প্রতিবাদে ঘাটাল কলোজের বর্তমান এবং প্রাক্তন পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) জারি করা নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক বাড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। স্কুলের বাইরে পড়ুয়ারা স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্মসূচি ছাড়া অন্য কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে না— এই মর্মেই ওই নির্দেশিকা। বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদেরই। নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবিতে সুর চড়িয়েছে কিছু শিক্ষক সংগঠন। পরশু, মঙ্গলবারের মধ্যে নির্দেশিকা প্রত্যাহার না হলে জেলার শিক্ষা ভবন ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে এবিটিএ।
সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক জগন্নাথ খান বলেন, ‘‘আমরা ডিআই-এর সঙ্গে দেখা করে আমাদের দাবি জানিয়েছি। মঙ্গলবারের মধ্যে এই কালা নির্দেশিকা প্রত্যাহার না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। শিক্ষা ভবন ঘেরাও করব।’’ শুক্রবার এবিটিএ-র প্রতিনিধি দল জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করে। সংগঠনের ডাকে শিক্ষা ভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে ‘ডিআই তোমার কিসের ভয়, খুনি তোমার কে হয়?’, ‘ডিআই তোমার কিসের ভয়, ধর্ষক তোমার কে হয়?’—এমন স্লোগানও তুলেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। জগন্নাথের মতে, ‘‘এই কালা নির্দেশিকা অনৈতিক, বেআইনি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন সর্বস্তরের মানুষ। ছাত্রসমাজও বাইরে থাকতে পারে না।’’
ওই নির্দেশিকাকে গুরুত্ব না দিয়ে শুক্রবারও পথে নেমেছে একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারা। প্রতিবাদ মিছিল করেছে তারা। শনিবার মেদিনীপুরে মিছিল হয়েছে শিক্ষক সমাজের ব্যানারে। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীলকান্ত ঘোষের কথায়, ‘‘এই রকম নির্দেশ স্কুল পরিদর্শক দিতে পারেন কি? অন্ধ আনুগত্যের মধ্যে দিয়ে উনি এই ধরনের পদের অমর্যাদা করলেন না কি?’’ নির্দেশিকা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকসমাজ, ছাত্রসমাজ, অভিভাবককুলকে এই কালা নির্দেশিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সমিতি। শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো নিজেই বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমেছেন। তিনি নামতে পারেন, ছাত্রছাত্রীরা নামতে পারে না? অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’’
কেন এমন নির্দেশিকা, সে নিয়ে কিছু বলতে চাননি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) স্বপন সামন্ত। তবে নির্দেশিকা যুক্তিযুক্ত বলেই দাবি তৃণমূলের। জেলা পরিষদের সহ- সভাধিপতি তথা পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতির কথায়, ‘‘স্কুলের সময়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে মিছিল কোনওভাবে মানা যায় না। এটা বন্ধ করতেই হবে।’’
এই নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর স্কুলগুলিকে মনে করিয়েছে ২০০৯ সালের ‘রাইট অফ চিলড্রেন টু ফ্রি অ্যান্ড কমপালসারি এডুকেশন’ আইনের কথা। মনে করানো হয়েছে, ওই আইনানুযায়ী স্কুল চলাকালীন স্কুল ক্যাম্পাসে বা ক্যাম্পাসের বাইরে পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তবে একাধিক শিক্ষক সংগঠনের দাবি, এ ভাবে ছাত্র আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। বরং ক্রমে আন্দোলনের ঢেউ আরও ছড়াবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy