পরিদর্শনে শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
এসেছিলেন ভাঙচুর হওয়া পঞ্চায়েত অফিসে পরিদর্শনে। সেখানে পুরনো সুরেই পুলিশকে ফের ‘হুঁশিয়ারি’ দিতে শোনা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। বিজেপি পরিচালিত তমলুকের উত্তর সোনামুই পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুরের ঘটনার অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারে জন্য পুলিশকে তিন দিনের সময়সীমা দিলেন তিনি।
একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার বকেয়া টাকার দাবিতে গত মঙ্গলবার বিকেলে উত্তর সোনামুই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে তৃণমূল বিক্ষোভ সভা করেছিল। ওই সভায় ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক, জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা, পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা জাকির হোসেন-সহ এলাকার বহু তৃণমূল নেতা-কর্মী। বিজেপির অভিযোগ, বিক্ষোভ সভা চলাকালীন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে উপ-প্রধান এবং পঞ্চায়েত সদস্যদের দফতরের চেয়ার ভাঙচুর, নথিপত্র তছনছ করে। তারা পঞ্চায়েত অফিসের কর্মীদের হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় সোমনাথ বেরা, জাকির হোসেন-সহ ১৫ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা বিজেপি নেতা পূর্ণেন্দু পাল।
ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার পঞ্চায়েত অফিসের সামনে সভা করে বিজেপি। সেখানে আসেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু। দুপুরে ওই সভায় যোগ দেওয়ার আগে তিনি পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা পরিদর্শন করেন। পরে সভা থেকে পুলিশকে সরাসরি ‘হুমকি’ ছুড়ে দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘তমলুক থানাকে বলছি, তিন দিনের মধ্যে সোমনাথ, জাকিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা যদি না নেন, তা হলে থানার সামনে বিক্ষোভ হবে। এই গুণ্ডাদের কীভাবে জব্দ করতে হয়, সোজা করতে হয় আমি জানি।’’
ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা দায়ের করা নিয়েও শুভেন্দু সরব হন। পুলিশের ভূমিকা সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে চেয়ার, টেবিল, যা ভেঙেছে সমস্ত ছবি, ভিডিয়ো আমি তুলে নিয়ে যাচ্ছি। পুলিশের খুব কষ্ট। এফআইআর একটা করেছে। তবে সব জামিন যোগ্য ধারা দিয়ে। কাজের দিন সরকারি অফিস চলাকালীন ভাঙচুর করলে কী ধারা দিতে মমতা-পুলিশ না জানলেও সিআরপিসি, আইপিসি-তে সে বিষয়ে লেখা রয়েছে। প্রয়োজন হলে ধারা যোগ করার জন্য আদালতে আবেদন করার জন্য পঞ্চায়েত প্রধানকে বলব।’’ শুভেন্দুর দাবি, পুলিশ তিন দিন দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তমলুক থানায় কয়েক হাজার লোক ঝাণ্ডার সঙ্গে ডাণ্ডা লাগিয়ে যাবে।শুভেন্দুর ওই হুঁশিয়ারি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এবিষয়ে আমি স্থানীয় পুলিশের কাছে খোঁজ নিচ্ছি।’’ উল্লেখ্য, এর আগেও প্রাক্তন পুলিশসুপার-সহ জেলার একাধিক থানার পুলিশকে নানা বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছে শুভেন্দুকে।
প্রাক্তন জেলাপরিষদ কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরার নামে চাকরির প্রতিশ্রুতিতে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সোমনাথের নাম করেই এ দিন শুভেন্দু তাঁকে ‘ডাকাত’ বলেন। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘আপনারা ভোট দিয়ে চোরদের তাড়িয়েছেন পঞ্চায়েত ভোটে। সোমনাথ একটা ডাকাত। অন্তত ২০ কোটি টাকা চাকরি দেওয়ার নাম করে তুলেছে। ভারত সরকারের ব্যাঙ্কের কোটি কোটি টাকা অনাদায়ী, এনপিএ হয়েছে। আমি ওঁর সম্পর্কে সব জানি।’’ যদিও তাঁর বিরুদ্ধে তোলা শুভেন্দুর অভিযোগ প্রসঙ্গে সোমনাথ বলছেন, ‘‘সারদা, নারদা মামলায় নাম জড়িয়ে রয়েছে। আগে তাঁর শুদ্ধিকরণ করা দরকার। যাঁরা ইডি, সিবিআইয়ের ভয়ে বিজেপিতে যান, তাঁদের মুখে নীতি কথা মানায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy