Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

রাজনীতির কাঁটায় ক্ষত ঐতিহ্যেও, রথযাত্রায় ভাঙল জলসত্র

বিরাট কোনও ঘটনা নয়, উৎসবের ছন্দে রথের মেলা শুরু আগেই তার তাল কেটে গেল মেলায় সামান্য জলসত্রকে ঘিরে। বিজেপির জেলা নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন, বুধবার রাতে মহিষাদলের রথতলায় ওই জলসত্র ভেঙে দেওয়া হয়।

ভেঙে দেওয়া হয়েছে জলসত্র। নিজস্ব চিত্র

ভেঙে দেওয়া হয়েছে জলসত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহিষাদল শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯ ০১:৩১
Share: Save:

রথের ঐতিহ্য প্রায় আড়াইশো বছরের। সঙ্গী মেলার বয়সও তাই। রণডঙ্কা, পালকি, বরকন্দাজ সবই সেই ঐতিহ্যের অঙ্গ। ঐতিহ্যের সেই জৌলুস রাজনীতির ছোঁয়া থেকে এতদিন রক্ষা পেলেও এ বার পারল না। রাজনৈতিক বিতর্ক-বিভেদের জালে জড়িয়ে গেল মহিষাদলের প্রাচীন রথের মেলা।

বিরাট কোনও ঘটনা নয়, উৎসবের ছন্দে রথের মেলা শুরু আগেই তার তাল কেটে গেল মেলায় সামান্য জলসত্রকে ঘিরে। বিজেপির জেলা নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন, বুধবার রাতে মহিষাদলের রথতলায় ওই জলসত্র ভেঙে দেওয়া হয়। এলাকার বাসিন্দা এবং বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস জানান, মহিষাদলের রথ দেখতে শুধু এই জেলা নয়, অন্য জেলা থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন। সেই সঙ্গে ভিড় হয় মেলাতেও। দলের দু’টি শাখা সংগঠনের তরফে রথের মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের জলকষ্ট মেটাতে যেখানে রথ দাঁড়ায় এবং সিনেমা হল মোড়ের কাছে দুটি জলসত্র করা হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বুধবার রাতে রথতলা মোড়ে একটি শিবির শাসক দলের লোকেরা ভেঙে দেয় বলে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকা থেকে জলসত্র সরিয়ে নিতে প্রশাসনের তরফেও চাপ দেওয়া হয়।’’

মেলার উদ্বোধনে উপস্থিত থাকার কথা ছিল পরিবহণ ও সেচ দফতরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। তার আগেই বিজেপির শাখা সংগঠনের জলসত্র ভেঙে দেওয়ায় রাজনৈতিক ভেদাভেদ-এর অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি (তমলুক) নবারুণ নায়কের অভিযোগ, ‘‘শাখা সংগঠনের কর্মীরা সামাজিক দায়িত্ব পালনের অঙ্গ হিসেবে জলসত্র করেছিলেন। কিন্তু শাসক দল আর তার তল্পিবাহক পুলিশ সবকিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে।’’ যদিও প্রশাসনের দাবি, জলসত্র করার জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপির পক্ষ থেকে কোনও শিবির করার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ ওই শিবির ভেঙে দেয়নি। কারা ওই কাজ করেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’’

প্রশাসনের এমন দাবির পর পাল্টা দাবি তুলেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি। তাঁর প্রশ্ন, মহিষাদল রথের মেলায় বিজেপি জল দান শিবির-এর কোনও অনুমতি নেয়নি এটা ঠিক। তবে বাকি যে সব জলের কল বসানো হয়েছে তার জন্য কি কোনও অনুমতি নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের কাছে?

তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার প্রাচীন এই রথের মেলার গায়ে রাজনীতির বিভেদের রং লাগার অভিযোগ মানতে চাননি মেলার উদ্যোক্তা পঞ্চায়েত সমিতি। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘মহিষাদল রথের মেলায় কোনও ভেদাভেদ নেই। সব রাজনীতির মানুষকে নিয়েই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। শুধুমাত্র প্রচারে আসার জন্য কোনও কোনও রাজনৈতিক দল অপপ্রচার করছে। তা সত্ত্বেও কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

তবে এত সবে কোনও বিঘ্ন হয়নি রথাযাত্রায়। এ দিন হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ভিড়েই মাসীর বাড়িতে রওনা হন মদনগোপাল জিউ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy