সামনের কাঠের দরজার একাংশ এবং তালা ভাঙা।
পুজোর ছুটিতে চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে গিয়েছেন শিক্ষক দম্পতি। সেই সুযোগে বাড়ির দরজা ভেঙে লুটপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। খাস জেলা সদরের পদুমবসান এলাকায় শুক্রবার সকালে ওই ঘটনা সামনে আসার পরে নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, তমলুক পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে পদুমবসান হারাধন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পাঁচ বছর আগে বাড়ি তৈরি করেছেন কোলাঘাটের শুলনী হাইস্কুলের শিক্ষক অজিতকুমার মণ্ডল। অজিতের স্ত্রী শিবানী মালাকার মণ্ডল হারাধন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। পুজোর ছুটির ফাঁকে গত ২২ অক্টোবর অজিতের চিকিৎসার জন্য তাঁরা সপরিবার চেন্নাই চলে যান। ৩০ অক্টোবর সেখানে অজিতের অস্ত্রোপচার হয়। আগামী বুধবার ফের চিকিৎসকে দেখানোর পর বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু তাঁর আগেই এ দিন তাঁদের বাড়িতে চুরির ঘটনা সামনে এসেছে।
এ দিন অজিতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সামনের কাঠের দরজার একাংশ এবং তালা ভাঙা। বাড়ির পিছনের দিকের দরজার তালাও ভাঙা। ভিতরে দু’টি ঘরের আসবাবপত্র, বিছানা, রান্না ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র লন্ডভন্ড অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এমনকী, চাল ও মুড়িও মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে। অভিযোগ, চুরি করা হয়েছে লক্ষাধিক টাকা ও গয়না।
চুরি চরিত
গত কয়েক বছরে চুরি
২০১৬-র অক্টোবরে এক চিকিৎসক, এক ইঞ্জিনিয়ার ও এক ব্যাঙ্ককর্তা-সহ ৫ জনের বাড়িতে চুরি হয়।
২০১৭-র জানুয়ারিতে বাদামতলা এলাকায় এক ব্যাঙ্ক অফিসারের বাড়িতে
২০১৮-র জুলাইয়ে তমলুক শহর সংলগ্ন নিশ্চিন্তবসান এলাকায় এক ব্যাঙ্ককর্মীর বাড়িতে।
ফাঁকা বাড়িতে চুরি রুখতে পুলিশের নির্দেশিকা
কোনও কাজে বাড়ি ছেড়ে কয়েক দিন বাইরে থাকতে হলে তা স্থানীয় থানায় জানানো
বাড়িতে বেশি টাকা ও গয়না রাখা উচিত নয়
বাইরে গেলে বাড়িতে কেয়ারটেকার বা বিশ্বস্ত কাউকে রাখার ব্যবস্থা
বাড়ির দরজার ভিতরের দিকে তালাচাবি লাগানোর ব্যবস্থা করা।
চুরির ব্যাপারে ফোনে শিবানী বলেন, ‘‘আলমারিতে বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না এবং কয়েক হাজার নগদ টাকা রাখা ছিল। সমস্ত কিছু চুরি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তারপরে বাড়িতেও চুরির ঘটনার জেরে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমরা চাই পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের ধরুক।’’
যে এলাকায় অজিতদের বাড়িটি রয়েছে, তার আশেপাশে কয়েকটি নির্মীয়মাণ বাড়ি রয়েছে। সেগুলিতে কেউ না থাকার সুযোগে দুষ্কৃতীরা বিনা বাধায় দরজা ভেঙে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। দুষ্কৃতীরা দীর্ঘক্ষণ ধরে ঘরের ভিতরে ছিল বলে পুলিশের অনুমান। উল্লেখ্য, বছর তিনেক আগে দুর্গাপুজোর সময় মাত্র তিনদিনের মধ্যে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাঁচটি বাড়িতে বড়সড় চুরির ঘটনায় শহরে আলোড়ন পড়েছিল। ফের এ ধরনের চুরির ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে বাসিন্দাদের। পদুমবসান এলাকার বাসিন্দা দুলাল ভুঁইয়া বলেন, ‘‘বাড়িতে তালা দিয়ে বিভিন্ন কাজে বাইরে যেতে হয়। সেই সুযোগে যদি এভাবে চুরি হয়, তা তো চিন্তার বিষয়। নিরাপত্তার জন্য পুলিশের আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ দত্তের কথায়, ‘‘এখানে চুরির ঘটনা তেমন ঘটে না। তবে এলাকায় পুলিশের টহলদারির জন্য বলেছি।’’
চুরির প্রসঙ্গে তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ফাঁকা বাড়িতে চুরির চেষ্টার অভিযোগে গত বুধবার রাতে শহরে দুজন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। হলদিয়ার বাসিন্দা ওই দুজনকে জেরা করে চোরাই সোনা রাখার অভিযোগে মহিষাদল, কুকুড়াহাটি থেকে আরও দুই সোনা দোকানদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিক্ষক দম্পতির বাড়ির চুরির ঘটনায় জড়িতদের ধরার জন্য তদন্ত করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy