দিঘায় জগন্নাথমন্দির উদ্বোধনের দিন ‘পাল্টা’ সনাতনী সমাবেশের কথা ঘোষণা করেছিলেন আগেই। এ বার রাজ্যের বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকারের তরফে আমন্ত্রণ করা হলেও ওই মন্দির উদ্বোধনে যাবেন না তিনি। শুভেন্দুর স্পষ্ট কথা, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও রকম সৌজন্য দেখানোর প্রশ্নই ওঠে না। কখনওই যাব না। ওটা মন্দির না কি!’’ এ প্রসঙ্গে রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির মন্তব্য, ‘‘গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দিকে। বিরোধী দলনেতা শুধু রাজনীতি করে বেড়াচ্ছেন।’’
রবিবার বিজেপির সক্রিয় সদস্য সম্মেলন উপলক্ষে কাঁথিতে রবিবার একটি সভা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ায় সনাতনী সমাবেশ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন মঠ ও মিশন থেকে পাঁচশো সাধু-সন্ত থাকবেন। কোনও রাজনৈতিক পতাকা নয়। গেরুয়া, ত্রিশূল আঁকা হলুদ পতাকা নিয়ে সকাল থেকে সবাই আসবেন কাঁথিতে। সাধুরা রান্না করবেন। দুপুরে প্রসাদ গ্রহণ করে সবাই বাড়ি ফিরবেন। এক লক্ষ হিন্দুর জমায়েত করব।’’ কাঁথির সনাতনী সমাবেষে পুরী থেকে দয়িতাপতি, বাবা রামদেব, যোগী আদিত্যনাথ-সহ অনেকেই আসবেন বলে দাবি করা হয়েছে। এ দিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘অনেককেই বলা হয়েছে। পুলিশ আয়োজকদের লম্বা কাগজে লিখে জানিয়ে দিয়েছে, ওই দিন কর্মসূচি করা যাবে না। আমাদের সংবিধানে নিজের ধর্ম পালনের অধিকার দেওয়া আছে। তাই আমি অক্ষয় তৃতীয়া পালন করবই।’’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, ‘‘জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র তৈরি করতে যত খরচ হয়েছে, উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঠিক তত টাকাই খরচ করা হচ্ছে। এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠানের জন্য যাঁকে দরপত্র দেওয়া হয়েছে, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। এমনকি ১৯ তারিখ দরপত্র খোলার আগেই উদ্বোধনের যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলে কী করবেন? শুভেন্দুর স্পষ্ট জবাব, ‘‘আমার বৃদ্ধ বাবা-মাকে সিআইডি দিয়ে উত্যক্ত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য দেখানোর প্রশ্নই ওঠে না।’’ উদ্বোধনের পরেও কোনও দিন জগন্নাথ মন্দির দর্শনে যাবেন না দাবি করে শুভেন্দুর আহ্বান, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভেজাল হিন্দু। ওঁকে বয়কট করুন।’’ শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘জগন্নাথ মন্দির তৈরির সিদ্ধান্তের সময় শুভেন্দু তৃণমূলের মন্ত্রী ছিলেন। স্বাগতও জানিয়েছিলেন। ক্ষমতা থাকলে উনি উদ্বোধনের পরে ওই মন্দিরের সামনে দিয়ে একবার যান আর জগন্নাথদেবকে প্রণাম না করে দেখান।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)