— প্রতীকী চিত্র।
শুধু ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ (আরএল) স্যালাইন নয়, মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি-মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তে আতশকাচের নীচে চিকিৎসায় ব্যবহৃত আরও একাধিক ওষুধপত্রও। ওই প্রসূতির চিকিৎসায় যে সব ওষুধপত্র ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলির নমুনা ও ব্যাচ নম্বর সংগ্রহ করেছে তদন্তে আসা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দলটি।
মামনি রুইদাস নামে যে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে, তাঁর সিজ়ার হয়েছিল ৮ জানুয়ারি, বুধবার রাতে। কিন্তু কেন মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধও আতশকাচের নীচে এল? মেডিক্যালের এক আধিকারিক জানান, ২ জানুয়ারি তমলুকের ডিআরএস (ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ স্টোর) থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাচ নম্বরের প্রায় সাড়ে বারোশো আরএল আনা হয়েছিল। ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আটশো ব্যবহার হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচ জন অসুস্থ হয়েছেন। ওই আধিকারিকের কথায়, “যদি আরএলের ব্যাচটাই খারাপ হয়ে থাকে, তা হলে আরও অনেকে অসুস্থ হতেন।” এখান থেকেই সন্দেহ, তা হলে ব্যবহৃত আরও এক বা একাধিক ওষুধ কি নিম্নমানের ছিল?
মেডিক্যাল সূত্রের খবর, প্রসূতির চিকিৎসায় পাঁচ-ছ’টি ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, “সব রিপোর্ট এলে হয়তো দেখা যাবে আরএল, সঙ্গে আর কোনও একটি ওষুধ— দু’য়েরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রসূতির অবস্থা সঙ্কটজনক হয়েছিল।” প্রসূতির জরায়ু-মুখ খোলার জন্য ইঞ্জেকশন, অ্যান্টিবায়োটিক, স্যালাইন দেওয়া হয়। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “এর মধ্যে ঠিক কোন ওষুধের জন্য সমস্যা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।” ঘটনার তদন্তে শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে আসে স্বাস্থ্য দফতরের ১৩ জনের দল। দলটি মেডিক্যালের ওটি-র (অপারেশন থিয়েটার) বাইরে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সিজ়ারের দিন কখন কে ওটিতে ঢুকেছেন, ফুটেজ থেকে তা জানা যাবে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত বুধবার প্রসূতি বিভাগের ‘ওয়ান-সি’ ইউনিট দায়িত্বে ছিল।
রবিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের ছাত্র, যুব, মহিলা সংগঠন। তারা হাসপাতালের সুপারের অফিসের গেটে তালা দিয়েছে। পরে সুপারের গ্রেফতারির দাবিতে থানায় গিয়েছে। নেতৃত্বে ছিলেন ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সুপারের মদতে এখানে ভেজাল স্যালাইন ঢুকেছে। প্রসূতির মৃত্যুর জন্য দায়ী সুপার। অবিলম্বে সুপারকে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।” এ দিন দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন প্রসূতিদের সঙ্গে দেখা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ জুন মালিয়া। পরে তিনি বলেন, “মায়েদের সঙ্গে দেখা করে এসেছি। সকলে ঠিকঠাকই রয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের দল এসেছিল। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পরে কঠোর পদক্ষেপ হবে।”
যে সংস্থার স্যালাইন ব্যবহার করার পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি-মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছিল, সেই সংস্থারই স্যালাইন এ দিন ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে। তবে আরএল স্যালাইন নয়। তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে ব্যবহৃত স্যালাইনের নাম ডি-৫। হাসপাতাল সুপার বাপ্পাদিত্য ঢালি দাবি করেন, “আমি হাসপাতালে এই বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে বিভাগের দায়িত্বে থাকা সবাই তা বন্ধও করেছেন। তবু খতিয়ে দেখব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy