ঘাটাল শহরের মূল সড়কের দুই ধারে নয়ানজুলির উপরে এ ভাবেই তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী কাঠামো। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।
ফাঁকা জমিতে গজিয়ে উঠছে একের পর এক বেআইনি নির্মাণ। ফুটপাতও দখল হয়ে যাচ্ছে। নর্দমার উপর তৈরি হচ্ছে বেআইনি কাঠামো। অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে শহরের একমাত্র নিকাশি নালা।
ছবিটা বানভাসি ঘাটাল শহরের। যেখানে প্রতি বর্ষায় মানুষ জল-আতঙ্কে থাকেন, সেখানে নতুন সম্প্রসারিত রাস্তায় এই জবরদখলে শহরবাসী ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি নর্দমা তো সেই অবরুদ্ধ।নালা দিয়ে বর্ষার জল নিকাশি হবে তো? না জনগণের টাকা জলেই যাবে?
এই ক্ষোভের আঁচ এ বার পড়েছে লোকসভা ভোটেও। আর তারপরই অবস্থা বুঝে ভোটের ফল প্রকাশের পরে পূর্ত দফতরের তরফে মাইকে হেঁকে রাস্তা ফাঁকা করার কথা ঘোষণা করা হচ্ছে। ঘাটালের পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার গোকুলদাস মালাকার মানছেন, “ ঘাটাল শহরে সরকারি জমি থেকে বেআইনি নির্মাণ সরিয়ে নিতে মাইকে প্রচার করা হয়েছে।”
১৪০ কোটি টাকা খরচ করে সম্প্রসারিত হয়েছে ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়ক।তৈরি হয়েছে ফুটপাত। ঘাটাল শহরে রাস্তার ধারে পূর্ত দফতরের উদ্যোগে হয়েছে পাকা ড্রেনও। মাস দুই আগে সেই রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে।এখনও রাস্তায় আলো বসানো বাকি। তার মধ্যেই সদ্য তৈরি ফুটপাত চলে যাচ্ছে দখলদারদের হাতে। কুশপাতা, কলেজ মোড়, হাসপাতাল মোড়-সহ পুরো শহর জুড়েই ফুটপাত ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। মাথা তুলছে অস্থায়ী দোকান। তার জেরে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে হাঁটতেও পারছেন না।বাইক চালাতে সমস্যা হচ্ছে। গাড়িও আটকে যাচ্ছে।
ঘাটালের বাসিন্দাদের আক্ষেপ, সম্প্রসারণের আগেও সরু রাস্তায় ফুটপাতে জবরদখলই ছিল। সম্প্রসারণের পরেও যে কে সেই। নিকাশি নিয়েও শহরের ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের। ঘাটালে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জলমে জমে।ভারী বৃষ্টি হলে রাস্তা উপচে বাড়িতে জল ঢোকে। ঘাটাল হাসপাতাল পর্যন্ত জলমগ্ন হয়ে পড়ে। দু’দিন আগেও সেই ছবি দেখা গিয়েছে। কুশপাতা, কোন্নগর, গোবিন্দপুরের রাস্তায় জল জমেছে।
এই অবস্থায় বর্ষার মুখে নতুন তৈরি ড্রেনও দখলদারদের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে ঘাটাল। এমনিতেই পূর্ত দফতরের ওই ড্রেন তৈরির সময় ঘাটাল পুরসভা কোনও ভাবে সমন্বয় করেনি বলে অভিযোগ।ফলে, অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হয়েছিল ড্রেন। পর্যাপ্ত জমি থাকলেও জল বহনের ক্ষমতা বিচার না করে ড্রেন তৈরি হয়।। এখন আবার সেই ড্রেন পাটাতন দিয়ে ঢেকে তৈরি হচ্ছে দোকান। ফলে ড্রেন সংস্কার আটকে থাকছে।
এমনিতেই ঘাটাল পুরসভা নিকাশি নিয়ে সুষ্ঠু কোনও পরিকল্পনা নেয়নি বলে অভিযোগ। শাখা ড্রেনগুলিরও সংস্কার শিকেয় উঠেছে। মূল নিকাশি নালা যথাযথ ভাবে সংস্কার করা হয়নি। ফলে, এখন বর্ষা নামার মুখে অবরুদ্ধ নতুন ড্রেন দিয়ে জল নিকাশি হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান তুহিনকান্তি বেরার অবশ্য আশ্বাস, “ঘাটাল শহরে জল নিকাশির জন্য পুরসভা তৎপর। জল জমলে পাম্প চালিয়ে বের করে দেওয়া হবে।” আর শহরে নতুন ড্রেনের উপর অস্থায়ী নির্মাণ নিয়ে তুহিনের বক্তব্য, “সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করা হবে।” (শেষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy