবং এলাকার জন প্রতিনিধিরা। গোটা এলাকা দ্রুত ঘিরে ফেলা হয়। সন্দেহজনক বস্তুুটি সাধারণ বোমার মতো দেখতে না হওয়ায় সিআইডি’র বম্ব স্কোয়াডে খবর দেওয়া হয়। বিকেলে ওই এলাকায় যায় বম্ব স্কোয়াড। আনা হয় স্নিফার ডগও। তাঁরা খালি করে দেন শেরহাটি বাজার-সহ আশপাশের গোটা এলাকা। বম্ব স্কোয়াডের সদস্যেরা সন্দেহভাজন বস্তুটিকে দোকান্ডা এলাকায় কংসাবতী নদীর চরে নিয়ে যান। সেখানে গর্ত খুঁড়ে বস্তুটিকে ঢুকিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
কিন্তু কীভাবে দোকানের গুদামে এল ওই সন্দেহজনক বস্তুটি? দোকানের মালিক কার্তিক বলছেন, ‘‘এদিন এক যুবক দোকানে সামগ্রী কিনতে আসেন। দোকানের কর্মচারীর পিছনে তিনিও গুদাম ঘরে যান। সম্ভবত ওই যুবকই বস্তুটি রেখে গিয়েছেন।’’ দোকানের মালিকের ছেলে রজত এবং ওই ক্রেতা যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
সন্দেহজনক বস্তুটি কি সত্যিকারের বোমা ছিল?
তমলুকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম হাসান বলেন, ‘‘সিআইডির বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড নিয়ম অনুযায়ী ওই সন্দেহজনক বস্তুটিকে নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে সেটি আদৌ বোমা ছিল কি না, তা জানার জন্য নমুনা ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে।’’ তবে পাঁশকুড়া শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে একটি প্রত্যন্ত এলাকায় এই ধরনের সন্দেহজনক বস্তু উদ্ধার হওয়ায় যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন মালিক বলেন, ‘‘বিষয়টি সত্যি আতঙ্কের। পুলিশ তদন্ত করছে। আশা করছি শীঘ্রই আসল তথ্য সামনে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy