বে-নজর: জেলায় ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত। পরিচ্ছন্নতায় জোর দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। অথচ মেদিনীপুর শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের শরৎপল্লিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্য কার্যালয়ের পাশেই জমে আবর্জনা। তথ্য ও ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
মশা দমনে ফের বিডিওদের সক্রিয় হতে নির্দেশ দিল প্রশাসন। জানানো হল, ব্লকে ব্লকে বেশি করে সচেতনতা প্রচার করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দিতে হবে পোস্টার-হোর্ডিং-ব্যানার-ফেস্টুন।
ডেঙ্গি মোকাবিলায় শনিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক হয়। কালেক্টরেটের সভাকক্ষে এই বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা প্রমুখ। ছিলেন বিভিন্ন ব্লকের বিডিও সহ একাধিক আধিকারিক। এই বৈঠকেই বিডিওদের আরও উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। পরে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। নতুন করে কয়েকজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, “এ বার ব্লকে ব্লকে আরও বেশি সচেতনতামূলক প্রচার হবে।’’
আগে সাধারণত ব্লকের ক্ষেত্রে বিএমওএইচরা মশাবাহিত রোগ দমনের কাজ দেখভাল করতেন। চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে অবশ্য বিডিওরাও এই রোগ দমনে প্রচার- প্রসারের কাজ দেখভাল করছেন। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নির্দেশ মেনে জেলায় এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা শুরু হয়। ওই সময়ই মশাবাহিত রোগ দমনের কাজ দেখভালের জন্য জেলাস্তরে একটি কমিটি গঠন করা হয়। জেলা থেকে ব্লকে ব্লকে এক নির্দেশিকাও পাঠানো হয়। প্রশাসন মনে করছে, মশাবাহিত রোগগুলোর বিরুদ্ধে গ্রামাঞ্চলে এই প্রচার- প্রসার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “রাজ্যের নির্দেশ মতো ব্লকে ব্লকে মশাবাহিত রোগ নিয়ে প্রচার- প্রসারের কাজ শুরু হয়েছে। আগেও জেলাস্তরে এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। ফের বৈঠক হল। ব্লকগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” প্রশাসন চাইছে, এই প্রচার-প্রসারের কাজে স্বসহায়ক দলের মহিলারা যুক্ত হন। জেলায় বহু স্বসহায়ক দল রয়েছে। এই সব দলের মহিলারা প্রচার- প্রসারের কাজে যুক্ত হলে গ্রামাঞ্চলে তার ভাল প্রভাব পড়বে। আগে আশাকর্মীরাই মূলত এই কাজ করতেন।
গত বছর মশাবাহিত রোগ চরম আকার নিয়েছিল। গ্রাম-শহরে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলাতেও বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বারও পরিস্থিতি প্রায় এক। ইতিমধ্যে জেলায় ৪০৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। বেসরকারি সূত্রের অবশ্য দাবি, আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি। রোগ মোকাবিলায় সচেতনতা প্রচার শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রচারের কাজে যুক্ত হয়েছে প্রশাসনও। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “গ্রামাঞ্চলে যত প্রচার হবে ততই ভাল। মানুষ সচেতন হলেই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।’’ তাঁর কথায়, “আমরা বিভিন্ন ব্লকে সচেতনতামূলক প্রচার শুরু করেছি। আরও প্রচার হবে।’’ এ দিনের বৈঠকে ছিলেন জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “যে করেই হোক ডেঙ্গি রুখতে হবে। তাই সচেতনতা প্রচারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মশাবাহিত রোগ এড়াতে কী করা উচিত, আর কি করা উচিত নয় তা মানুষকে জানানো হচ্ছে।’’ প্রশাসনের নির্দেশ, স্বসহায়ক দলের মহিলারা বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনে যাবেন। কতগুলো বাড়িতে পরিদর্শন হয়েছে, সেখানকার পরিস্থিতিই বা কী, সব জেলায় জানাতে হবে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রচারের জন্য স্বসহায়ক দলের মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শিবিরে রোগ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে।’’ সচেতনতামূলক পোস্টার, হোর্ডিং, ব্যানার আরও বেশি করে গ্রামে গ্রামে ছড়ানো হবে। তদারক করবেন বিডিও। প্রতিটি স্বনির্ভর দলের আলোচনায় মশাবাহিত রোগ এবং তার প্রতিকারের কথা আলোচনার কথা জানানো হয়েছে। গ্রামে স্বাস্থ্যবিধান সংক্রান্ত যে পাড়া নজরদারি কমিটি রয়েছে তার সদস্যদেরও প্রচারে যুক্ত করার কথা জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy