Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পলাতক তৃণমূল নেতা, দোকানে উদ্ধার চিটেগুড়, চোলাই তৈরির উপকরণ

আবগারি দফতর সূত্রে খবর, ৪৬০টিন (১১ হাজার ৫০০ কিলোগ্রাম ) চিটে গুড় এবং পাঁচ পেটি  অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (প্রায় ১২৮ কিলোগ্রাম) বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

দোকানে চলছে তল্লাশি। ইনসেটে অভিযুক্ত গৌতম সাহু। নিজস্ব চিত্র

দোকানে চলছে তল্লাশি। ইনসেটে অভিযুক্ত গৌতম সাহু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৭
Share: Save:

নিয়মের বাইরে প্রচুর পরিমাণে চিটেগুড় মজুতের পাশাপাশি চোলাই তৈরির উপকরণ উদ্ধার হল তৃণমূল নেতার দোকান থেকে।

নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ওই তৃণমূল নেতা গৌতম সাহুর দোকানে মঙ্গলবার হানা দেন আবগারি দফতর। নিয়ম বহির্ভূতভাবে মজুত বিপুল পরিমাণ চিটেগুড় এবং চোলাই তৈরির জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক (অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড) বাজেয়াপ্ত করেন তারা। জেলা আবগারি দফতরের চণ্ডীপুর রেঞ্জের আধিকারিকের নেতৃত্বে এ দিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নন্দকুমার বাজারে ওই তৃণমূল নেতার দোকানে তল্লাশি চলে।

আবগারি দফতর সূত্রে খবর, ৪৬০টিন (১১ হাজার ৫০০ কিলোগ্রাম ) চিটে গুড় এবং পাঁচ পেটি অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (প্রায় ১২৮ কিলোগ্রাম) বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তল্লাশির সময় আবগারি দফতরের কর্মীদের হাতে আটক থাকা ওই তৃণমূল নেতা বাড়িতে শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে পালিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এ দিকে তৃণমূল নেতার দোকান থেকে বেআইনিভাবে মজুত চিটে গুড় ও চোলাই তৈরির রাসায়নিক উদ্ধারে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

জেলা আবগারি দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নন্দকুমার বাজার সংলগ্ন কুমরআড়া গ্রামের বাসিন্দা গৌতম সাহু নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য দফতরের কর্মাধ্যক্ষ। নন্দকুমার বাজারে তাঁর গুড়ের দোকান রয়েছে। কিন্তু সেখানে বেশ কিছু দিন ধরেই বিপুল পরিমাণ চিটেগুড় মজুত করে ব্যবসা চালানো হচ্ছিল বলে খবর পায় আবগারি দফতর। ওই চিটগুড় চোলাই তৈরির ব্যবসায় জড়িতদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। আবগারি দফতরের আধিকারিক ও কর্মীদের একটি দল সাদা পোশাকে কয়েকদিন ধরে ওই দোকানের উপর নজরদারি চালানোর পর এবিষয়ে নিশ্চিত হন। তারপরেই এ দিন ওই দোকানে হানা দেন তাঁরা। দফতরের চণ্ডীপুর রেঞ্জের ডেপুটি এক্সাইজ কালেক্টর সৈয়দ মালেকুজাম্মানের নেতৃত্বে সকাল ১১টা নাগাদ আবগারি দফতরের দলটি দোকানে পৌঁছয়। দোকানে তখন ছিলেন গৌতম। তল্লাশির সময় নিয়মবহির্ভূতভাবে মজুত চিটেগুড় ছাড়াও অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডের একাধিক বাক্সের হদিস মেলে। যা চোলাই তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হত বলে অভিযোগ। তল্লাশির মাঝেই অভিযুক্ত গৌতম ভাত খাওয়ার জন্য আবগারি দফতরের কর্মীদের পাহারায় বাড়িতে যান। সেখানে শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে তিনি পালিয়ে যান বলে দাবি করেন আবগারি দফতরের আধিকারিক।

সৈয়দ মালেকুজ্জামান বলেন, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরেই সন্দেহ করা হচ্ছিল। তারপর জোরালো তথ্য সংগ্রহ করার পর এদিন তল্লাশি চালানো হয়। নিয়ম বহির্ভূতভাবে রাখা চিটেগুড় মজুত ও অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তও স্বীকার করেছে ওই সব সামগ্রী চোলাই ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করত। তবে অভিযুক্ত পলাতক। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ অভিযুক্তের মোবাইলে বার বার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েকের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল নেতারা যে চোলাই তৈরির চক্রে যুক্ত ও এই সব বেআইনি ব্যবসা করেন তা আবগারি দফতরের অভিযানে ধরা পড়েছে।’’ যদিও নন্দকুমারের বিধায়ক তথা তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুকুমার দে’র দাবি, ‘‘গৌতমের গুড়ের পৈতৃক ব্যবসা রয়েছে। আবগারি দফতর অভিযান চালিয়ে দোকান থেকে কী পেয়েছে জানি না। তবে এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Tamluk Wine Shop Excise Department Raid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy