Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
Anti Corruption Unit

পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে দুর্নীতি দমন দল

এ দিন দুপুর প্রায় দেড়টা নাগাদ এগরা পুর-শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে চন্দন দাস নামে ওই আধিকারিকের বাড়িতে আসে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার চার সদস্যের দল। চন্দন অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না।

এগরা শহরে চন্দনের বাড়ি।

এগরা শহরে চন্দনের বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:১৪
Share: Save:

জেলা সফরে আসা মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার মঙ্গলবারই দিঘার মাটি ছুঁয়েছে। সেখান থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে এগরায় এ দিনই একটি পুরসভার পূর্ত দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে তল্লাশি চালাল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। দুপুর থেকে রাত, টানা ছ’ঘণ্টা তল্লাশি চলেছে।

এ দিন দুপুর প্রায় দেড়টা নাগাদ এগরা পুর-শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে চন্দন দাস নামে ওই আধিকারিকের বাড়িতে আসে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার চার সদস্যের দল। চন্দন অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর দাদা ও ভাইয়েরা ছিলেন। তাঁদের থেকে চন্দনের ঘরের চাবি নিয়ে তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে তল্লাশি। ওই সময়ে ‘গৃহবন্দি’ ছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। কাউকে বাড়িতে ঢুকতেও দেওয়া হয়নি।

স্থানীয়দের একাংশ জানাচ্ছে, চন্দনের কলকাতায় বাগুইআটিতে ফ্ল্যাট রয়েছে। কলকাতায় শশুরবাড়ির সুবাদে বছরের বেশিরভাগ সময় তিনি সেখানে থাকেন। তাঁর স্ত্রী পেশায় ‘বিউটিশিয়ান’। বাগুইআটিতে বিউটি পার্লারও রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, চন্দনকে এ দিন সকালে এগরা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে হট্টনাগর মন্দিরের কাছে তাঁদের পুরনো বাড়িতে দেখা গিয়েছিল।

এগরা পুরসভার জন্মলগ্ন ১৯৯৩ সাল থেকে অস্থায়ী ভাবে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন চন্দন। ১৯৯৪ সালে পূর্ত দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে স্থায়ী পদে নিযুক্ত হন। চন্দনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ২০০১ সাল থেকে টাকার বিনিময়ে বেআইনি ভাবে বাড়ি তৈরির অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০১১ সাল থেকে এগরা পুরসভায় বকলমে তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন বলেও দাবি। ২০১৫ সাল থেকে তৃণমূল পরিচালিত এই পুরসভায় তাঁর দাপট বাড়ে।

অভিযোগ, পুরসভায় রাস্তা তৈরি থেকে জল নিকাশি বা উদ্যান তৈরি, সব বিষয়ে চন্দন প্রভাব খাটাতেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের ঠিকাদারদের কাজের বরাত পাইয়ে দিতেন। বদলে মিলত কাটমানি। ২০১২ সালে কয়েকজন ঠিকাদার নবান্ন-সহ ভিজিল্যান্স দফতরে চন্দনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে নবান্ন থেকে রাজ্য পুলিশকে দুর্নীতি দমন শাখাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। ২০১৮ সালে একবার দুর্নীতি দমন শাখা চন্দনকে নিয়ে পুরসভাকে নোটিসও দিয়েছিল।

২০২১ সালে চন্দনকে উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ি পুরসভায় বদলি করা হয়। জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গ থেকে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি পুরসভায় ‘পানিশমেন্ট পোস্টিং’য়ে ছিলেন চন্দন। সাত দিন আগে ছুটি নিয়ে তিনি বাড়িতে যান। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর অনেক ছুটি বকেয়া রয়েছে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে তিনি অবসর নেবেন। আপাতত লম্বা ছুটিতে রয়েছেন। তবে ধূপগুড়িতে চন্দনের ভাবমূর্তি যথেষ্ট ভাল। সহকর্মী থেকে শুরু করে ঠিকাদার— কারও, কোনও অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে নেই।

এ দিন চন্দনের বাড়িতে অভিযান নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি জেলা পুলিশ। চন্দনও ফোন ধরেননি। তবে যে পুরসভায় চন্দন এতদিন কাজ করেছেন এবং একাধিক অভিযোগ উঠেছে, সেই এগরা পুরসভার প্রধান স্বপন নায়ক বলেন, ‘‘শুনেছি প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার চন্দন দাসের বাড়িতে দুর্নীতি দমন শাখা তল্লাশি চালিয়েছে। তবে এর বেশি কিছু জানি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Anti Corruption Unit West Bengal Police Egra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy