নিকাশি খাল পরিষ্কারে নেমেছেন গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র
চাষ জমিতে জলসেচ ও নিকাশির ভরসা রূপনারায়ণ নদের সাথে যুক্ত খাল সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। সংস্কারের আবেদন জানিয়ে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কাছে দরবার করেছিলেন কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। সম্প্রতি আমপানের ঝড়-বৃষ্টিতে খালের উপর গাছপালা পড়ে নিকাশি বন্ধ হয়ে চাষজমিতে চার ফুট উঁচু হয়ে জল জমে গিয়েছে। ফলে আমন চাষ বন্ধ হওয়ার উপক্রম। উপায় না দেখে নিজেরাই খাল পরিষ্কারে নামলেন নন্দকুমারের পুয়্যাদা গ্রামের বাসিন্দারা।
বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে গ্রামের বাসিন্দারা খালে ভেঙে পড়া গাছ কেটে সরানো-সহ প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ পরিষ্কার করেছেন। ফলে চাষের জমিতে জমা অতিরিক্ত জল নেমে যাওয়ায় তা চাষের উপযোগী হয়ে উঠেছে বলে চাষিদের দাবি। নন্দকুমার ব্লকের ব্যবত্তাহাট এলাকার কালিকাখালি থেকে পুয়্যাদা বাজার হয়ে কামারদা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নিকাশি খাল যুক্ত রূপনারায়ণ নদের সঙ্গে। পুয়্যাদা, পুরুষোত্তমপুর, কুশিয়া, কালিদহি, নীলকুন্ঠ্যা, পদুমখানা, অঙ্কুরবাড়, বলরামপুর,কামারদা প্রভৃতি গ্রামের বর্ষার জলনিকাশি ও চাষের জল সেচ ওই খালের উপরেই নির্ভর। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেচ দফতরের অধীন ওই খাল দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হয়নি। পঞ্চায়েতের তরফে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কয়েক বছর আগে খালের কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে সংস্কার করা হয়েছিল। বেশিরভাগ অংশই মজে যাওয়ায় জল নিকাশির সমস্যা হচ্ছে। ফলে বর্ষাকালে চাষ জমিতে জল জমে আমন ধান চাষে সমস্যার পাশাপাশি শীতকালে বোরো ধান চাষেও সেচের জলের সমস্যা হচ্ছিল।
সম্প্রতি আমপানে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় পুয়্যাদা গ্রামের কয়েক’শো বিঘে চাষজমি জলমগ্ন হয়ে যায়। বেহাল খাল দিয়ে জল বের না হওয়ায় আসন্ন বর্ষায় আমনের বীজতলা তৈরিতে সমস্যায় পড়েন চাষিরা। এরপর তাঁরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে খাল পরিষ্কারে নামেন। স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যও তাঁদের সঙ্গে হাত লাগান। স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল মাইতি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন খাল সংস্কার হয়নি। ফলে এলাকায় জল নিকাশির সমস্যা হচ্ছে। খাল সংস্কারের জন্য আমরা পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের অফিসে স্মারকলিপিও দিয়েছি। কিন্তু আশ্বাস দেওয়া হলেও খাল সংস্কার করা হয়নি। আমপানের জেরে গ্রামের প্রায় ২০০ একর চাষ জমি জলমগ্ন। জল বেরোতে না পারায় আমন চাষ বন্ধ হওয়ার জোগাড়। তাই নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে খাল পরিষ্কারে নেমেছি।’’
গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মাজি বলেন, ‘‘খাল সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েতের অফিসে সভায় একাধিকবার প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই গ্রামবাসীদের এমন উদ্যোগে পাশে থেকেছি।’’ নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীননাথ দাস বলেন, ‘‘ওই নিকাশিখাল সংস্কারে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে সাময়িকভাবে জলনিকাশির জন্য গ্রামের বাসিন্দারা নিজেরা খাল পরিষ্কার করেছেন কিনা জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy