চলছে যাত্রানুষ্ঠান। শনিবার রাতে সিংদা বিদ্যাসাগর গ্রামীণ মেলায়।
কোভিডের জেরে লকডাউনের নীরবতা কাটিয়ে ফের মেলার মঞ্চ মাতাচ্ছে যাত্রানুষ্ঠান। দীর্ঘ কয়েক মাস প্রায় ঘরবন্দি মানুষ বছরের শেষে শীতের আমেজে টিভির থেকে মন সরিয়ে সন্ধ্যা নামলেই ভিড় করছেন মেলা-অনুষ্ঠানে। সেখানে যাত্রার মঞ্চেও ভিড় করছেন আট থেকে আশি। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত কয়েক মাসের খরা কাটতে শুরু করায় খুশি মেলার আয়োজক থেকে যাত্রাশিল্পীরাও। তবে করোনার ভয় এখনও কাটেনি। এই অবস্থায় ঢালাও মেলা-অনুষ্ঠান-যাত্রায় মানুষের সমাগমে করোনা সতর্কতা বিধি কতটা মানা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন মেলা কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে কতটা সচেতন তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কোনও মেলা বা অনুষ্ঠানের সম্মতি দেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট পুলিশ-প্রশাসন কী এই দিকে নজর দিচ্ছেন? প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন নাগরিক থেকে চিকিৎসকদের একাংশ।
করোনা আতঙ্কে টানা লকডাউনে গোটা দেশ কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল। রাজ্যে নিষিদ্ধ হয় মেলা থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান। যাত্রা ও সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা নেমে আসে। আনলক পর্বে অবস্থার কিছুটা বদল ঘটে। গ্রাম ও মফ্ফসলে দু-একটি যাত্রার অনুষ্ঠান আয়োজন হতে শুরু করে। তবে টানা যাত্রানুষ্ঠানের আসর বসতে দেখা যায়নি। গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে পটাশপুরে সিংদা বিদ্যাসাগর গ্রামীণ মেলায় ছ’দিনের যাত্রানুষ্ঠানের আসর বসেছে। কলকাতার বেশ কয়েকটি নামী অপেরা-সহ একাধিক যাত্রা সংস্থা এখানে নাটক মঞ্চস্থ করতে আসছে। মেলা শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর। দীর্ঘ কয়েক মাস প্রায় ঘরবন্দি মানুষ বছরের শেষে শীতের আমেজে গৃহবন্দি দশা কাটিয়ে মেলামুখী হয়েছেন। সেই সঙ্গে সন্ধ্যা নামলেই ভিড় করছেন দেখতে। করোনার কারণে বেশি জমায়েত নিয়ে সতর্কতা থাকলেও এ ক্ষেত্রে সেই বিধি সছিক ভাবে মেনে চলা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আয়োজকরা। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্কের ব্যবহার। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা করা রয়েছে বলে মেলার আয়োজকরা জানিয়েছেন। লকডাউনের পরে যাত্রাশিল্পের প্রতি মানুষের এমন আগ্রহ আশা দেখাচ্ছে যাত্রাশিল্পীদেরও। মেলার এক দর্শক শুকদেব মাইতি বলেন, ‘‘অনেকদিন পরে যাত্রা দেখার সুযোগ পেলাম। বাড়িতে এতদিন টিভি দেখছিলাম। তবে যাত্রা দেখার অনুভূতিটাই আলাদা।’’ একটি যাত্রা সংস্থার ম্যানেজার জানান, আগের চেয়ে যাত্রায় দর্শক বেড়েছে। ধীরে ধীরে বায়নাও আসছে। তবে আর্থিক মন্দার জন্য আগের মতো দামে পালা বিক্রি হচ্ছে না।’’ মেলার আয়োজক মণ্ডলীর সভাপতি পীযূষ পন্ডা বলেন, ‘‘আগে মানুষ যাত্রা দেখতে আসতো না। এখন যাত্রা দেখার জন্য কনকনে শীত উপেক্ষা করেও মানুষ ভিড় করছে। যাত্রা আয়োজন করা সার্থক হয়েছে।’’
পটাশপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মেলার জন্য অনুমতি রয়েছে। তবে আয়োজকদের করোনা ও আইন শৃঙ্খলা সচেতনায় নিয়মিত নজরদারি রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy